রেশনে দেওয়া চালের মান নিয়ে হাজারো প্রশ্ন আর অভিযোগ উঠছে জেলায় জেলায়। তাই গুদামে মজুত থাকা আগেকার চাল আর রেশনে দেওয়া হবে না। তার বদলে এ বছর জেলায় জেলায় যে-চাল কেনা হচ্ছে, গ্রাহকদের তা সরবরাহ করা হবে।
সম্প্রতি নদিয়ায় রেশনের চালের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সে-কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও পৌঁছয়। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রেশনে সরবরাহ করা চাল ও গমের মান দেখতে অভিযান শুরু হয় খাদ্য দফতরের। সেই অভিযান এখনও চলছে। ইতিমধ্যেই ৫০ জনেরও বেশি রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরকে শো-কজ ও সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশনে নিম্ন মানের চাল দিলে তার পরিণাম কী হতে পারে, ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরদের সেই বার্তা দিতে বুধবার মহাজাতি সদনে একটি সভা করেন খাদ্যমন্ত্রী। সেখানে জানিয়ে দেন, শুধু শো-কজ বা সাসপেন্ড নয়, কেউ নিম্ন মানের চাল রেশনে দিলে জরিমানাও করা হতে পারে। তাতে দোষীদের শাস্তির সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের ভাঁড়ারও ভরবে।
খাদ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, খাদ্য দফতরের কাছে এখনও প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টন চাল মজুত রয়েছে। কিন্তু তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকায় ওই চাল আর গ্রাহকদের দেওয়া হবে না। ওই চাল পরীক্ষা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা রাজ্যের গুদামে মজুত চাল দেখতে আসতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে। এমন কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের না-জানিয়ে ওঁরা রাজ্যের গুদামে ঢুকতে পারবেন না। ওঁদের মাতব্বরি আমরা মানব না। খাদ্যসাথী প্রকল্পে এখনও এক হাজার কোটি টাকারও বেশি পাওনা রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। ওঁরা আমাদের টাকা কেটে অন্য রাজ্যকে দিচ্ছেন।’’
কিন্তু কেন্দ্র যদি আপনাদের জানিয়ে গুদাম পরীক্ষা করতে চায়? জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘সে-ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দেবেন, তা-ই করব।’’ তাঁর দাবি, রাজ্যের খাদ্যসাথী প্রকল্প সারা দেশে সুনাম কুড়িয়েছে। সেই কাজে বাগড়া দিতে চাইছে কেন্দ্র। খাদ্যসাথী প্রকল্পে নিম্ন মানের চাল দেওয়ার অভিযোগ তাঁর দফতরকে যে-অস্বস্তিতে ফেলেছে, তা কাটাতে আগামী দিনে জেলায় জেলায় আরও অভিযান চালাতে বলা হয়েছে এ দিনের সভায়। মন্ত্রী জানান, রাজ্য ও জেলা স্তরে পৃথক কমিটি গড়া হয়েছে। ওই সব কমিটি নিয়মিত তল্লাশি-অভিযান চালাবে। রেশনে নিম্ন মানের চাল পেলেই সংশ্লিষ্ট ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy