সতর্কতা: ভারী যান চলাচল বন্ধের নোটিস পড়েছে উড়ালপুলে। শুক্রবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
আপাত দৃষ্টিতে কোনও সমস্যা ছিল না। তার উপর দিয়ে দিব্যি চলছিল যানবাহন। কিন্তু মাঝেরহাট-বিপর্যয়ের পরেই প্রশাসনের নজরে এল, উড়ালপুলের বেয়ারিং বিগড়েছে। যার ফলে শুক্রবার থেকে সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হল ডানলপ-দক্ষিণেশ্বর উড়ালপুলে। মঙ্গলবার থেকে ওই উড়ালপুল মেরামতির জন্য পুরোপুরি বন্ধ করা হতে পারে। এর আগে গত শনিবারই অবশ্য ওই উড়ালপুলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মালবাহী লরি চলাচল।
ডানলপে বি টি রোডের যানজট কমাতেই ওই উড়ালপুলটি তৈরি করা হয়েছিল। এখন সেখানে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় নীচের রাস্তায় চাপ অনেকটাই বেড়ে গেল। উড়ালপুলটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে ডানলপ মোড় থেকে বি টি রোডের দু’দিকে এবং দক্ষিণেশ্বরের রাস্তায় যানবাহনের চাপ বহু গুণ বেড়ে যাবে। যা নিয়ে চিন্তায় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক কর্তারা।
সেই চাপ সামলে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। কিছু জায়গায় যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত উড়ালপুলে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। পূর্ত দফতর জানিয়েছে, বাড়তি সতর্কতা হিসেবেই উড়ালপুল মেরামত করা হচ্ছে।
মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে প্রায় সব সেতুরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। ডানলপ উড়ালপুলটি দেখভাল করে পূর্ত দফতরের উত্তর শহরতলি বিভাগ। গত সপ্তাহে সেটি পরীক্ষার সময়ে পূর্ত দফতরের কর্তাদের নজরে পড়ে, একটি স্তম্ভ ও গার্ডারের মাঝের বেয়ারিংয়ের অবস্থা বিশেষ ভাল নয়।
ওই জায়গায় উড়ালপুলটি বাঁক নিয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বেয়ারিং বিকল হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষ করে উড়ালপুল যেখানে বাঁক নিয়েছে। উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ক্ষেত্রে খালের উপরের বাঁকেই বেয়ারিং সরে গিয়ে সেতু ভেঙে পড়েছিল। ডানলপ উড়ালপুলের আরও কয়েকটি বেয়ারিংয়েও ত্রুটি ধরা পড়েছে।
গত শনিবার ব্যারাকপুর পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পূর্ত দফতরের কর্তারা। সেখানেই ঠিক হয়, ওই উড়ালপুল সপ্তাহখানেক আংশিক বন্ধ রেখে মেরামতির প্রাথমিক কাজ করা হবে। তার পরে যান চলাচল পুরো বন্ধ করে সেতুর পূর্ণাঙ্গ মেরামতি হবে। পুলিশ পূর্ত দফতরকে বলে, পুজোর আগে যেন উড়ালপুল খুলে দেওয়া হয়। পূর্ত দফতরের কর্তারা জানান, ৫ অক্টোবর উড়ালপুল খুলে দেওয়া হবে।
সেই মতো গত শনিবারই উড়ালপুলের দু’দিকে মালবাহী লরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (ট্র্যাফিক) অবধেশ পাঠকের দাবি, মালবাহী লরি মূলত রাতেই চলাচল করে বলে বি টি রোডে দিনের বেলায় বাড়তি চাপ পড়বে না।
মালবাহী লরির পাশাপাশি এ দিন ওই উড়ালপুলে সব ধরনের ভারী গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বি টি রোডে যানজট শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনিতেই তিন দিকের যানবাহনের চাপে ডানলপ মোড়ে যানজট থাকেই। সেতু বন্ধ হওয়ায় সেই চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। যা সামলাতে পুলিশের পাশাপাশি কমব্যাট ফোর্সের কর্মীদেরও নামানো হয়। মঙ্গলবার থেকে পূর্ত দফতরের পরামর্শ অনুযায়ী সেতু খোলা বা বন্ধ হবে। পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, যে সময়ে বেয়ারিং বদল হবে, সেই সময়েই উড়ালপুলের যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
তবে অবধেশ বলছেন, ‘‘সেতু বন্ধ হলে যানবাহনের চাপ যে বাড়বে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তার জন্য আমরা ব্যবস্থাও নিচ্ছি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে বি টি রোডে কলকাতামুখী রাস্তা দিন কয়েকের জন্য বন্ধ থাকবে। যানবাহন অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy