Advertisement
১০ মে ২০২৪

বাংলায় ভোটে এবার আসতে পারে ৩৪০ কোম্পানি বাহিনী

রাজ্যে আধাসেনা অনেকাংশে বাড়বে চতুর্থ দফার ভোট থেকেই। ২৯ এপ্রিল ওই দফায় বীরভূম, নদিয়া, বর্ধমান পূর্বের দু’টি করে লোকসভা কেন্দ্র এবং বহরমপুর ও আসানসোল কেন্দ্রে ভোট হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:১৫
Share: Save:

সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে বলে বিরোধীদের তোলা দাবি সম্পূর্ণ মান্যতা পাচ্ছে না ঠিকই। তবে ভোট যত গড়াবে, পশ্চিমবঙ্গে ততই বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। সেই সংখ্যাটা সর্বাধিক ৩৪০ কোম্পানি পর্যন্ত হতে পারে। তবে পরিস্থিতি ও প্রয়োজন অনুযায়ী এই সংখ্যার হেরফেরও হতে পারে বলে কমিশন সূত্রের খবর।

এখনও পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে দফাওয়াড়ি ৫০-৬০% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তবে স্পর্শকাতর সব বুথে আধাসেনাই যে পাহারায় থাকবে, সেটা চূড়ান্ত করে ফেলেছে কমিশন। তাদের ব্যাখ্যা, সব কেন্দ্রে সমান ভাবে স্পর্শকাতর বুথ থাকে না। তাই কেন্দ্রভিত্তিক বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। সবটা গড় হিসেব করে বলা ঠিক নয় বলেই মত কমিশনের একাংশের।

রাজ্যে আধাসেনা অনেকাংশে বাড়বে চতুর্থ দফার ভোট থেকেই। ২৯ এপ্রিল ওই দফায় বীরভূম, নদিয়া, বর্ধমান পূর্বের দু’টি করে লোকসভা কেন্দ্র এবং বহরমপুর ও আসানসোল কেন্দ্রে ভোট হবে। সেই সময় রাজ্যে ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন হতে পারে। পঞ্চম দফার নির্বাচনে তা পৌঁছতে পারে ৩৪০ কোম্পানিতে। সাত দফা ভোটের শেষে স্ট্রংরুম পাহারায় থাকবে ১৪ কোম্পানি। প্রতিটি দফার ভোটে ন’‌কোম্পানি বাহিনী ব্যবহার করা হবে ভোটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সব থেকে বেশি আধাসেনা থাকবে উত্তর ২৪ পরগনায়। ৬ মে ওই জেলার ব্যারাকপুর ও বনগাঁ কেন্দ্রের ভোটের জন্য ৭২ কোম্পানি এবং ১৯ মে দমদম, বারাসত, বসিরহাট কেন্দ্রের জন্য ১০৯ কোম্পানি বাহিনী নামানো হতে পারে। তার পরেই মুর্শিদাবাদ। ২৩ এপ্রিল সেখানে মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্রের ভোটে ব্যবহার করা হবে ৯৩ কোম্পানি আধাসেনা। পরের দফায় বহরমপুরের জন্য ৩৮ কোম্পানি আধাসেনা নামানো হতে পারে। হুগলির তিনটি আসনের জন্য ১৩০ কোম্পানি বাহিনী দেওয়া হবে। মাওবাদী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামে যাচ্ছে ১২১ কোম্পানি। কলকাতা পুলিশ এলাকায় থাকবে ৯৪ কোম্পানি।

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ৯৭টি কেন্দ্রে ভোট হবে। তৃতীয় দফায় ১১৫টি আসনে নির্বাচনের পরে চতুর্থ দফা থেকে ক্রমশ আসন কমতে থাকবে। ওই দফার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী হিসেবে থাকবে বিএসএফ, সিআরপি, সিআইএসএফ, এসএসবি, আরপিএফ, আইটিপিবি। উত্তর-পূর্বের যে-সব রাজ্যের ভোট শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেখানকার পুলিশও বাংলায় এসে ভোটের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবে। দ্বিতীয় দফায় মেঘালয়, সিকিম এবং নাগাল্যান্ডের পুলিশ থাকবে। তাদের সঙ্গেই তৃতীয় দফায় অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, মণিপুরের সঙ্গে আরও নাগাল্যান্ড পুলিশ ব্যবহার করা হবে। সেই সঙ্গে চতুর্থ দফার নির্বাচনে অসম, ত্রিপুরার পুলিশ থাকবে। সপ্তম দফার ভোটের পরে ৩২৩ কোম্পানি বাহিনী ফিরে যেতে পারে। ভিন্‌ রাজ্যের পুলিশকেও কেন্দ্রীয় বাহিনী হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রাজ্যের কাছে পুলিশ চায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে আপাতত এমনই পরিকল্পনা করা হয়েছে। ‘‘বাহিনী বেশি পেলে পশ্চিমবঙ্গের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানো হতে পারে,’’ বলেন এক কমিশন-কর্তা।

রাজ্যের সব বুথে আধাসেনার দাবি আবার তুলেছে বিজেপি। তাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস কৈলাস রবিবার বলেন, ‘‘কমিশন বুঝতে পারেনি, দেশের বাকি অংশের নিরিখে বাংলা ব্যতিক্রম। তাই প্রথম দফার ভোটে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। ফলে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় যাতে সব বুথে বাহিনী মোতায়েন করা হয়, সেই আবেদন জানাব আমরা।’’

রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিজয়বর্গীয়েরা ভয় পেয়েছেন। ওঁদের সংগঠন নেই, নেই জনসমর্থনও। তার উপরে ৮৩% মানুষ ভোট দেওয়ায় ওঁরা বুঝেছেন, পরাজয় নিশ্চিত। তাই এ-সব বলছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE