Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
general-election-2019-vote-colour

প্রচারে ‘হনু’রূপী নাবালক 

বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা থেকে দুর্গাপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ মমতাজ সংঘমিতার প্রচার শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের এই প্রচার মিছিল ঘিরেই ছড়িয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের এই প্রচার মিছিল ঘিরেই ছড়িয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:১০
Share: Save:

কাঠফাটা রোদে হাঁটছে বছর এগারো-বারোর তিন কিশোর। পিছনে তৃণমূল প্রার্থী এবং খোল-খঞ্জনি, ঢাক বাজাতে বাজাতে কয়েকজন। দুর্গাপুরে বৃহস্পতিবার নাবালকদের দিয়ে ওই প্রচারে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিল বিজেপি। কমিশনও জানিয়েছে, নাবালকদের প্রচার-সহ নির্বাচনের কোনও প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যায় না। কমিশনের অতিরিক্ত সিইও সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টির রিপোর্ট চাইব।’’ তবে তৃণমূলের দাবি, ‘এতে বিতর্কের কিছু নেই’।

বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা থেকে দুর্গাপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ মমতাজ সংঘমিতার প্রচার শুরু হয়। সেই প্রচার-মিছিলের একেবারে সামনেই দেখা যায়, ‘হনুমানরূপী’ জোড়হস্ত ওই তিন নাবালককে। তিন জনেরই পরনে শুধু ধুতি, তা-ও হাঁটুর উপরে। সর্বাঙ্গ মাটি মাখা। মুখে কালো রং। পিছনে খড় পাকিয়ে ‘লেজ’। ওই অবস্থাতেই প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে চলে প্রচার। সঙ্গে সবুজ নকুলদানা বিলি।

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, লাগোয়া জেলা বাঁকুড়ার দুর্লভপুর থেকে ঢাকিদের সঙ্গে এসেছিল ওই তিন কিশোর। তারা সাধারণত সং সেজে রোজগার করে। এ দিন মাথাপিছু ২০০ টাকা করে পেয়েছে ওই তিন জন।

কী ভাবে নাবালকদের প্রচারে ব্যবহার করা হল, সে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। শহরের বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূল যা করেছে তা অমানবিক, অনৈতিকও। আমরা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ এই ঘটনায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারেরও। দুর্গাপুরের মহকুমা রিটার্নিং অফিসার অনির্বাণ কোলের বক্তব্য, ‘‘নাবালকদের কোনও ভাবেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনও পর্যায়ে ব্যবহার করা যায় না। যাঁরা ভোটার, তাঁরাই কেবল এই প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারেন।’’

কয়েক বছর আগে ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস’ (এনসিপিসিআর) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে চিঠি লিখে জানিয়েছিল, ভোট-প্রচারে নাবালক-নাবালিকাদের ব্যবহার করা তাদের অধিকারের পরিপন্থী।

যদিও তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দলের তরফে ওই নাবালকদের হনুমান সাজিয়ে মিছিলে হাঁটানো হয়নি। বহুরূপী বা বাইরে থেকে কেউ মিছিলে ঢুকে থাকতে পারে। এতে বিতর্কের কিছু নেই। হনুমান সর্বজনীন।’’ প্রার্থী মমতাজ বলেন, ‘‘বাচ্চারা অনেক সময় অনেক কিছু সেজে আনন্দ পায়। তাতে কী এমন হল?’’ তবে এ সব ছাপিয়ে আর একটি প্রশ্নও ঘুরছে এলাকায়, তৃণমূলের মিছিলে হঠাৎ ‘রামভক্ত হনুমান’ নামানো কেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE