Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বিতর্কিত মন্তব্য? কমিশনের নজরে রাজ্যের এক ডজন নেতা

চার পর্ব আরও গতি পেলে তালিকা বাড়তেও পারে বলে মত কমিশনের একাংশের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

অতীতের কিছু নির্বাচনের পাশাপাশি সাম্প্রতিক সভা-সমিতি-মিছিল-সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে বক্তৃতা, মন্তব্য, ভাষণ বা নির্বাচনী বিধিভঙ্গ— এ সব খতিয়ে দেখে রাজ্যের এক ডজন নেতার উপর বাড়তি নজরদারির সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। লোকসভা নির্বাচনে উত্তেজনার পারদ চড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। উস্কানি বা প্ররোচনামূলক বক্তৃতা বা মন্তব্য সেই পরিস্থিতিকে আরও তপ্ত করতে পারে। সে কারণেই বাড়তি নজরদারির সিদ্ধান্ত। প্রচার পর্ব আরও গতি পেলে তালিকা বাড়তেও পারে বলে মত কমিশনের একাংশের।

কারা আছেন এই তালিকায়? বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট)। ইতিমধ্যেই তাঁর ‘নকুলদানা ও জল খাওয়া’ সংক্রান্ত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে সিপিএম। প্রায়ই বক্তৃতায় শালীনতার মাত্রা ছাড়ানোর অভিযোগ ওঠে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। কমিশনের প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাঁকেও। নানা সময়ে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠায় তাঁকেও তালিকায় রাখছে কমিশন। অতীতে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধেও নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ মাঝেমাঝে বক্তৃতাকে ব্যক্তিগত আক্রমণে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। ফলে কমিশনের তালিকায় নাম উঠছে রবীন্দ্রনাথবাবু ও রাহুলবাবুর।

প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নজরদারির তালিকায় থাকতে পারেন বলে খবর। তাঁর বিরুদ্ধে অতীতে নির্বাচনে বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও কখনও কখনও বেলাগাম মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের সঙ্গে মদন মিত্রও নজরদারিতে থাকছেন। রাজ্য বিজেপি’র নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মুকুল রায়, রাজ্য বিজেপি’র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য বিজেপি’র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও বাদ পড়ছেন না।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কী হবে নজরদারির পদ্ধতি?

রিটার্নিং অফিসার বরাবরই এই নজরদারি চালিয়ে থাকেন। কিন্তু অনেক সময়ে তাঁরা নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে সঠিক রিপোর্ট জমা দেন না বলে অভিযোগ ওঠে। সে কারণে রিটার্নিং অফিসারদের পাশাপাশি ওই সব নেতাদের কর্মসূচির উপরে নজর রাখবেন পুলিশ পর্যবেক্ষকেরাও। তালিকায় থাকা নেতাদের প্রতিটি সভা-সমিতি-মিছিলের ভিডিয়োগ্রাফি করা বাধ্যতামূলক হবে। বলা হয়েছে, একটি সভাও যেন বাদ না পড়ে। সেই সব ভিডিয়ো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন পুলিশ পর্যবেক্ষকরা। এমনকি, ওই নেতাদের সভা-সমিতি কিংবা মিছিলের কাছাকাছি থাকবেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। যাতে প্রয়োজনে ঘটনাস্থলে দ্রুত যেতে পারেন তাঁরা। ভোট পর্বে রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সে কারণেই রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্পর্কে আগাম জানেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার। সেই অনুযায়ী, ওই নেতাদের সভা-সমিতিকে নজরদারির আওতায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন দায়িত্বপ্রাপ্তেরা।

কমিশনের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বলে দিয়েছেন আচরণ বিধি কোনও অবস্থাতেই যেন কেউ না ভাঙেন। কমিশন যা যা করতে চাইছে, তাতে আমাদের আপত্তি নেই।’’ বিজেপির রাহুলবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের দিক থেকে যাতে এই ধরনের মন্তব্য না হয়, তা দেখব। তালিকায় বিজেপি’র কত জন থাকল, তা বিষয় নয়। কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে তাদের কাজ করুক।’’ অধীরবাবুর মতে, ‘‘বিষয়টি ঠিক আছে। কমিশন তার মতো করবে। অসুবিধা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE