কড়া নাড়ছে ভোট। শহর সাজছে নানা দলের ফ্লেক্স, ফেস্টুন, পতাকায়। কিন্তু এর বেশির ভাগই প্লাস্টিকের। শহরবাসীর অভিযোগ, মাস দুয়েকের মধ্যেই ভোট মিটে যাবে। ছিঁড়ে যাবে দলীয় পতাকা, ফ্লেক্সও। তখন সেগুলি জড়ো করে যেখানেই ফেলা হবে সেখানেই বাড়বে দূষণ। নিবার্চন কমিশনও এ বারের ভোটে যতটা সম্ভব পরিবেশ-বান্ধব প্রচারের কথা বলেছে।
এমনিতেই আসানসোল, দুর্গাপুর শহরে প্লাস্টিক জমে নর্দমা আটকে যাওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে। বাজারে, দোকানে পলিথিনের ব্যাগ নিষেধ করা হলেও ৪০ মাইক্রনের নীচের প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার চলে অনায়াসে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলের সদস্যেরা যদি প্লাস্টিকের পতাকা বা হোর্ডিং না ছাপিয়ে কাগজ ব্যবহার জোর দেন, তাহলে পরিবেশ বাঁচে বলে দাবি শহরের বাসিন্দাদের। পরিবেশ-বান্ধব প্রচারেরও দাবি করেছেন তাঁরা। দাবি মেনে চলার চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রায় সমস্ত দলের নেতারাই।
যদিও ইতিমধ্যেই শ’য়ে শ’য়ে প্লাস্টিকের ফ্লেক্স ছাপানোর বরাত চলে গিয়েছে দোকানে। আসানসোলের বস্তিন বাজারের এক ফ্লেক্স প্রস্তুতকারক সমীর দে বলেন, ‘‘কমবেশি সব দলের তরফেই বরাত পেয়েছি। কাজ চলছে পুরোদমে।’’ একই কথা দুর্গাপুরের দোকানেও। যদিও নেতাদের দাবি, তাঁরা প্লাস্টিকের ব্যবহার করছেন না। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীরা এই বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি ভি শিবদাসনের দাবি, ‘‘আমরা কাপড়ের পতাকা, ব্যানারের উপরই বেশি জোর দিচ্ছি। সবাইকে সতর্কও করা হয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই পরামর্শ যথা সম্ভব মেনে চলা হবে।’’ বিজেপির দাবি, অনেক আগেই প্রচারে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। দলের জেলা সহ সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প’ সফল করতে এ বারও আমরা প্লাস্টিকের সামগ্রী ব্যাবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, প্লাস্টিক একসঙ্গে মাটি, জল ও বাতাসকে দূষিত করে। প্লাস্টিক মাটিতে মেশে না। কোনও ব্যাকটেরিয়ারও ক্ষমতা নেই তাকে ‘ডিকম্পোজ’ করার। তাই মাটিতে প্লাস্টিক পুঁতে ফেললে চিরকালের মতো সেই বিষ মাটিতে থেকে যায়। পুড়িয়ে ফেলা হলে এর মধ্যে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক বাতাসে মিশে যায়। ফলে এই হাজার হাজার প্লাস্টিকের পতাকা বা ফ্লেক্সের ভবিষ্যৎ কী সে প্রশ্নও করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তবে এ বার নির্বাচন কমিশন বলায় প্লাস্টিক ব্যবহার কিছুটা কমবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
দুর্গাপুরে তৃণমূলের ২ নম্বর ব্লক সভাপতি শরবিন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করা হবে। জোর দেওয়া হবে কাপড়ের পতাকার উপর।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, ‘‘আমরা আগে থেকেই প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়েছি। কাপড় ও পাটের তৈরি সামগ্রী দিয়ে প্রচার করার চেষ্টা করা হয়। এ বার আরও সচেতন থাকার চেষ্টা করব।’’ বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘কমিশনের আর্জি মেনে চলার চেষ্টা করবেন আমাদের দলের কর্মীরা।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তরুণ রায়ও পরিবেশ-বান্ধব প্রচারে জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy