Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

লিড নিয়ে মিথ্যে নয়: শতাব্দী

‘লিড’ নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়, সত্যিটা বলুন—রবিবার জেলা কমিটির বৈঠক থেকে দলের নেতা-কর্মীদের এ ভাবেই সতর্ক করলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৬:২৩
Share: Save:

‘লিড’ নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়, সত্যিটা বলুন—রবিবার জেলা কমিটির বৈঠক থেকে দলের নেতা-কর্মীদের এ ভাবেই সতর্ক করলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায়। তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন কম বকুনি খেয়ে সত্যিটা বলুন। মিথ্যে কথার সময় নয়। মিথ্যা কাজের সময় নয়। এখনও সময় আছে, শুধরে নেওয়া যাবে।’’

ঘটনা হল, নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ায় আগে টানা এক মাস ধরে ব্লকে ব্লকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন থেকে ভোটের ‘লিড’-এর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিচ্ছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কোথাও স্বেচ্ছায় বুথ ও অঞ্চল সভাপতিরা অনুব্রতকে জানাচ্ছিলেন, কত লিড দিতে পারবেন। কে কত লিডের কথা বলছেন, লিখে রাখা হচ্ছিল তা। কিছু ক্ষেত্রে সই-ও করিয়ে নেওয়া হচ্ছিল সংশ্লিষ্ট নেতাকে দিয়ে। কিন্তু, দলেই প্রশ্ন উঠেছিল, জেলা সভাপতিকে তুষ্ট করতে কেউ কেউ ‘বাড়িয়ে’ লিডের পরিমাণ বলে দিচ্ছেন না তো? সেই লিড ভোটে বজায় রাখা সম্ভব হবে তো?

রবিবার সিউড়ি রবীন্দ্র সদনে আয়োজিত জেলা কমিটির বৈঠক দলের নেতাদের ঠিক সেই বিষয়টি নিয়েই সতর্ক করলেন শতাব্দী রায়। একাধিক পরামর্শের মধ্যে যে বিষয়ে সব চেয়ে জোর দিয়েছেন বিদায়ী সাংসদ, তা হল, সংগঠনের প্রকৃত অবস্থা জেনে এগোনো। তিনি বলেছেন, ‘‘যে খবর কেষ্টদা(অনুব্রত মণ্ডল) চাইছেন, দয়া করে সঠিক খবর দিন। সাময়িক হাততালি পাবেন জেনে বা উচ্ছ্বাস থেকে অনেক বেশি লিড হবে বলবেন না। বরং যেখানে অবস্থা খারাপ আছে বললে কেষ্টদা ‘রিপেয়ার’ করতে পারবেন। প্রার্থীরা সেখানে গিয়ে অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবেন।’’ এখানেই শেষ নয়। শতাব্দীর আরও সতর্কবার্তা, ‘‘এখনও সময় আছে। সত্যি বলুন। না হলে কিন্তু খারাপটা খারাপ থেকে যাবে। বকুনির যে ভয়টা এখন পাচ্ছেন, ফল বের হলে তার চার গুণ বকুনি পাবেন।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অনুব্রত মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেক অঞ্চল বা বুথ সভাপতিরা যা লিড দেব বলেছেন, তাঁরা সেই পরিমাণ লিড দেবেন, সেখানে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু শতাব্দী ভুল কিছু বলেননি। তিনি বলতে চেয়েছেন, কোনও নেতা যদি আমাকে বলতে ভয় পান, সেটা ওঁর মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌঁছবে।’’

এমনিতেই ‘লিড’ রাখা নিয়ে দলের অন্দরে চাপা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ‘লিড’ দিতে না পারলে যে সংশ্লিষ্ট নেতার কপালে জুটবে ‘তিরস্কার’, তা অনুব্রত আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সেই জন্যই ঠিক কত লিড হবে, তার প্রকৃত তথ্য বকুনির ভয়ে দলের নেতা-কর্মীদের বড় অংশ চেপে গিয়েছেন বলে মনে করছেন জেলা

নেতাদের একাংশ। বীরভূমের পরপর দু’বারের সাংসদ সেই দিকেই আলোকপাত করতে চেয়েছেন। বিজেপি এবং সিপিএমেরও কটাক্ষ, আসলে যে দলের ভেতরে ঘুণ ধরেছে, সেটা মাঠে নেমে বুঝেছেন বলেই বিদায়ী সাংসদের এমন সতর্কতা। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব বিরোধীদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 TMC Satabdi Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE