Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

এলাকায় পা নয়, সৌমিত্র ‘যুঝলেন’ অনলাইনে

বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ দিনভর রইলেন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি হোটেলে। সঙ্গে চার জন দলীয় কর্মী।

ভোট পর্ব মিটতে দুর্গাপুরে সস্ত্রীক সৌমিত্র খাঁ। নিজস্ব চিত্র

ভোট পর্ব মিটতে দুর্গাপুরে সস্ত্রীক সৌমিত্র খাঁ। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত শীট
বড়জোড়া ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০৪:০০
Share: Save:

ঠিক করেছিলেন, সকাল ৯টার মধ্যে বড়জোড়ায় বাপের বাড়িতে চলে যাবেন ভোট দিতে। কিন্তু রবিবার সকালে ফোনে সুজাতা মণ্ডল বললেন, ‘‘বুথের সামনে তৃণমূলের মহিলারা জড়ো হয়ে রয়েছে। গেলে যদি ভারতী ঘোষের (ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী) মতো অবস্থা হয়?’’ তিনি ভোট দিতে গেলেন বিকেলে। আর তাঁর স্বামী, বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ দিনভর রইলেন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি হোটেলে। সঙ্গে চার জন দলীয় কর্মী। আর ল্যাপটপ। সারা দিনে তিনি প্রায় আড়াইশো অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে দাবি সৌমিত্রের। বলছেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের সত্তর শতাংশ তৃণমূলের লোকজনের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। তাঁদের ফোন করে বলেছিলাম, ভোট যেন শান্তিতে হয়।’’

বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে এ বার প্রার্থী হয়েছেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া গত বারের সাংসদ সৌমিত্র। তাঁর বিরুদ্ধে বাঁকুড়ার বিভিন্ন থানায় বালি চুরি, প্রতারণার মতো মামলা রুজু হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর জেলায় ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় প্রচারের অধিকাংশটাই সামলেছেন সৌমিত্রের স্ত্রী সুজাতা।

শনিবার বিকেলে দুর্গাপুরের হোটেলে ওঠেন সৌমিত্র। বিজেপি-র কিছু নেতা-কর্মী কাগজপত্র সই করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় ভোর পর্যন্ত ভোট সংক্রান্ত কাজ করেছেন বলে জানাচ্ছেন সৌমিত্র। দাবি করেছেন, এ দিন সকালে শুধু চা খেয়ে ল্যাপটপ আর ফোন নিয়ে বসেছিলেন। জলখাবার খাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন বিকেল তিনটেয়। স্নান তারও পরে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বাবা, মা আর বোনকে নিয়ে সুজাতা বিকেল ৫টায় গিয়েছিলেন বড়জোড়া হাইস্কুলের বুথে। নির্বিঘ্নেই ভোট দেন। কিন্তু বেরনোর পরে বাধে ‘বিপত্তি’। কিছু লোকজনের সঙ্গে বচসায় জড়ান তিনি। বুথ থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার দূরে রাজ্য সড়ক। সেখানে গাড়ি রাখা ছিল। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে দিতে সুজাতা গাড়িতে গিয়ে ওঠেন। পিছনে ‘মা-মাটি-মানুষ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে চলে অন্য পক্ষ। এলাকায় তারা শাসক শিবিরের বলেই পরিচিত। ওই বুথে নিরাপত্তার দায়িত্বে শুধু রাজ্য পুলিশ ছিল। সুজাতা ভোট দিয়ে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠা পর্যন্ত প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে দু’পক্ষকে সামাল দেয় তারা। পরে সুজাতা বলেন, ‘‘তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী হার নিশ্চিত জেনে আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেছে।’’ অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমূলের বড়জোড়া ব্লক সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি বুথ চত্বরেই উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করেন। আমরা প্রতিবাদ করেছি।’’ কেশপুরে ভারতী ঘোষের সঙ্গে যেমন হয়েছে, তেমন পরিস্থিতি যদি তৈরি হত? সৌমিত্র বলছেন, ‘‘অসম্ভব। বিষ্ণুপুরের মহিলারা এবং তরুণ প্রজন্ম আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। দরকারে রুখে দাঁড়াতেন তাঁরাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE