Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘দায়ী রাজনীতি’, ছেলেকে হারিয়ে আক্ষেপ বাবার

কেন দায়ী রাজনীতি? সন্দীপের বাবা এলাকার প্রবীণ তৃণমূল কর্মী বিজয় ঘোষ বলেন, ‘‘ছেলে রাজনীতির বলি হল। পিকনিক করতে যাচ্ছি বলে সরস্বতীগঞ্জে গিয়েছিল। কী করে জানব, মিটিংয়ে গিয়েছে।’’

ঘটনার খবর পাওয়ার পরে বাড়ির লোকজন। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার খবর পাওয়ার পরে বাড়ির লোকজন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর ও কাঁকসা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

দায়ী রাজনীতিই। ছেলেকে হারিয়ে সোমবার কাঁকসার মলানদিঘি পঞ্চায়েতের রূপগঞ্জের বাড়িতে বসে বারবার এমনই আক্ষেপ করছিলেন বাবা। সমানে কেঁদে চলেছেন নিহত বিজেপি বুথ সভাপতি সন্দীপ ঘোষের (২২) মা প্রতিমাদেবী ও দিদিরা।

কেন দায়ী রাজনীতি? সন্দীপের বাবা এলাকার প্রবীণ তৃণমূল কর্মী বিজয় ঘোষ বলেন, ‘‘ছেলে রাজনীতির বলি হল। পিকনিক করতে যাচ্ছি বলে সরস্বতীগঞ্জে গিয়েছিল। কী করে জানব, মিটিংয়ে গিয়েছে।’’ এর পরেই তিনি এই ঘটনার জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন। সঙ্গে দোষারোপ করেছেন বিজেপি-কেও। পেশায় একটি বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী বিজয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘মাস তিনেক হল বিজেপি করছিল ছেলে। কেন ওরা ছেলেকে ‘মিটিং’ করতে জঙ্গলের মাঝে ডেকে নিয়ে গেল? পারবে ছেলেটাকে ফিরিয়ে দিতে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতীগঞ্জ গ্রামে বিজেপি-র দলীয় বৈঠকে যোগ দেন সন্দীপ। বৈঠক শেষে গ্রামেরই পুকুরপাড়ে খাওয়াদাওয়া করা হয়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথেই খুন হন সন্দীপ।

আরও পড়ুন: মৃতদেহ নিয়ে একের পর এক সভা বিজেপির, মঙ্গলবার বন্‌ধের ডাক গোটা দুর্গাপুরে

পরিবারের লোকজন জানান, সন্দীপের বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে প্রাথমিক ভাবে তাঁরা চিন্তায় পড়েননি। কারণ, দুর্গাপুরের মাইকেল মধুসূদন কলেজের বিএ তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া সন্দীপের নেশা ছিল, বিয়েবাড়িতে ছবি তোলা। পাশাপাশি, মলানদিঘির একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন সন্দীপ। বিয়ে বাড়িতে ছবি তোলার সূত্রে মাঝেসাঝে রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হত। তবে রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সন্দীপের মোবাইলে ফোন করা হলেও কোনও উত্তর মেলেনি। রাত ১১টা নাগাদ পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার কথা জানতে পারেন পরিবারের সদস্যেরা।

আরও পড়ুন: তিন চাষির আত্মহত্যা নিয়ে বিপাকে বিজেপি

ঘটনার খবর বাড়িতে পৌঁছনোর পরে থেকেই বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন সন্দীপের মা প্রতিমাদেবী। একই অবস্থা সন্দীপের দুই দিদিরও। পরিবারটির পাশে রয়েছেন পড়শিরা। পড়শিরাও এই ঘটনায় শোকাহত। এলাকাবাসী জানান, গ্রামের কারও বিপদ হলে ছুটে আসতেন সন্দীপ। অত্যন্ত মিশুকে, শান্ত স্বভাবের তরুণ সন্দীপের মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা গীতা বাগদি, সুমন ঘোষেরা বলেন, ‘‘গ্রামের ছেলেকে হারিয়ে আমরাও কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। কেন এমনটা হল, বুঝতে পারছি না। দোষীরা কঠোর শাস্তি পাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Politics TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE