কালীঘাটে তিনি পদার্পণ করেছেন। এ বার তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে তাঁর পুনঃপ্রবেশ শুধু সময়ের অপেক্ষা!
তৃণমূলের অন্দরে অবশ্য গুঞ্জন, এখন পৌষ মাস চলছে। সংস্কারগত কারণে পৌষ মাসে অনেকেই অবস্থান বদল করেন না। মুকুলও হয়তো সেই কারণেই এখনই তৃণমূল ভবনে আসবেন না! তবে পৌষ সংক্রান্তির পরে যে কোনও দিনই তাঁকে ফের তৃণমূল ভবনে দেখা যেতে পারে বলে দলের একাংশের ধারণা। তবে কবে তিনি তৃণমূল ভবনে যাবেন, তা অবশ্য মুকুল খোলসা করেননি। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে শনিবার তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ভবনে যাওয়া নিয়ে পৌষ মাসের কোনও ব্যাপার নেই। আমি রাজনৈতিক কাজ করি। তা-ই করছি।’’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মুকুল আরও বলেন, ‘‘আগে যখন তৃণমূল ভবনে বসতাম, তখন নিজাম প্যালেসেও আমার দফতরে বসতাম। এখনও বসি। নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজ শুরু করেছি। যে কোনও দিন তৃণমূল ভবনে যেতে পারি।’’
আজ, রবিবার লালগড়ে ঝিটকা কালীমন্দিরে, রামগড়ে মৌজি মায়ের মন্দিরে এবং চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার কথা মুকুলের।
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীঘাটে গিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আধ ঘণ্টা কথা বলেছেন মুকুল। ১১ মাসের দূরত্ব এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ার পথে। নেতা-নেত্রীর সম্পর্কের পুনর্নবীকরণকে ঘিরে অবশ্য নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। মুকুল অনুগামীদেরও নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্যামল চক্রবর্তী মনে করেন, ‘‘ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশেছে! এত দিন সিবিআইয়ের ভয় ছিল। তাই দূরে ছিল। এখন দিদি ভাই-মোদী ভাই মিলে গিয়েছে। সিবিআইয়ের ভয় নেই। মুকুলও দিদিভাইয়ের কাছে ফিরেছেন।’’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের তির্যক মন্তব্য, ‘‘ওঁদের দূরত্বটা আসলে সিবিআই-র হাত থেকে বাঁচতে সাজানো নাটক ছিল।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে বিজেপি-র রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এ দিন বলেন, ‘‘ওঁরা বাংলার মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ভোট আসছে। তাই নাটকটা ওঁরা আর চালাতে পারলেন না!’’ দিল্লি বা কালীঘাটের সাক্ষাতের আগেও মমতা-মুকলের কথা হয়েছিল বলে সন্দেহ করেছেন কেউ কেউ।
মুকুল-ঘনিষ্ঠরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন। এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মুকুল-ঘনিষ্ঠ সল্টলেকের মেয়র সব্যসাচী দত্ত হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘আগে কথা হয়েছে কি না, আমি কী করে বলব? হয়তো হয়েছে। হয়তো হয়নি।’’ বিষয়টি নিয়ে হেঁয়ালি তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরে কৌতূহল রয়েছে মুকুল-অনুগামীদের প্রস্তাবিত নতুন দল গঠনের ব্যাপারেও। মকুল-ঘনিষ্ঠ নেতা প্রদীপ ঘোষ অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁদের নতুন দল অনুমোদন পাবেই। আর বহু বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থক ওই দলের সঙ্গে আছেন। প্রয়োজনে তাঁরা মুকুলের পিছনে থাকবেন।
মুকুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত এবং তমলুকের বিধায়ক শিউলি সাহাকে দল সাসপেন্ড করেছিল। শিউলিকে ফিরিয়ে নিলেও তৃণমূল নেতৃত্ব শীলভদ্রকে এখনও ফিরিয়ে নেননি। মুকুলের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর সম্পর্ক প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গেলেও শীলভদ্র সম্পর্কে এখনও দলের কেউ উচ্চবাচ্য করছেন না। তাঁর কী হবে, জানতে চাইলে এ দিন শীলভদ্র সোজাসুজি উত্তর এড়িয়ে বলেন, ‘‘ধৈর্য ধরুন। কয়েক দিন বাদেই সব বুঝতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy