দীপা দাশমুন্সি। ফাইল চিত্র।
দুই ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্ত ইসলামপুরে এখন তুঙ্গে রাজনীতির পারদ। শুক্রবার বিজেপির ডাকে ১২ ঘণ্টার বন্ধ পালিত হয়েছে গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলায়। বন্ধকে কেন্দ্র করে অশান্তি হয়েছে জেলার বিভিন্ন অংশে। ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার এসএফআই-সহ অন্যান্য বামপন্থী ছাত্র সংগঠন রাজ্যজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। শুক্রবার রাতেই ইসলামপুর পৌঁছেছেন এলাকার প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সদ্যনিযুক্ত কার্যকরী সভানেত্রী দীপা দাশমুন্সি-সহ জেলা কংগ্রেসের গোটা নেতৃত্ব। তাপস বর্মনের মৃতদেহ রাতেই পৌঁছচ্ছে তাঁর বাড়িতে। তাঁর বাড়ি ঘিরে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার বহু মানুষ।
যদিও কার গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা না কাটায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ রয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশই গুলি চালিয়েছিল বৃহস্পতিবার। রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মনের মৃত্যু পুলিশের গুলিতে হয়েছে বলেই তাঁদের দাবি। কিন্তু পুলিশ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে গুলিচালনার অভিযোগ।
এরই মধ্যে শুক্রবার রাতেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, রাজেশ সরকার নামের দাড়িভিট হাইস্কুলের যে প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই হয়েছিল, তাঁর পরিবারকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়েছে পুলিশ। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘পুলিশ যে ভাবে রাজেশ সরকারের পরিবারকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে, তা বেআইনি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যে ভাবে রাজেশের দেহের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে, তা আরও বেআইনি। আমরা এটা মানব না। আমরা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছি। আমরা আদালতেও যাচ্ছি।’’
আরও পড়ুন: দুই শিক্ষকের কথায় প্রভাবিত হয়েই কি ঝাঁপিয়েছিল পুলিশ? নীরব এসপি
শুক্রবার অনেক রাত পর্যন্ত দীপা দাশমুন্সি, মোহিত সেনগুপ্তরা দাড়িভিট গ্রামেই ছিলেন। তাপস বর্মনকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর বাড়িতেই অপেক্ষা করছিলেন দীপা-মোহিতরা। তাঁদের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই ছিলেন কংগ্রেস কর্মীরা। ছিলেন এলাকার সাধারণ জনতাও। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে সেই জমায়েতকে।
আরও পড়ুন: নিয়োগে ‘না’! তবু ওই দুই শিক্ষককে কেন ডাকল স্কুল? রহস্য বাড়ছে ইসলামপুরে
গুলিচালনায় যাঁরা জখম হয়েছিলেন, তাঁদের দেখতে এলাকার সাংসদ তথা সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বৃহস্পতিবারই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পুলিশের বিরুদ্ধে গুলিচালনার অভিযোগ তোলেন তিনিও। দাড়িভিটে যে ঘটনা ঘটেছে, তার তীব্র নিন্দা করেন সেলিম। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম— সব দলই যে ভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে গুলিচালনার এবং অনৈতিক কার্যকলাপের মাধ্যমে ‘আসল ঘটনা’ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলছে, তাতে স্বাভাবিক ভাবেই চাপে জেলা প্রশাসন। দাড়িভিট কাণ্ডের প্রতিবাদে যে ভাবে সবক’টি বিরোধী দল একসুরে কথা বলতে শুরু করেছে এবং যে ভাবে প্রবল আক্রমণ করছে শাসক দলকে, তাতে জেলা তৃণমূলের অস্বস্তিও ক্রমশ বাড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy