Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইঞ্জিন বিকল, ট্রেনে দুর্ভোগ, মেলেনি রাতের খাবার, পানীয় জলও

এ দিকে, ওই ইঞ্জিন বিভ্রাটের জেরে বুধবার রাত থেকেই মালদহ জেলা ও বিহারের বারসই থেকে বিভিন্ন স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় একাধিক ট্রেনকে। এমনকি এদিনও সকাল ৯টা পর্যন্ত একই চিত্র ছিল জেলার বিভিন্ন স্টেশনগুলোতে। তার জন্য চরম দুর্ভোগে পড়েন রেলযাত্রীরা।

কামরূপ এক্সপ্রেস।

কামরূপ এক্সপ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:০১
Share: Save:

সামসি ও মালাহার স্টেশনের মাঝে কাণ্ডারণ গ্রামের ডাউন লাইনে বুধবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে বিকল হয়ে পড়ে রইল একটি ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ৭৫৭২০ নম্বর ডাউন ওই প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি শিলিগুড়ি থেকে মালদহের কোর্ট মালদহ স্টেশনে আসছিল। কাণ্ডারণ এলাকায় ট্রেনের সামনের ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে পড়ে। তার জেরে বুধবার রাতে তো বটেই, এমনকি বৃহস্পতিবার দিনভর বিপর্যস্ত হল দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের রেল পরিষেবা। তবে ওই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রীদের ডাউন তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস ট্রেনে তুলে দেওয়া হয় এবং সেই ট্রেনটি সামসি থেকে মালদহ টাউন স্টেশন পর্যন্ত সমস্ত স্টেশনেই দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায়।

এ দিকে, ওই ইঞ্জিন বিভ্রাটের জেরে বুধবার রাত থেকেই মালদহ জেলা ও বিহারের বারসই থেকে বিভিন্ন স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় একাধিক ট্রেনকে। এমনকি এদিনও সকাল ৯টা পর্যন্ত একই চিত্র ছিল জেলার বিভিন্ন স্টেশনগুলোতে। তার জন্য চরম দুর্ভোগে পড়েন রেলযাত্রীরা।

বিশেষ করে দূরপাল্লার যাত্রীদের দুর্ভোগ হয় বেশি। একেই রাতের দিকেই বেশিরভাগ ট্রেন, তার উপর শুধু আপ লাইন দিয়ে সমস্ত ট্রেনগুলিকে যাতায়াত করানোয় সমস্ত ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক ঘণ্টা দেরিতে চলেছে রাত থেকেই। তবে রাতভর মেরামতি করে এ দিন সকাল সাতটা দশ মিনিট নাগাদ বিকল হয়ে পড়া ওই ইঞ্জিন সহ ট্রেনটিকে কোনওরকমে সামসি রেল স্টেশনে এনে দাঁড় করানো হয়। তবুও ওই ডাউন লাইনে স্বাভাবিক রেল পরিষেবা শুরু করতে সকাল ন’টা বাজে। দ্রুত মেরামতির ব্যবস্থা না করে সারারাত ধরে ডাউন লাইনে একটি ইঞ্জিন সহ ট্রেন বিকল হয়ে পড়ে থাকায় রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত অবশ্য বলেন, “আগামী দিনে এব্যাপারে আরও সতর্ক থাকা হবে। কেন ও কিভাবে ইঞ্জিন বিকল হল তা নিয়ে বিভাগীয় তদন্তও করা হবে।”

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি-মালদহ কোর্ট স্টেশন ডেমু প্যাসেঞ্জারটি বুধবার নির্ধারিত সময়েই শিলিগুড়ি থেকে ছেড়ে ডাউন লাইনে মালদহের দিকে আসছিল। মালাহার পার হওয়ার পর কাণ্ডারণ এলাকায় আচমকা ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ইঞ্জিনের চাকায় সমস্যা দেখা দেয় বলে রেল সূত্র জানিয়েছে।

প্যাসেঞ্জার ট্রেনের নিত্যযাত্রী প্রতাপ দাস বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ট্রেনে উঠেছিলাম। ট্রেনটি ভালই চলছিল। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ আচমকা ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেনটি কাণ্ডারণের নির্জন এলাকায় দাঁড়িয়ে পড়ে। আর চলেনি।” যাত্রীরা রাতের খাবারও কিনে খেতে পারেননি অনেকে। পানীয় জলও পাননি বলে অভিযোগ। সামসির স্টেশন ম্যানেজার মনোজ ঠাকু বলেন, “রাত দশটা নাগাদ মালদহ ডিভিশন থেকে ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা সড়কপথে এসে বিকল ইঞ্জিন মেরামতির কাজ শুরু করেন।”

এ দিকে, বিকল হয়ে পড়া ট্রেনটির জন্য সামসি থেকে মালাহার স্টেশন পর্যন্ত ডাউন লাইন সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে পুরোপুরিই বন্ধ হয়ে পড়ে। পুরাতন মালদহ, একলাখি, সামসি, মালাহার, ভালুকা রোড, হরিশ্চন্দ্রপুর, কুমেদপুর, আজমনগর, বারসই প্রভৃতি স্টেশনে একাধিক ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় রাতে।

কোনও ট্রেনকে এক ঘণ্টা বা কোনও ট্রেনকে দুই থেকে তিন ঘণ্টাও দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে আপ ও ডাউন দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস, কামরূপ এক্সপ্রেস, সরাইঘাট এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র মেল, হাটেবাজারে এক্সপ্রেস, রাধিকাপুর এক্সপ্রেস, তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস প্রভৃতি একাধিক ট্রেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Rail Train Engine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE