Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Swami Aseemanand

অযোধ্যা পাহাড়ে অসীমানন্দ, রাঁচী পাঠাল পুরুলিয়ার পুলিশ

নবান্ন সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে পাঁচ মাস আন্দামানে বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন অসীমানন্দ।

স্বামী অসীমানন্দ।—ছবি সংগৃহীত।

স্বামী অসীমানন্দ।—ছবি সংগৃহীত।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:২১
Share: Save:

অযোধ্যা পাহাড়কে কেন্দ্র করে টানা ৪৭ দিন পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। আন্দামান থেকে ফিরে তাঁরই তৈরি বাগমুন্ডির আদিবাসী ছাত্রাবাসে ১৪ দিনের নিভৃতবাসও কাটিয়েছেন। জুলাই থেকে ছিলেন অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় একটি মন্দিরে। রাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছ থেকে সেই খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসনের শীর্ষমহল। নবান্নের নির্দেশে গত ২১ জুলাই রাতে বাগমুন্ডি থানার পুলিশ গিয়ে একপ্রকার ‘জোর’ করে রাঁচী পাঠিয়ে দিয়েছে স্বামী অসীমানন্দকে। সমঝোতা এক্সপ্রেস, হায়দরাবাদ মক্কা মসজিদ এবং অজমেঢ় শরিফ দরগা বিস্ফোরণ মামলা থেকে যে বাঙালি সন্ন্যাসীর বেকসুর খালাস পাওয়া নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক।

রাঁচীর একটি আদিবাসী আশ্রম থেকে বৃহস্পতিবার ফোনে অসীমানন্দ বলেন, ‘‘বাগমুন্ডি থানার বড়বাবু পরিচয় দিয়ে এক পুলিশ কর্তা আমাকে গ্রেফতারির হুমকি দেন। আমি বলি, গ্রেফতার করুন। তার পরে তাঁরা জানান, ২১ জুলাই রাতেই আমার উপর হামলা হবে। এখনই আমাকে পুরুলিয়া ছাড়তে হবে। পুলিশই গাড়ির ব্যবস্থা করে। স্থানীয় এক বিজেপি নেতা চিকিৎসার জন্য রাঁচী যাচ্ছেন, আমি তাঁর সঙ্গী— এই মর্মে কাগজ তৈরি হয়। ২২ জুলাই ভোরে আমি রাঁচী পৌঁছই।’’ পুলিশ অবশ্য অসীমানন্দকে রাঁচী পাঠানোর কথা স্বীকার করছে না। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘যে কেউ আসতেই পারেন, আবার স্বেচ্ছায় চলে যেতেই পারেন।’’ অসীমানন্দের দাবি প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে দেখি।’’ রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এ বিষয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি।

নবান্ন সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে পাঁচ মাস আন্দামানে বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন অসীমানন্দ। গত ৫ জুন বিমানে দমদমে এসে সোজা যান বাগমুন্ডি। সেখানেই ১৪ দিন নিভৃতবাসে কাটান। তার পর কুমারী, বান্দোয়ান, রাউতরা, ঝিলিমিলি প্রভৃতি আদিবাসী এলাকায় ঘুরেছেন। এর পর চলে আসেন অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় রামমন্দির সংলগ্ন আশ্রমে। তখনই গোয়েন্দাদের নজরে আসেন তিনি। অসীমানন্দের অভিযোগ, ‘‘আমি সমস্ত মামলা থেকে বেকসুর খালাস হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ আমাকে গ্রেফতারির হুমকি দিয়েছে। দোষমুক্ত হওয়ার পর আমি উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, তামিলনাডু, আন্দামানে ঘুরে বেড়িয়েছি। অথচ নিজের রাজ্য থেকেই আমাকে বার করে দেওয়া হল!’’

রাজ্যের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার আদিবাসী সমাজে অসীমানন্দ খুবই পরিচিত। সামনে নির্বাচন আসছে, তাঁর উপস্থিতি কাজে লাগিয়ে বিজেপি প্রভাব বিস্তার করতে পারে। শাসক দলের তরফেও আপত্তি করা হচ্ছিল।’’ অন্য দিকে নবান্নের এক কর্তার মতে, কারও উপস্থিতিতে সামাজিক সদ্ভাব বিনষ্ট হলে তা ঠেকানোর দায়িত্ব প্রশাসনের। সেই কারণেই এক সময় প্রাক্তন বিশ্বহিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়ার রাজ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Swami Aseemanand Purulia Police Ranchi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE