Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল-সঙ্গ চাইছেন না রাহুল, দাবি সোমেনের

রাহুল অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরে জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। গত মাসে মমতার ডাকে ব্রিগেডে বিরোধীদের মহাসমাবেশে দলের তরফে লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে পাঠিয়ে মমতাকে বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।

দলীয় বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

দলীয় বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৯
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও রকম জোটে না যাওয়ার কথা দীর্ঘদিন ধরেই বলছেন রাজ্য কংগ্রেস নেতারা। আজ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে কথা বলার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র দাবি করলেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে বামেদের জন্য দরজা খুলে রেখে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের দরজা বন্ধ করল কংগ্রেস। তাঁর দাবি, এ নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি।

রাহুল অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরে জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। গত মাসে মমতার ডাকে ব্রিগেডে বিরোধীদের মহাসমাবেশে দলের তরফে লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে পাঠিয়ে মমতাকে বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। একই ভাবে প্রদেশ নেতৃত্বের সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়ে ক’দিন আগেই রাজীব কুমার বিতর্কে মমতাকে সমর্থন জানিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বার কথা বলেছিলেন রাহুল। এমনকি গত কাল সংসদে রাফাল বিতর্কে কংগ্রেস-তৃণমূলে একযোগে সরব হয়। সে সময় রাহুলের সঙ্গে মমতার এসএমএস চালাচালিও হয়। মমতা পরে সরাসরিই বলেন, জাতীয় বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আছি। সে ক্ষেত্রে বাস্তবতা বিচার করে প্রদেশ সভাপতির এই দাবি কতটা কার্যকর হবে, সে প্রশ্ন থাকছেই।

লোকসভা নির্বাচনে দলের কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন সব রাজ্যের প্রদেশ সভাপতি ও পরিষদীয় দলনেতাকে ডেকে পাঠান রাহুল। সেখানেই সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নানের কাছে রাজ্যের পরিস্থিতি জানতে চান তিনি। বাংলার কংগ্রেস নেতারা তাঁকে জানান, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের কেউই জোট করতে চান না। তবে বামেদের সঙ্গে যাওয়া নিয়েও দলের মধ্যে বিভ্রান্তি আছে। প্রদেশ নেতাদের দাবি, তাঁদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন রাহুল।

আরও পড়ুন: গ্যারান্টি ছাড়াই রাফালে রাজি! মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ তীব্র করার নির্দেশ রাহুলের

বৈঠক শেষে সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট হচ্ছে না, সেটি একেবারে চূড়ান্ত। কিন্তু বামেদের সঙ্গে যাওয়া নিয়ে দলের বিভ্রান্তি কাটাতে কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আর্জি জানিয়েছি রাহুল গাঁধীকে। যদি মর্যাদার আসন পাওয়া যায়, তা হলে বামেদের সঙ্গে যাওয়া যেতে পারে।’’

রাহুল আপাতত পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন। রাজ্য নেতারা যা স্থির করবেন, তাতেই সায় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য নেতারা এই বিষয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: এ দেশে খরচে প্রথম ধর্ম, দ্বিতীয় লটারি

সীতারামের সঙ্গে রাহুলের ক’দিন আগেই একটি বৈঠক হয়েছিল। দিল্লিতে সিপিএমের পলিটবুরো বৈঠক শেষে সীতারামকেও আজ বঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রশ্নটি কৌশলে এড়িয়ে তিনি জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত স্থির আছে, ৩-৪ মার্চ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হবে। পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিতে ঠিক হয়েছে, বামেদের প্রার্থীরা লড়বেন। যেখানে বামেদের প্রার্থী নেই, সেখানে বিজেপি-তৃণমূলকে হারাতে হবে। আমাদের লক্ষ্যই হল, যত বেশি সম্ভব বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটকে

একজোট করা।’’

প্রদেশ কংগ্রেসের এই দাবিকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের নেতা তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘এ রাজ্যে কংগ্রেসের হাল এত করুণ যে, ওরা জোট করল কি না, তাতে কিছু এসে যায় না। জাতীয় রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে কী হবে, তা নিয়ে এআইসিসি তো কিছু বলেনি। ফলে প্রদেশ নেতাদের বক্তব্য নিয়ে কিছু বলার কোনও মানে হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE