Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্নাতকোত্তর অঙ্কে অধিকাংশই ফেল

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজে এখন স্নাতকোত্তর পাঠও দেওয়া হয়। দেখা যাচ্ছে, স্নাতকোত্তর গণিতের প্রথম সিমেস্টারে বেথুন, লেডি ব্রেবোর্নের মতো প্রথম সারির কলেজেও খুব খারাপ ফল হয়েছে। বেথুনে অঙ্কের সব পরীক্ষার্থীই ফেল।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০৪:৩৮
Share: Save:

কেন্দ্রীয় ভাবে এ বারেই প্রথম স্নাতকোত্তর পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর প্রথম দফাতেই গণিতে এমএসসি প্রথম সিমেস্টারের ফল শোচনীয়। এতটাই যে, বহু কলেজ-কর্তৃপক্ষই ক্ষুব্ধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজে এখন স্নাতকোত্তর পাঠও দেওয়া হয়। দেখা যাচ্ছে, স্নাতকোত্তর গণিতের প্রথম সিমেস্টারে বেথুন, লেডি ব্রেবোর্নের মতো প্রথম সারির কলেজেও খুব খারাপ ফল হয়েছে। বেথুনে অঙ্কের সব পরীক্ষার্থীই ফেল। ব্রেবোর্নে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২৮ জন। পাশ করেছেন মাত্র এক জন। বঙ্গবাসী সান্ধ্য, ডায়মন্ড হারবারের ফকিরচাঁদ কলেজেও অধিকাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন।

বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা মমতা রায় বৃহস্পতিবার জানান, গণিতে প্রথম সিমেস্টার পরীক্ষায় তাঁদের পড়ুয়াদের ফল খুব খারাপ হয়েছে। ১১ জনের মধ্যে ১১ জনই ফেল করেছেন। ব্রেবোর্নের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানান, গণিতে তাঁদের কলেজের এক জন মাত্র পাশ করায় তাঁরা অবাক হয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্র তৈরি, মডারেশন ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত।’’ তিনি জানান, রসায়নেও তাঁদের কলেজের পড়ুয়ারা বেশ খারাপ ফল করেছেন।

বিভিন্ন কলেজের অকৃতকার্য পড়ুয়ারা এ দিন ‘বিচার’-এর আশায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। প্রথমে তাঁরা যান কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। সেখানে পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের সঙ্গে কথা বলতে না-পেরে তাঁরা রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে যান। এত শোচনীয় ফল কেন, তার কারণ বোঝাতে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস এবং কলেজের পঠনপাঠনের তারতম্যের কথা তুলছেন। ওই পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে যাঁরা গণিত নিয়ে পড়েন, তাঁদের যে-ভাবে পড়ানো হয়, সেই ভাবেই প্রশ্ন এসেছে। কিন্তু বিভিন্ন কলেজের স্নাতকোত্তর পড়ুয়ারা তার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান অতসী দেবরায় অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়েও অঙ্কের ৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২ জন ফেল করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পঠনপাঠন চলে চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ পদ্ধতিতে। নিয়ম অনুযায়ী মোট পাঁচটি পত্রের সব ক’টিতেই পাশ করতে হবে। ‘‘বেথুন, ব্রেবোর্ন এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা ফল খারাপ করলে রিভিউ করাতে পারে। এটা বলতে পারি, খাতা খুবই ভাল ভাবে দেখা হয়েছে,’’ বলেন অতসীদেবী।

কলেজগুলি আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনসাপেক্ষে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের পরীক্ষা নিত। এ বারেই প্রথম কেন্দ্রীয় ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বেথুন কলেজের গণিতের বিভাগীয় প্রধান প্রতাপ রায় জানান, সিবিসিএস পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিষয়ে ‘ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট’ বা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর ধার্য থাকে। কিন্তু গণিতে তা নেই। ‘‘এই পড়ুয়ারা প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তি হয়। প্রত্যেকেরই আগের পরীক্ষার ফল খুবই ভাল। তাই এই ধরনের ফল দেখে আমরা খুবই অবাক হয়েছি,’’ বলেন প্রতাপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education MSc Mathematics Calcutta University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE