Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta University

উপাচার্যের বৈঠক সত্ত্বেও জট পরীক্ষা-পদ্ধতি নিয়ে

কলেজে প্রশ্নপত্র পাঠানো, বিভিন্ন কলেজে উত্তরপত্র পৌঁছে দেওয়া, পরীক্ষায় পড়ুয়াদের হাজিরার হিসেব রাখার মতো বিষয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:০২
Share: Save:

বাড়িতে বসে খাতায় উত্তর লিখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ক্যান করে উত্তরপত্র পাঠানোর কথা আছে। কিন্তু স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত সিমেস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা-পদ্ধতি নিয়ে বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকের পরেও বেশ কিছু প্রশ্ন ও জট রয়ে গেল বলে মনে করছেন বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষেরা।

কলেজে প্রশ্নপত্র পাঠানো, বিভিন্ন কলেজে উত্তরপত্র পৌঁছে দেওয়া, পরীক্ষায় পড়ুয়াদের হাজিরার হিসেব রাখার মতো বিষয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র স্ক্যান করে ই-মেল বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাবেন বলে যে-সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই বিষয়ে আপত্তি তোলেন বেশ কয়েক জন অধ্যক্ষ। বঙ্কিম সরদার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় পরিষ্কার জানান, কোনও ভাবেই যেন হোয়াটসঅ্যাপে পরীক্ষার্থীর কাছে প্রশ্নপত্র পাঠানো না-হয়। পরীক্ষার্থীরা হোয়াটসঅ্যাপে কলেজে উত্তরপত্র পাঠাচ্ছেন— এটাও যেন না-হয়। সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ প্রবীর দাস জানান, ঘূর্ণিঝড় আমপানের পরে ওই অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবার মান অত্যন্ত খারাপ হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া অনেক পরীক্ষার্থীরই স্মার্টফোন নেই। বাড়ি থেকে সাইবার ক্যাফেও অনেক দূরে। মৌসুনি দ্বীপ, জি প্লট, রাক্ষসখালির মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের বহু ছেলেমেয়ে তাঁর কলেজের পড়ুয়া। উত্তরপত্র জমা দেওয়ার জন্য তাঁদের নদী পেরিয়ে আসতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেটা কী ভাবে সম্ভব, প্রশ্ন তোলেন প্রবীরবাবু। হোয়াটসঅ্যাপে প্রায় ৫০ পৃষ্ঠার উত্তরপত্র পাঠানোর বিষয়ে আপত্তি উঠেছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, উত্তরপত্র কী ভাবে জমা নেওয়া হবে, সেটা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট কলেজ।

বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ জানান, পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে অধ্যক্ষদের কাছে ই-মেলে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। তার পরে কলেজ তাদের ওয়েবসাইটে তা আপলোড করে দিতে পারবে। কিন্তু এই বিষয়েও আপত্তি উঠেছে। তিলকবাবু, চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায় এবং আরও কয়েক জন অধ্যক্ষ জানান, এ ক্ষেত্রে সব কলেজ হয়তো এক সময়ে প্রশ্ন আপলোড করবে না। তাতে সমস্যার সৃষ্টি হবে। বরং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রশ্ন আপলোড করুক। সেখান থেকেই তা ডাউনলোড করে নেবেন পরীক্ষার্থীরা। ছাত্রছাত্রীদের হাজিরার রেকর্ড রাখা জরুরি বলে মনে করছেন অধ্যক্ষেরা। কিন্তু এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কোনও নির্দেশ দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত জানতে চান অধ্যক্ষেরা।

অধ্যক্ষদের অনেকেই প্রস্তাব দেন, বিএ এবং বিএসসি-র ক্ষেত্রে এমসিকিউ বা ‘মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন’ করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়ে দেন, বিএ এবং বিএসসি-র প্রশ্নপত্র আগে থেকেই তৈরি হয়ে আছে। প্রশ্ন ওঠে, বি-কমে চূড়ান্ত সিমেস্টারের কিছুই পড়ানো হয়নি, পরীক্ষা হবে কী করে? কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, এমন কোনও প্রশ্ন করা হবে না, যা পড়ানো হয়নি। বিএসসি-র প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা কবে এবং কী ভাবে নেওয়া হবে, বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ পরে তা জানিয়ে দেবেন।

আগে জানানো হয়েছিল, স্নাতক স্তরে পরীক্ষা হবে ১ থেকে ৮ অক্টোবরের মধ্যে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি ও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, পরীক্ষা প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। তবে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ১ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই বিষয়ে ইউজিসি-র অভিমত নেওয়ার জন্য চিঠি লিখেছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। কবে

পরীক্ষা শুরু হবে, তা ঠিক করা হবে ইউজিসি-র উত্তর আসার পরেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার বি-কম প্রথম সিমেস্টারের ফল বেরোচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE