—ফাইল চিত্র।
বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতির মোকাবিলায় এ বার রাজ্যের পুরোহিত সমাজকে ‘ব্যবহারে’র কৌশল নিল তৃণমূল। সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই এ কাজে নেমেছেন দলীয় নেতৃত্ব।
শুক্রবার রানি রাসমণি রোডে সমাবেশ করে ‘পশ্চিমবঙ্গ সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট’ নামের একটি সংগঠন। পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া থেকে শুরু করে রাজ্যের দিকে দিকে টোল তৈরি, সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা, ব্রাহ্মণদের চাকরিতে বিশেষ সুযোগ দেওয়া-সহ ন’দফা দাবি নিয়ে এ দিন সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেই সমাবেশে যোগ দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দেন, পুরোহিত সমাজের পাশে থাকতেই তিনি উপস্থিত হয়েছেন। তবে বক্তৃতায় রাজীববাবু জানান, পুরোহিতদের ভাতা নিয়ে সরকার ভাবনা চিন্তা করবে। তাঁদের দাবি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেবেন।
লোকসভা ভোটের আগে থেকেই তৃণমূল দাবি করছিল, বিজেপি এ রাজ্যে মেরুকরণের রাজনীতি করছে। বরং তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিশেষ এক সম্প্রদায়ের প্রতি ‘তোষণে’র অভিযোগ তুলেছে বিজেপিও। রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে ‘ইমাম ভাতা’র প্রসঙ্গ। তৃণমূলও বিভিন্ন ভাবে বিজেপির অভিযোগের মোকাবিলার চেষ্টা করেছে। কখনও শ্মশানের পুরোহিতদের ভাতার কথা ঘোষণা করে, কখনও বীরভূমে পুরোহিতদের নিয়ে সম্মেলন করে।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, এ দিন রাজীববাবুর পুরোহিতদের সমাবেশে যোগ দেওয়া এরই ধাপ। রাজীববাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘জেলায় জেলায় আপনারা সংগঠন গড়ুন। আমরা পাশে আছি। যারা রাজনীতির নামে রামকে এজেন্ট বানিয়ে ফেলেছে, তাদের বিশ্বাস করবেন না।’’
জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘হিন্দু ভোট হারাচ্ছে, তা বুঝেই ওরা পুরোহিতদের সভায় যাচ্ছে। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ রাজীববাবুর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াই।’’ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ অবশ্য তৃণমূলের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘‘যাঁরাই হিন্দুদের পাশে দাঁড়াবেন, আমরা তাঁদেরই শুভ কামনা জানাবো। আশা করব এর পর রাজীববাবুরা রাম মন্দির বানানোর ক্ষেত্রেও পাশে থাকবেন।’’
পুরোহিত সংগঠনের সম্পাদক শ্রীধর মিশ্রের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আমাদের কোনও রাজনীতি নেই। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছি। তিনি মায়ের মতো। যাঁরা আমাদের দেখবেন, আমরা তাঁদের পাশে থাকব। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কী করছে আমরা জানি না।’’
সূত্রের খবর , জেলায় জেলায় আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্মীয় প্রচারের মোকাবিলায় এই সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy