Advertisement
১১ মে ২০২৪

পুরবোর্ড ভাঙার নির্দেশ চন্দননগরে

সম্প্রতি পুরসভার এক পদাধিকারীর সঙ্গে সেখানকার এক আমলার গোলমাল চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ওই পদাধিকারী চিঠি দিয়ে আমলাকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি প্রশাসন এবং তৃণমূলের উপরমহলে পৌঁছয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩৫
Share: Save:

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাধিক বার হস্তক্ষেপেও কাজ হয়নি। চন্দননগর পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের খেয়োখেয়ি থামেনি। তাই ওই পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিল দল।

তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরসভার পদাধিকারীদের ঝামেলায় বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই বোর্ড ভাঙার নির্দেশ দেন। পদত্যাগ না-করে চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী যাতে পুরবোর্ডে প্রশাসক বসানোর জন্য পুরমন্ত্রীকে চি‌ঠি পাঠান, সে ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই চিঠি মেয়র পাঠিয়েও দিয়েছেন।

যদিও শুক্রবার এ নিয়ে রামবাবু মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কিছু বলব না। দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ হবে।’’ কোনও মন্তব্য করতে চাননি দলে তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত, পুরসভার চেয়ারম্যান জয়ন্ত দাসও। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনও কোনও চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

৩৩ আসনের এই পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলর রয়েছেন ২২ জন। পুরবোর্ডের মেয়াদ রয়েছে আরও দেড় বছর। শুধুমাত্র দলীয় কাউন্সিলরদের খেয়োখেয়ির জন্য বোর্ড ভেঙে দেওয়ার নজির খুব একটা নেই বলে তৃণমূলের একাংশ জানায়।

পুর-পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চন্দননগরের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। অধিকাংশ রাস্তা বেহাল, নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার হয় না, অনেক পথবাতি জ্বলে না, বেআইনি নির্মাণ— অভিযোগ অনেক। বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুরসভার ভূমিকা। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, রামবাবুর সঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান জয়ন্ত দাস ও তাঁর গোষ্ঠীর গোলমালেই পুর পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। গত অগস্টে দু’পক্ষের গোলমালে পুরসভায় অচলাবস্থা তৈরি হয়। তখনই অরূপকে হুগলিতে দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে কোনও রকমে গোলমাল সামাল দেন। কিন্তু মাসদুয়েক কাটতে না-কাটতেই ফের গোলমাল। মেয়র পদ থেকে রামবাবু এবং কয়েকজন মেয়র-পারিষদের অপসারণের দাবি তোলেন দলেরই কয়েকজন কাউন্সিলর। রামবাবু পদত্যাগ করতে রাজি হলেও সে যাত্রায় দলের রাজ্য নেতৃত্বই তাঁকে বারণ করেন।

কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। সম্প্রতি পুরসভার এক পদাধিকারীর সঙ্গে সেখানকার এক আমলার গোলমাল চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ওই পদাধিকারী চিঠি দিয়ে আমলাকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি প্রশাসন এবং তৃণমূলের উপরমহলে পৌঁছয়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, দিন তিনেক আগে অরূপ কাউন্সিলরদের কলকাতায় ডাকেন। সেখানে ওই পদাধিকারীকে ভর্ৎসনা করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি জানান, গোলমাল মেটাতে তিনি অপারগ। বিষয়টি বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর পরেই বোর্ড ভাঙার নির্দেশ আসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE