উপহার: সেই গানের খাতার প্রথম পাতার প্রতিকৃতি। নিজস্ব চিত্র
গত শতকে ১৯২০-র দশকের কথা! দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের দিনে মান্দালয় জেলে কারারুদ্ধ ভারতের বীর বাঙালি নেতার গানের খাতায় প্রথম গানটিই ছিল ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’! নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সেই গানের খাতা আজও যত্নে রাখা।
১৯৭১-এ বাঙালির আর এক মুক্তিযুদ্ধ বিজয়ের নায়ক শেখ মুজিবর রহমানের হাতে নেতাজির গানের খাতার পাতার এই ছবিই পরে তুলে দেওয়া হয়। আজ, শনিবার নেতাজি ভবনে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেও সেই উপহারই তুলে দেওয়া হবে।
নিছক উপহার নয়! এই গানের খাতার পাতাটি, বাঙালি মননের ইতিহাসের স্রোতধারারও স্মারক! বঙ্গবন্ধুর হাতে নেতাজির পরিবারের এই উপহার ১৯৭২ সালে তুলে দেওয়া হয় কলকাতার রাজভবনে। তার সাক্ষী নেতাজির বাড়ির বৌমা, বর্তমানে অশীতিপর কৃষ্ণা বসু। তিনি বলছিলেন, ‘‘ততদিনে গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বলে চিহ্নিত। আমরাও অভিভূত, একই গান কত প্রিয় ছিল নেতাজির।’’ শিক্ষাবিদ-প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা, তাঁর পুত্র সাংসদ-শিক্ষাবিদ সুগত বসু মিলে ঠিক করেছেন, এলগিন রোডের বাড়ির বিশিষ্ট অতিথিকে কী দেওয়া যায়। ভাল ডিজিটাল ছবি তুলে নেতাজির গানের খাতার পাতাটির সিল্কের উপরে ছাপ তোলা হয়েছে।
নেতাজি ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ভুবনে খুব দুরত্ব ছিল না, তাও সুবিদিত। নেতাজির ভাইপো শিশিরকুমার বসুকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যুবা বয়সে কলকাতায় ছাত্রদশায় কী ভাবে নেতাজির ডাকে হলওয়েল মনুমেন্ট বিরোধী আন্দোলনেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। প্রয়াত শিশিরবাবুর স্ত্রী পুত্র কৃষ্ণা-সুগতের মনে বিশেষ দিনে নানা স্মৃতি ভিড় করছে।
আর একটি দুর্লভ মুহূর্তেরও সাক্ষী হবে শনিবারের নেতাজি ভবন। শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজবে ১৯৭২ সালে নেতাজির জন্মদিনে প্রচারিত, তাঁকে নিবেদিত বঙ্গবন্ধুর বার্তা। অল্প কথায় নেতাজির ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধু।
কৃষ্ণার মনে পড়ছে, মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোয় এলগিন রোডের বাড়িটিও ফের হয়ে উঠেছিল ইতিহাসের রঙ্গভূমি। এই বাড়ি থেকে নানা কাজ ছাড়াও যশোহরে নেতাজি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে তোলেন চিকিৎসক শিশিরবাবু। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা চলত। করাচির জেল থেকে মুক্ত বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশে ফিরতেই তাঁর সঙ্গে ঢাকায় দেখা করেন শিশির। বঙ্গবন্ধুকন্যার আসন্ন উপস্থিতি সে-সব স্মৃতিও উসকে দিচ্ছে।
কৃষ্ণা বলছিলেন, হাসিনার বোন রেহানা আগে এসেছেন। ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে সংগ্রহশালা হওয়ার আগে নেতাজি ভবনে ঘুরে যান। এই প্রথম আসছেন হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যার উপস্থিতি নেতাজি ভবনে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy