Advertisement
০২ মে ২০২৪

তৃণমূলের স্বীকৃতি বাতিলের দাবিতে কমিশনে বিজেপি

তৃণমূলের বিরুদ্ধে ২০১৩-’১৪ আর্থিক বর্ষে দলের আয়-ব্যয়ের হিসেব সংক্রান্ত ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তাদের দলের স্বীকৃতি বাতিল করে দিতে হবে। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে এমনই দাবি জানাল রাজ্য বিজেপি। ভুল তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিভ্রান্ত করার জন্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিও জানিয়েছে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৮
Share: Save:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে ২০১৩-’১৪ আর্থিক বর্ষে দলের আয়-ব্যয়ের হিসেব সংক্রান্ত ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তাদের দলের স্বীকৃতি বাতিল করে দিতে হবে। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে এমনই দাবি জানাল রাজ্য বিজেপি। ভুল তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিভ্রান্ত করার জন্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিও জানিয়েছে তারা।

বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অসীম সরকারের নেতৃত্বে চার জন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ দিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে লিখিত ভাবে ওই দাবিগুলি জানিয়ে এসেছেন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্ত পরে বলেন, “বিজেপির অভিযোগ পেয়েছি। সেটি দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ, নির্বাচনী হিসাবের ব্যাপারটি দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন দেখে।”

গত বছর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের তহবিল এবং খরচ সংক্রান্ত যে নথি নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হয়েছে, তাতে সই করেছিলেন মুকুলবাবু। সেই নথিতে বলা হয়েছে, ত্রিনেত্র কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা পাওয়া গিয়েছিল এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের হরিশ মুখার্জি রোড শাখার মাধ্যমে। কিন্তু বিজেপির দাবি, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ওই শাখায় ওই সংস্থার কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। ফলে কী করে ওই টাকা তৃণমূলের তহবিলে গেল, তা খতিয়ে দেখতে হবে।

তা ছাড়া, ওই সংস্থা যে পর্বে তৃণমূলকে অত মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান দিয়েছে, সে সময় তাদের আয় হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা। এত কম আয়ের সংস্থা তৃণমূলের নির্বাচনী তহবিলে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা অনুদান দিল কী ভাবে, কমিশনের কাছে সেই প্রশ্নই তুলেছে বিজেপি। অন্তত তিন বছরের পুরনো সংস্থা না হলে রাজনৈতিক দলকে অনুদান দেওয়াও যায় না। বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূলকে টাকা দেওয়ার সময় ওই সংস্থার তিন বছর বয়স হয়নি। তৃণমূলের তহবিলে এই গরমিলের অভিযোগ নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। এ দিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে ওই সব অভিযোগই সবিস্তার জানিয়ে সেগুলি সত্য প্রমাণিত হলে তৃণমূলের স্বীকৃতি বাতিলের দাবি করেছেন অসীমবাবু, শিশির বাজোরিয়া, প্রভাকর তিওয়ারি-সহ বিজেপি-র প্রতিনিধিরা।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ত্রিনেত্র সংস্থার দফতর ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান স্ট্রিটে। তবে বিজেপির অভিযোগ সম্পর্কে তাদের বক্তব্য এখনও জানা যায়নি। মুকুলবাবু অবশ্য বলেছেন, “বিজেপি নির্বাচন কমিশনে গিয়েছে। কমিশন দলের কাছে কিছু জানতে চাইলে নিশ্চয়ই তথ্য দেওয়া হবে।”

বিজেপির প্রতিনিধিরা এ দিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে উপনির্বাচন নিয়েও বেশ কিছু দাবিদাওয়া জানিয়ে এসেছেন। তাঁদের দাবি, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে রাজ্য পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। প্রত্যেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ক্যামেরা রাখতে হবে। পরে বিজেপি নেতা অসীমবাবু বলেন, “বসিরহাট এবং চৌরঙ্গি উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কাজে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট হতে পারিনি। বসিরহাটে সব অতিথিশালা থেকে বহিরাগতদের বার করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বাস্তবে কিন্তু তারা ওই অতিথিশালাগুলিতে থেকেই গিয়েছিল।

এ বার যেন আর ওই অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে দাবি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে জানিয়েছি আমরা।” ভোটের সাত দিন আগে সীমান্ত সিল করার দাবিও কমিশনকে জানিয়েছেন অসীমবাবুরা। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, যত বেশি সম্ভব কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়ার চেষ্টা তাঁরা করবেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী না পাওয়া গেলে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাহিনী মিলিয়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে ভোট করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE