নীনা গুপ্ত
প্র: কাজের মধ্যে ফিরে আসার অনুভূতিটা নিশ্চয়ই খুব আলাদা?
উ: কাজই আমার সব। অভিনয়ের মধ্য দিয়ে জীবনে অনেক কিছু শিখেছি। যত দিন অভিনয় করব, নিজেকে আরও জানতে পারব। ‘বধাই হো’তে আমার চরিত্রকে ঘিরেই সবটা। বেশি বয়সে মা-বাবা হওয়ার গল্প এটা। খুব এনজয় করছি এখন। অক্টোবরে একটা ফ্যামিলি ফাংশনের জন্য স্বামীর সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমি ওঁকে বলে দিলাম যে, যাব না। আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে, সকলের ফিডব্যাক নিজের কানে শুনতে চাই।
প্র: ‘বধাই হো’র বিষয়বস্তু নিয়ে অনেকের ট্যাবু থাকতে পারে। সম্মতি দেওয়ার আগে চিন্তাভাবনা করেছিলেন?
উ: ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি একটা ফান্ডা মেনে চলি। সেটা হল ছবির বিষয় আর চরিত্রের অভিনবত্ব। ‘বধাই হো’ শোনার পর আমি পরিচালককে প্রথম প্রশ্নটা করেছিলাম, কবে শুটিং শুরু হবে। অনেক সময় আমরা টাকার জন্য ছবিতে সই করে থাকি। আবার কখনও কখনও ইমেজ বদলানোর চেষ্টাও করে থাকি। কিন্তু তাতে লাভ হয় না কোনও। এই মুহূর্তে টাকার ভূমিকা অতটা বড় নয়। স্বামী ভাল রোজগার করেন। আমি অভিনয় করছি নিজে ভাল থাকার জন্য।
প্র: টাকার জন্য কাজ করেছেন?
উ: একাধিক বার। একা মাসাবাকে মানুষ করেছি। যতটা পেরেছি ওকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তার জন্য টাকার দরকার হয়েছে। এমন ছবিতেও কাজ করেছি, যেটা করার পরে ঈশ্বরের কাছে প্রাথর্না করেছি, যেন ছবিটা মুক্তি না পায়। এক বার শাবানা আজ়মির সঙ্গে একটা কাজ করেছিলাম যেখানে উনি ছিলেন মুখ্য ভূমিকায়, আর আমি কাজের লোকের চরিত্রে। শুটিংয়ের ফাঁকে আমাকে শাবানা ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এই ধরনের চরিত্র কেন করছি? সে দিন আরও বেশি করে ঈশ্বরকে ডেকে মনেপ্রাণে চেয়েছিলাম যেন ফিল্মটা রিলিজ় না হয়। সেটাই হয়েছিল।
প্র: শিল্পী হিসেবে খেদ আছে?
উ: অনেক। পর্দার ইমেজের বাইরে আমার একটা ইমেজ আছে, যেটা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। আমাকে তো শুধু নেগেটিভ রোল দেওয়া হতো। আর তখন ভাল রোল বলতে পর্দায় নায়িকাদের বেচারি সাজানো! ওই ধরনের কোনও রোল আমি পেতাম না। আমার দৌড় ছিল শ্যাম বেনেগল পর্যন্ত। অন্য সব জায়গায় স্মিতা পাটিল, দীপ্তি নাভাল আর শাবানা আজ়মিদের রাজত্ব ছিল। ছবিতে সে রকম মনে রাখার মতো কোনও চরিত্র পাইনি। তবে হ্যাঁ, টেলিভিশনে সব সাধ মিটিয়ে নিয়েছি।
প্র: ‘সাঁস’-এর মতো আলোড়ন সৃষ্টিকারী শো আবার বানাবেন?
উ: একটা জবরদস্ত চিত্রনাট্য রেডি আছে। কিন্তু কেউ সুযোগ দিচ্ছে না। আশা করছি, আমার মৃত্যুর আগে চলে আসবে সেই সুযোগ (হাসি)। রিয়্যালিস্টিক ড্রামা আমাদের টেলিভিশনে খুব কম হয়। নাগ-নাগিন বা সাস-বহু শোয়ের বিপক্ষে নই, কিন্তু মনে করি সব ধরনের দর্শকের জন্যই শো হোক।
প্র: মাসাবা কোনও দিন অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন?
উ: ওর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ওকে বুঝিয়েছিলাম যে, ওর মুখের আদল অন্য রকম। যদি একান্তই অভিনয় করতে চায় তা হলে যেন বিদেশে গিয়ে অভিনয় শেখে আর ওখানেই কেরিয়ারের চেষ্টা করে। এখানে ছবিতে অভিনয় করলে একটা-দুটো করার পরেই ওকে অনেক লড়াই করতে হতো। আমার কথা ও সঠিক সময়ে বুঝতে পেরেছিল। ফ্যাশন ডিজ়াইনার হিসেবে খুব ভাল কাজ করছে ও। ওর সব ডিজ়াইনের ফার্স্ট মডেল কিন্তু আমিই!
প্র: মাসাবা আর মধু মন্টেনার বিবাহ বিচ্ছেদের সময়ে মা হিসেবে কেমন ভাবে সামাল দিলেন?
উ: খুব ডিস্টার্বড ছিলাম। এখন তো বাচ্চারা মা-বাবার কথা শোনেই না। মাসাবাকে যা বলার আমি বলেছিলাম। ও বলেছিল, আমাদের একা ছেড়ে দাও। খুব অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। পরে নিজেকে বুঝিয়েছি।
প্র: নিজের জীবন নিয়ে এত খোলাখুলি কথা বলেন... আত্মজীবনী লিখবেন কখনও?
উ: প্রথমে খুব উৎসাহী ছিলাম। প্রকাশকের সঙ্গে কথাও বলেছিলাম। কিন্তু আমার জীবনের সঙ্গে অন্য মানুষরাও জড়িয়ে আছেন। তাঁদের দুঃখ দিয়ে কিছু লিখতে চাই না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy