Advertisement
১১ মে ২০২৪

শোর বাজার থেকে চোর বাজার

টাইপরাইটারগুলো বড়া রাজন অর্থাত্‌ রাজন নায়ারের মাধ্যমে চোর বাজারে এসে পৌঁছত। যেহেতু চোরাইমাল আসে তাই কি এই বাজারটির নাম চোর বাজার? কিন্তু ইতিহাস তো তা বলছে না। ইংরেজ আমলের এই চোর বাজারের অস্তিত্ব দেড়শো বছরের বেশি। শুরুতে নাম ছিল শোর বাজার, কারণ এই বাজারে হই-হট্টগোল হত খুব বেশি। ব্রিটিশরা বাজারের নাম ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। ক্রমে অপভ্রংশ হয়ে শোর বাজার চোর বাজারে পরিণত হয়। লিখছেন পৌলমী সরকার।টাইপরাইটারগুলো বড়া রাজন অর্থাত্‌ রাজন নায়ারের মাধ্যমে চোর বাজারে এসে পৌঁছত। যেহেতু চোরাইমাল আসে তাই কি এই বাজারটির নাম চোর বাজার? কিন্তু ইতিহাস তো তা বলছে না। ইংরেজ আমলের এই চোর বাজারের অস্তিত্ব দেড়শো বছরের বেশি। শুরুতে নাম ছিল শোর বাজার, কারণ এই বাজারে হই-হট্টগোল হত খুব বেশি। ব্রিটিশরা বাজারের নাম ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। ক্রমে অপভ্রংশ হয়ে শোর বাজার চোর বাজারে পরিণত হয়। লিখছেন পৌলমী সরকার।

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

ইংরেজরা যখন মুম্বইয়ের সাতটা দ্বীপকে কজওয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত করল তখন ডোঙ্গরি অঞ্চলে নতুন জীবন ফিরে এল। ডোঙ্গরি হল দক্ষিণ মুম্বইয়ে মাফিয়াদের মিলনস্থল। এই ডোঙ্গরির পশ্চিম দিকে পড়ে চোরবাজার ক্যাফে প্যারাডাইসের মুখোমুখী, মাটন স্ট্রিটের উপর।

মুম্বইয়ের তামিল মাফিয়া বরদারাজন মুদলিয়র। ডকের মালপত্র স্মাগল করা তার কাজ ছিল। এক দিন ধারাভির অপরাধ জগতের জঙ্গল থেকে পুলিশ তাকে আজাদ ময়দান থানার লক-আপে ভরে দিল। মুম্বইয়ের আর এক তামিল মাফিয়া হাজি মস্তান তখন মুম্বইয়ের বাদশা হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রয়োজন তখন তার বড়দার মতো একজন শক্ত পেশির মানুষ। হাজি মস্তান দেখা করতে এলেন বড়দার সঙ্গে আজাদ ময়দানের থানায়, ঠোঁটে ৫৫৫ সিগারেট ঝুলিয়ে। কাছে এসে অভিবাদন করলেন আচার আচরণে আপাদমস্তক এক অভিজাত সাদা স্যুট প্যান্ট পরিহিত তামিল, তথাকথিত মুম্বই স্মাগলার আর এক তামিল ধুতি চপ্পল পরিহিত স্মাগলারকে, ‘ভনাক্কম থালাইভার’ বলে। থালাইভারের অর্থ হল প্রধান। বরদা প্রথম কারও কাছে এ ধরনের অভিবাদন পেলেন। কথা শুরু হল দুজনের। কথার মাঝখানে হাজি মস্তান জানিয়ে দিলেন তিনি কোনও চোরবাজারে বিক্রি করতে আসা ছোটখাটো স্মাগলার নন। তার ব্যবসা হল সোনার বিস্কুটের। তাই তিনি বড়দাকে বললেন চোরবাজারের ব্যবসা ছেড়ে তার সঙ্গে যোগ দিতে। বড়দা এতে সম্মত হলেন। পুলিশের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে বড়দাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল হাজি মস্তান।

তিন চারটে গলি নিয়ে চোরবাজার। সকাল বেলা মাটন স্ট্রিটের কাছে চোরবাজারের দোকানগুলো খুলে গেছে। সকালের নরম রোদ্দুরে দোকানের পসরাগুলো একটু বেরিয়ে এসে রাস্তার উপর যেন উপচে পড়ছে। বোধহয় শনি, রবিবার সব বড় বড় শেঠরা বাজারে শখের জিনিস কিনতে আসেন বলে। একটা গলিতে শুধু পুরনো গাড়ির বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশের দোকান। ১৯২৬ সালের রোলস রয়েসের হর্ন যেমন রয়েছে, তেমনই বেন্টলের পুরনো হুইলও রাখা রয়েছে। যে সব যন্ত্রে সালটা পরিষ্কার নয় সেগুলো কী করে চেনা যাবে? একজন দোকানি বললেন মেকানিকরা ঠিকই চিনে বার করে নিয়ে যান। মুম্বইতে ভিনটেজ গাড়ি পালন পোষণ করার মতো প্রচুর ধনী রয়েছেন। একটা খুব পুরনো গাড়ির বিরল কলকব্জা যদি কেউ দিতে পারে তবে দোকানির কথায় ‘মুহ মাঙ্গা রকম’ পাওয়া যায়। এই ‘রকম’ ধরা যেতে পারে একটা যন্ত্রাংশ পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। পর পর দোকানগুলোয় বাইরের দিকে জং পড়া ধুলো মাখা গাড়ির দরজাগুলো টাঙিয়ে রাখা রয়েছে।

একটা দোকানে একটা টাইপরাইটার দেখে থমকে যেতে হল। টাইপরাইটারটির গায়ে সাদা রং করা। দোকানিকে জিজ্ঞাসা করা হল কোথা থেকে এই টাইপরাইটারটি সংগ্রহ করা হয়েছে। দোকানি বলল, এগুলি লোকেরা এসে দিয়ে যায়।

সত্তরের দশকে বড়া রাজন টাইপরাইটার চুরিতে হাত পাকানোর আগে ছিল দর্জি। থানের হিন্দুস্থান অ্যাপারেলের রেডিমেড জামাকাপড়ের কারখানায় কাজ করত সে। দিনের শেষে ত্রিশ-চল্লিশ টাকার বেশি রোজগার হত না। বড়া রাজনের এক বান্ধবী ছিল। তাকে নানা রকম উপহার দেওয়া পছন্দ করত বড়া রাজন। কিন্তু দর্জিগিরির স্বল্প টাকায় তার পক্ষে চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। অথচ বান্ধবীর কাছে নিজের মুখও রাখতে হবে। বড়া রাজন দর্জিগিরি ছাড়াও নানা ধরনের আরও কাজ নিল। কোথাও কোনও হোটেলে বয়ের কাজ অথবা কোনও অফিসে পিওনের কাজ। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অভাব থেকেই যাচ্ছিল। এ দিকে বান্ধবীর জন্মদিন এগিয়ে আসছিল। নিরাশ বড়া রাজন একদিন অফিসে সব থেকে দামি জিনিস, টাইপরাইটারটা চোখের সামনে দেখতে পেয়ে সেটাকেই বস্তার মধ্যে ভরল। তার পর মাটন স্ট্রিটের চোরবাজারে এসে দুশো টাকায় বিক্রি করে দিল। সত্তরের দশকে দুশো টাকা অনেক টাকা। বড়া রাজনের লোভ বেড়ে গেল।

বড়া রাজন দেখল যত দামি টাইপরাইটার চুরি করতে পারবে বিক্রিতে তত বেশি দাম পাওয়া যাবে। বড়া রাজন অফিস থেকে টাইপরাইটার ওঠাতে শুরু করল। অন্য দিকে পুলিশ অন্য কোনও উদ্দেশ্যে চোরবাজারে এসে খবর পায় দক্ষিণ ভারতীয় একজন এসে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে টাইপরাইটার বিক্রি করে যায়। পুলিশ এ বারে চোরবাজারে তক্কে তক্কে ছিল। অবশেষে বড়া রাজন ধরা পড়ল। তার বিরুদ্ধে কেস তৈরি হল ভৈবড়া থানায়।

চোরবাজারে যে চোরাই মাল আসে না তা নয়। দোকানিরা স্বীকার করতে চায় না। চোরাই মালের বাজারটা বসে প্রত্যেক দিন ভোর পাঁচটায় রাস্তার উপর। সকাল আটটার মধ্যে সব কিছু ফাঁকা হয়ে যায়। এই সময়ে এখানে ব্র্যান্ডেড ঘড়ি থেকে জামা জুতো সব পাওয়া যায়। ডকের থেকে চোরাকারবারি সোজা চোরবাজারে নিয়ে আসে। চল্লিশ টাকায় ভালো টি-শার্ট থেকে পুরো হাতা শার্টও পাওয়া যায়। নামকরা কোম্পানির ঘড়িও পঞ্চাশ একশো টাকায় পাওয়া যায়। মাঝরাতে আসে এ সব মাল। ভোরের দিকে সুযোগসন্ধানীরা কিনে নেন।

তবে চোরবাজারের আসল বাজার অর্থাত্‌ যার জন্য এর জগত্‌ জোড়া খ্যাতি তা হল, পুরনো জিনিস অর্থাত্‌ অ্যান্টিকের দোকান। পুরনো গাড়ির নানা রকম যন্ত্রাংশের কথা আগেই বলেছি। আসবাব বাসনপত্র অর্থাত্‌ চিনামাটির ডিনার সেট, তা চৈনিকও হতে পারে আবার ইউরোপীয়ও হতে পারে অথবা ভারতের খুব প্রাচীন জিনিসও হতে পারেসবই পাওয়া যায় এখানে। ঘর সাজানোর কাঁচের জিনিস থেকে, পেতলের জিনিস, কাঁসার জিনিস, কাঠের আসবাব, এক ইঞ্চি মাপের আতরদানি, কারুকার্যখচিত ইউরোপের কাচের ছোট মদের বোতল পাওয়া যায় এখানে। একটা গলিতে নানা রকম বাদ্যযন্ত্রের সরঞ্জাম। পুরনো গিটারগুলোকে রাস্তার উপর ধুলো ঝেড়ে পরিষ্কার করার কাজ চলছে। এক জায়গায় অনেকগুলো বিউগল দেখা গেল। তবে বেশির ভাগই পশ্চিমী বাজনা চোখে পড়ল। মুম্বই শহরটাতে কেন জানি না একটু পুরনো জিনিসের খোঁজ করলেই ঔপনিবেশিক ছবিটাই বেশি ফুটে ওঠে। সে সময়কার দেশি সংস্কৃতির কিছুই চোখে পড়ে না। লোকমুখে প্রচলিত আছে একটি গাথা রানি ভিক্টোরিয়া এক বার বম্বেতে আসছিলেন। ডকের কাছে এসে দেখা যায় রানির সঙ্গে আসা বেহালা সমেত আরও বাদ্যযন্ত্র চুরি গেছে। সেই বাদ্যযন্ত্রগুলো পরে পাওয়া যায় চোরবাজারে।

ঘুরতে ঘুরতে এক আসবাবের দোকানে দেখা হয়ে গেল মুর্শিদাবাদের ওমরের সঙ্গে। দোকানের মালিক ওমরের ভরসায় দোকান খোলা রেখে বাজারের লাগোয়া মসজিদে নমাজের জন্য গিয়েছেন। ওমর কী ভাবে এই কাজে এলেন? ওমর বললেন, কলকাতায় এক কাঠের আসবাবের দোকানে পালিশের কাজ করতেন। সেখান থেকে মুম্বই ঘুরতে আসা। আর ফিরে যাওয়া হয়নি। দোকানেরই উপরতলায় স্ত্রী-পুত্র নিয়ে থাকেন ওমর। মাসে মাইনে পনেরো হাজার টাকা। ওমর আর ফিরে যায়নি পুরনো পেশায়। ওমরের দোকানে ছিল চিনামাটির সুন্দর সুন্দর ঘর সাজানোর জিনিস। ওমরকে জিজ্ঞাসা করা হল এ সব জিনিস কি ভাবে সংগ্রহ করা হয়। ও বলল, ‘অনেক সময় পুরনো শিশি বোতল বিক্রি করতে আসা লোকেদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। আবার অনেক সময় কোনও পার্সি জিনিসপত্র বিক্রি করে বিদেশে যাচ্ছে তখন তার আসবাবগুলো এজেন্টের মাধ্যমে চোর বাজারে চলে আসে।

নাসির একজন কাশ্মীরি। নাসিরের চোরবাজারের কাছে পুরনো কার্পেটের দোকান আছে। কিন্তু নাসিরের কাছে সারা ভারতের বড় বড় শহরগুলো থেকে খবর আসতে থাকে অ্যান্টিক আসবাবপত্রের। নাসিরের কথায় সারা ভারত থেকে এই সব অ্যান্টিক আসবাব আসে এই চোরবাজারে। ওমরের দোকানে অনেকগুলো একই ধরনের ঝাড়বাতি ঝোলানো দেখে মনে প্রশ্ন উঠল। এতগুলো ঝাড়বাতি এক সঙ্গে অ্যান্টিক হতে পারে না। ওমর বলল ‘আমাদের কাছে একটা অ্যান্টিক জিনিস এলে আমরা কারখানায় দিয়ে খান কতক সেগুলোর নকল বানিয়ে নিই।’ একই ভাবে কাঠের কোনও পুরনো আসবাব একটা দেখে নতুন অনেকগুলো বানিয়ে নেওয়া হয়। কয়েকটা দোকানে সামনেই দেখা গেল কোথাও কেদারা বানানো হচ্ছে, আবার কোথাও ছোট টুল তৈরি হচ্ছে। এ রকম অনেক পিতল ও কাঁসার নতুন মূর্তিকে পুরনো চেহারা দিয়ে নকল তৈরি করা হয়। কাঁসা ও পিতলের মধ্যে আবহাওয়া থেকে বিক্রিয়া হয়ে যে সবুজ রং দেখা যায় তা নতুন নকল মূর্তিগুলোর মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় যাতে পুরনো লাগে।

ওমর বললেন যে জিনিসগুলো সত্যিই পুরনো এবং সে অর্থে দামি সেগুলো কাচের আলমারির মধ্যে তালা বন্ধ করে রাখা থাকে। সেই জিনিসগুলো দেখেই নকল জিনিস বানিয়ে নেওয়া হয়। একটা দোকানে এক জোড়া চিনামাটির ভাস দেখা গেল। যেগুলোর উচ্চতা আট ফুট। দোকানিকে জিজ্ঞাসা করা হল, কত পুরনো ভাস এ-দুটি? দোকানি বললেন এ দুটি ছবি দেখে বানিয়ে নেওয়া হয়েছে। এটা চিন থেকে আসেনি। তবে মিং রাজত্ব কালের চিনা শৈলির চেহারা দেওয়া হয়েছে।

এখানে প্রতি শুক্রবারে বাজার লাগে। একে বলে জুম্মা বাজার। এই দিন দোকান সব বন্ধ থাকে। তাই দোকান বসে রাস্তার উপর খোলা মাটিতে। দরাদরি করে কিনতে হয় এই বাজারে। অবশ্য চোর বাজারে যে কোনও জিনিস কিনতে গেলেই দরাদরি করতেই হয়।

বছর চল্লিশের সারা হাসান ভোরার বাড়ি চোর বাজারের উপর। সারা বললেন, একানেই তার জন্ম। ছোটবেলার থেকেই দেখে আসছেন এই সব পুরনো জিনিসের দোকান। তিনি জানালেন, শুধু ভারত কেন আরব, ইজরায়েল, সিরিয়া থেকেও মাল আসে চোর বাজারে। এমনকী খরিদ্দারও আসেন এই সব দেশগুলো থেকে মুম্বইয়ের এই চোর বাজারে। কিছুদিন আগে বাজারে একটা বিশাল ব্ল্যাক মেটালের হাতি এসেছিল। এখন তা বিক্রি হয়ে গেছে। দুটো মর্মরের সিংহ আর সিংহী এসেছিল এই বাজারে, যার একটার মানে দিন এবং আর একটার মানে রাত। অনেকেই তা দেখতে এসেছিল।

বহু বলিউড ছবির শ্যুটিং হয়েছে এই চোর বাজারে। অনেক সময় এখান থেকে সিনেমার জন্য আসবাবপত্র ভাড়া দেওয়া হয়। সারা বললেন ‘ব্ল্যাক’ ছবির শ্যুটিং-এর সময় সোনাম কপূর এসেছিলেন পুরনো আসবাবপত্র পছন্দের জন্য। তখন সোনাম কপূর ছিলেন ছবির সহকারি নির্দেশক। এ ছাড়া বহু চিত্রতারকাদের দেখা যায়। সারা বললেন তিনি ইমরান হাসমি, বিদ্যা বালন, নাফিসা আলিকে দেখেছেন।

চোর বাজার সংলগ্ন ভেন্ডি বাজার এলাকাকে নতুন ভাবে সাজানোর জন্য সইফি বুরহানি আপলিফ্টমেন্ট ট্রাস্ট (এসবিইউটি) দু’হাজার কোটি টাকার এক কাজে হাত দিতে চলেছে। ঢেলে সাজা হবে উত্তরের মৌলানা সৌকত আলি রোড থেকে দক্ষিণে বল্লভভাই প্যাটেল রোড এবং ইব্রাহিম রহমতউল্লা রোড থেকে পশ্চিমে মটন স্ট্রিট পর্যন্ত বলে জানালেন সারা। এই মহা কর্মকাণ্ডের আওতায় চোর বাজার এসে পড়ছে। এসবিইউটি-র মানচিত্রে মটন স্ট্রিটের নাম উল্লেখ করা না থাকলেও চোর বাজারের দোকানগুলো পরিকল্পনার ছকে নেই। তাই চোর বাজারের দোকানদাররা এখন নিজেদের যারপরনাই বিপন্ন বলে মনে করছেন।

এসবিইউটি প্রত্যেক পরিবারকে তিনশো পঞ্চাশ বর্গ ফুট এলাকা দেবে। পুরো অঞ্চলটায় তিন হাজার দুশোটি বাড়ি রয়েছে আর দোকান রয়েছে বারোশোটি। এর মধ্যে প্রায় দু’হাজার পাঁচশোটি পরিবার একশো পঁচিশ বর্গফুটের মধ্যে থাকে। কিন্তু চোর বাজারের দোকানদারদের কী হবে সেটা পরিষ্কার নয়। চোর বাজারের দোকানদারদের বলা হচ্ছে কোলাবায় হোটেল তাজের পিছনে যে অ্যান্টিকের দোকান রয়েছে সেখান উঠে যেতে।

চোরবাজারের মিনি মার্কেটের কাছে একটা দোকানের নাম করাচি গিফ্ট শপ। দোকানটি পুরনো আসবাবপত্রের। পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক কালের তিক্ত সম্পর্কের লেখা ভুলিয়ে দিয়ে দোকানটি দেশ ভাগের যন্ত্রণার কথাই বেশি করে মনে করিয়ে দিল। মুম্বইয়ে এমনই বহু বাস্তুহারা আছেন যারা দেশ বিভাগের সময় করাচি থেকে জাহাজে সোজা মুম্বই নগরীতে পাড়ি দিয়েছিলেন। করাচি গিফ্ট শপটিও তেমনই বোধহয় দেশ ছেড়ে আসার পুরনো যন্ত্রণার শেষ রেশটুকু বহন করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mumbai chor bazar poulumi sarkar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE