হিমালয়ের বুকে এমন অনেক ঠিকানা আজও রয়েছে যেখানে মানুষের ভিড় কম, যেখানে প্রকৃতি আত্মমগ্ন হয়ে সৌন্দর্যের আঁকিবুকি কাটে প্রত্যহ। এমনই এক গন্তব্য, ধাকুরি পাস। উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন হিমালয়ের বাঘেশ্বর জেলায় এই পাস।
ধাকুরি পাসে যেতে হলে কাঠগোদাম অথবা হলদোয়ানি স্টেশন থেকে বাঘেশ্বর পৌঁছতে হবে। গোমতী আর সরযূ নদীর সঙ্গমস্থল বাঘেশ্বর ‘বাঘনাথ শিব’-এর কারণে বিখ্যাত। শিবের মন্দির ছাড়াও রয়েছে চণ্ডিকা মন্দির, শ্রীহারুর মন্দির, গৌরী উদিয়ার গুহামন্দির। এখান থেকে বাস অথবা জিপে করে যেতে হয় কাপকোট পেরিয়ে সঙ-এ। সেখানে মিলবে ক্ষীণকায়া রেবতী গঙ্গার দর্শন। এর পর হাঁটা পথে বা জিপে লোহারখেত গ্রাম। পাহাড়ের কোলে রং-বেরঙের সুদৃশ্য বাড়ি, বাড়ি লাগোয়া অজস্র ফুলের বাগান আর চাষজমি নিয়েই লোহারখেত। গ্রামের মানুষেরা লোহার মতো পাথুরে মাঠিতে ফসল ফলানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা করে চলেন। আপার লোহারখেত থেকে শুরু হয় ট্রেকিং পথ। বুগিয়াল পার করে, অতঃপর কঠিন চড়াইয়ের
১১ কিলোমিটার পথ পৌঁছবে ধাকুরি খালে, যাকে ধাকুরি টপও বলা হয়। এখান থেকে এবড়োখেবড়ো পাথর বসানো পথে এক কিলোমিটার নীচে নামলে ধাকুরি গঞ্জ। সবুজ ঘাসে মোড়া এই গঞ্জ একটি মাঠের মতো। এক প্রান্তে রডোডেনড্রন, ফার, জুনিপার আর পাইন গাছের সমারোহ। অন্য প্রান্তে রয়েছে পিডব্লিউডি বাংলো ও কেএমভিএন কটেজ। এর পরে শানবাঁধানো বসার জায়গা, তার পর শুধুই গভীর গিরিখাত আর শ্যামলবর্ণা পর্বতরাজির আনমনে ওঠা নামা। কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে বালিজুড়ি, নন্দা খাট, চাঙ্গুজ, পাওয়ালিধর, নন্দাকোট, মাইকতলি প্রভৃতি বিখ্যাত শৃঙ্গগুলি।