Advertisement
E-Paper

সান্তা ক্লজ়ের বাড়িতে

বছরশেষে বাড়ি বাড়ি সান্তার আবির্ভাব হলেও, সান্তার আসল বাড়ি কিন্তু বরফমোড়া ফিনল্যান্ডেফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি থেকে ফিনিস ডাবল ডেকার ট্রেন সান্তাক্লজ় এক্সপ্রেসে চেপে পাড়ি দিয়েছিলাম সান্তার ঘোষিত বাড়ি ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে।

পিয়ালী মিত্র 

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০৯
বরফাবৃত: ল্যাপল্যান্ডে আনন্দের মরসুম

বরফাবৃত: ল্যাপল্যান্ডে আনন্দের মরসুম

ছোটবেলায় মিশনারি স্কুলে পড়ার দৌলতে সান্তা ক্লজ়ের কথা জানতে পেরেছিলাম। তিনি নাকি ২৪ ডিসেম্বরের রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছোটদের উপহার দিয়ে আসেন। চিমনির ভিতর দিয়েও ঢুকতে পারেন। চড়েন রেনডিয়ারে টানা স্লেজগাড়িতে। পিঠের মস্ত ঝোলায় থাকে নানা উপহার। তার লাল টুকটুকে জামা, টুপি পরিহিত সাদা ধবধবে দাড়িগোঁফে ভরা হাসিখুশি মুখটা দেখলে বড় ভাল লাগত। আমরা যারা পৃথিবীতে এখন একটু পুরনো হয়েছি, সেই আমাদের বাবা-মায়েরাও তাঁর দূত হয়ে ওই নির্দিষ্ট দিনে আমাদের অজান্তে কোনও উপহার রাখতেন না। চলও ছিল না তেমন। তাই সান্তার ঝোলার রহস্য জানতে পারিনি। বড় হয়ে জেনেছি বাস্তবের সান্তা সেন্ট নিকোলাস সম্বন্ধে। তিনি অসহায়, দুঃস্থদের সাহায্য করতেন।

সেই সান্তার বাড়িতেই যাওয়ার সুযোগ এসে গিয়েছিল হঠাৎ করে। ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি থেকে ফিনিস ডাবল ডেকার ট্রেন সান্তাক্লজ় এক্সপ্রেসে চেপে পাড়ি দিয়েছিলাম সান্তার ঘোষিত বাড়ি ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে। সেই সুখকর, অপূর্ব যাত্রাপথের অভিজ্ঞতা চিরদিন মনে উঁকিঝুঁকি মারবে। স্টেশন থেকে বরফের সাদা চাদরে মোড়া রাস্তা দিয়ে বাস পৌঁছে দিয়েছিল সান্তাক্লজ় ভিলেজে। সান্তার এই বাড়ির উপর দিয়েই কাল্পনিক আর্কটিক লাইন বা উত্তর মেরু রেখা চলে গিয়েছে। ওখানে পৌঁছনোর পরে বিশ্বাস করতে মন চাইছিল না যে, উত্তর মেরুবৃত্তের উপরে দাঁড়িয়ে আছি! বারবার মনে হচ্ছিল, এখানকার বাসিন্দাদের কী মজা। ইচ্ছে হলেই এ পার-ও পার। এ এক অদ্ভুত জায়গা। বছরে একদিন, ২২ ডিসেম্বর এখানে সূর্যের ঘুমই ভাঙে না। আবার চব্বিশ ঘণ্টাই দেখা মেলে ২১ জুনে। আমি গিয়ে অবশ্য সূর্যের দেখা পেয়েছি মাত্র দেড়-দু’ঘণ্টাই।

এ যেন বরফের স্বর্গরাজ্য! রাস্তা, মাঠঘাট, বাড়ির ছাদ, গাছ... সব বরফে ঢাকা। কিছু অপেক্ষার পরে সান্তার সঙ্গে দেখা করা, ছবি োলা আর হাত মেলানোর সুযোগ মিলেছিল। তিনি এখানে বছরের প্রত্যেক দিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সকলের সঙ্গে দেখা করেন। ভালবাসা, ঐক্যের বাণী ছড়িয়ে দেন পৃথিবীতে। এখানকার পরিবেশে, চার দিকে উৎসবের আমেজ। যেন আজকের দিনটাই বড়দিন। সান্তার বাড়ি ঘিরে বিনোদনের নানা আয়োজন। সুভেনির শপ, কাফে, রেস্তরাঁ থেকে ইগলু থিম পার্ক, রেনডিয়ারে টানা স্লেজগাড়িতে চড়ে ঘোরা, স্নোমোবিল... আকর্ষণ অনেক। এখানে সান্তার নিজস্ব পোস্ট অফিসও আছে। সেখান থেকে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে চিঠি পোস্ট করা যায়। ছোটদের সঙ্গে বড়রাও দেদার মজায় মাতে। মেতেছিলাম আমিও। স্লেজগাড়ির মোহ ছাড়তে পারিনি। নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরার সময়ে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল ভূগোল, ইতিহাস আর সান্তা ক্লজ়। সান্তার ঝুলির রহস্য আজ আমার জানা। সেখানে আছে পৃথিবীর সকলের জন্য ভালবাসা, শুভ কামনা।

Lapland Santa Claus Finland
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy