Advertisement
২০ মে ২০২৪

‘রোহিলা মানুষ’

সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’। সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন, চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব— সব মিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’। সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন, চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব— সব মিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৫
Share: Save:

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার

ছত্তীসগঢ়ে গ্রহান্তরের প্রাণীর খোঁজ

অবশেষে কি দেখা মিলল গ্রহান্তরের প্রাণীর? ছোট চাকতির মতো উড়ন্ত যানে চড়ে কি তারা ভারতের মাটিতে এসেছিল? ছত্তীসগঢ়ে ১০ হাজার বছরের পুরনো রক পেন্টিং কিন্তু সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।

ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের কঙ্কর জেলায় খোঁজ পাওয়া এই রক পেন্টিংয়ে ভিনগ্রহের প্রাণী ও উড়ন্ত চাকতির মতো দেখতে কিছু ছবির খোঁজ মিলেছে। ছবির সঙ্গে সিনেমায় দেখতে পাওয়া ভিনগ্রহের প্রাণী ও উড়ন্ত চাকতির বেশ মিল। প্রত্নতাত্ত্বিক জে আর ভগত বলেন, “ছবিগুলি দেখে মনে হয় এলাকার প্রাচীন মানুষ ভিনগ্রহের প্রাণীদের দেখা পেয়েছিলেন।” তবে ছবিগুলি নিছক কল্পনা থেকে আঁকাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিশদ গবেষণার জন্য নাসা এবং ইসরোর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। রায়পুর থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে চান্দেলি ও গোটিতোলার গুহায় খোঁজ পাওয়া এই রক পেন্টিংগুলি নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা গল্প। কোনও কোনও ছবিকে রীতিমতো পুজো করা হয়। স্থানীয়দের কারও মতে, পূর্বজদের কাছ থেকে তারা শুনেছেন বহু বছর আগে এলাকায় ‘রোহিলা মানুষ’-এর উপস্থিতির কথা। খর্বকায় এই মানুষেরা আকাশ থেকে এসে গ্রামের দু’এক জনকে নিয়ে যেত যারা আর কখনও ফিরে আসেনি। পেন্টিংগুলি নিয়ে পরবর্তী গবেষণার ফলাফলকেই পাখির চোখ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিয়ান্ডারথালের ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং

আধুনিক যুগে গৃহসজ্জা রীতিমতো একটা আর্ট। ইন্টিরিয়র ডিজাইনিংকে পেশা হিসাবে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। এত দিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল মানুষ প্রথম ঘর গোছানো শুরু করে আধুনিক মানুষের হাত ধরে। তাদের পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথালেরা তেমন ‘গোছানো’ ছিল না। শিকার এবং খাওয়ার পর বাসস্থান অবিন্যস্ত রাখাই ছিল নাকি তাদের ‘ফ্যাশন’। বহু দিনের এই ধারণা ভেঙে গেল সাম্প্রতিক এক আবিষ্কারে। উত্তর পশ্চিম ইতালির এক গুহায় খননকার্য চালাতে গিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা দেখেছেন সেখানকার এক সময়ের আবাসিক নিয়ান্ডারথালেরা গুহাটিকে রীতিমতো তিনটি প্রকোষ্ঠে ভাগ করে বসবাস করত। একটিতে শিকার করা পশুদের মাংস কেটে খাওয়ার উপযোগী করা হত। গুহার পিছনের দিকের অংশটি ব্যবহৃত হত রান্নাঘর হিসাবে। সেখানে একটি বিশালাকায় চুল্লির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে ‘বেডরুম’ হিসাবে গুহার উপরের অংশই পছন্দ ছিল নিয়ান্ডারথালদের। হিংস্র পশু বা বহিরাগত আক্রমণ থেকে বাঁচতে গুহার উপরের অংশের ব্যবহার যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। গুহার নীচের দিকের অংশ তারা ব্যবহার করত অস্থায়ী ক্যাম্প হিসাবে। এই অস্থায়ী ক্যাম্পের ব্যবহারই ভবিষ্যতের বৈঠকখানার বীজ কি না তা অবশ্য জানা যায়নি। গুহার একটু ভিতরের দিকে যেখানে সূর্যের আলো আসত, সেখানে পাথরের যন্ত্রপাতি ও অস্ত্রশস্ত্রের খোঁজও মিলেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেই যুগেই সাধারণ যন্ত্র তৈরিতে যথেষ্ট পটু ছিল নিয়ান্ডারথালরা।

প্রাচীনতম বারিধোদকের খোঁজ

পৃথিবীর প্রাচীনতম বারিধোদক (সি ওয়াটার)-এর খোঁজ পাওয়া গেল মার্কিন মুলুকে। দশ থেকে পনেরো কোটি বছর আগের এই জলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে আমেরিকার বৃহত্তম ক্রেটার চেসাপিক বে-র এক হাজার মিটার নীচে। অতিরিক্ত লবনাক্ত এই জল ক্রেটেশিয়াস যুগের একেবারে প্রথম দিকে অতলান্তিক মহাসাগরের বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মহাজাগতিক কোনও বস্তু যেমন উল্কা বা ধূমকেতুর সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় এই ধরনের গর্ত বা ক্রেটার। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় সাড়ে তিন কোটি বছর আগে এমনই কোনও মহাজাগতিক বস্তু এই অঞ্চলে আছড়ে পড়ে তৈরি হয়েছিল চেসাপিক বে। তখনই প্রাচীন অতলান্তিকের কিছু পরিমাণ জল আটকে যায় এখানে। পৃথিবী জুড়ে যে কয়েকটি মহাসাগরীয় ক্রেটার দেখা যায়, চেসাপিক বে তার অন্যতম। বিশালাকায় এই ক্রেটারটির মুখের ব্যাস ৯০ কিলোমিটার। সাড়ে তিন কোটি বছর আগের সেই সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই ছিল যে তার ফলে সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য সুনামি টের পাওয়া গিয়েছিল ১৭৭ কিলোমিটার দুরে ব্লু রিজ পর্বতে। প্রাচীন এই সামুদ্রিক জলের আবিষ্কার সেই সময়ের পরিবেশ সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ঐতিহ্য

• অস্ট্রিয়ার মিষ্টি

শেষ পাতে মিষ্টিমুখ কে না ভালবাসে? কিন্তু রসনাতৃপ্তি করা ছাড়াও তা যে জাতীয় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক, ক’জন বাঙালিই তা মনে রাখেন? এ রাজ্যের গুটিকয়েক বাঙালি প্রতিষ্ঠা‌ন ছাড়া মিষ্টির প্রণালী সংরক্ষণে খুব বেশি উদ্যোগও চোখে পড়ে না। ফলে কালের নিয়মে হারিয়ে গিয়েছে মা-ঠাকুমার তৈরি বহু মিষ্টির স্বাদ। কিন্তু এ বার সংরক্ষণের সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে সুদূর অস্ট্রিয়ায়। এমনকী, ইউনেস্কোর মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনের স্বীকৃতি আদায়েও উদ্যোগী হয়েছে সে দেশ।

স্বাদু ডেজার্ট হিসেবে অস্ট্রিয়ার শাখাটর্টে বা কাইজাত্শ্মান আমবাঙালির কাছে অতি পরিচিত না হলেও অস্ট্রিয়ায় এর জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। শাখাটর্টে ভিয়েনার খুবই পরিচিত চকোলেট কেক বা টর্টে আর মোটাসোটা শ্রেডেড প্যানকেক হল কাইজাত্শ্মান। জনপ্রিয়তার বহর এমনই যে, ৫ ডিসেম্বর অস্ট্রিয়ায় জাতীয় শাখাটর্টে দিবস পালন করা হয়। তবে সে দেশের কিছু মানুষ তাতেও সন্তুষ্ট নন। এদেরই এক জন অস্ট্রিয়ার ‘ফ্রেন্ডস অফ অস্ট্রিয়ান পেস্ট্রি কালচার’ সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যালফ্রেড ফিডলার। তিনি মনে করেন, আল্পস পর্বতমালা বা ভিয়েনিজ ওয়ালত্জ নৃত্যশৈলীর সঙ্গে পেস্ট্রিও অস্ট্রিয়ার সমার্থক। তবে তাঁর মতে, শাখাটর্টে বা কাইজাত্শ্মান-এর মতো জনপ্রিয় মিষ্টি ছাড়াও অস্ট্রিয়ায় আরও অনেক প্রকারের মিষ্টি আছে যার আরও পরিচিতি দরকার। দেশের রসনার ঐতিহ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে তাঁর সংগঠন। সংগঠনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন দেশের অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে বেকারি, ক্যাটারিং এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। গত ১৪ জুলাই ফিডলার জানান, অস্ট্রিয়ার মিষ্টি যাতে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ আখ্যা পায়, ইউনেস্কোর কাছে সেই দাবিই জানানো হবে।

• ‘কাসাব্লাঙ্কা’র পিয়ানো নিলাম

‘প্লে ইট এগেন, স্যাম।’

আইসার অনুরোধে অভ্যস্ত হাতে পিয়ানোয় সুর তুললেন স্যাম, ‘অ্যাজ টাইম গোজ বাই’। সুর শুনে ছুটে এলেন রিক। বহু দিন পরে মুখোমুখি হলেন পুরনো প্রেমিকা আইসার। আর সিনেমার ইতিহাসে অমরত্ব পেল চিরন্তন প্রেমের কাহিনি ‘কাসাব্লাঙ্কা’। হলিউডের ধ্রুপদী সাদা-কালো ছবি ‘কাসাব্লাঙ্কা’র সেই পিয়ানোই এ বার নিলাম হতে চলেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো নিলামঘর ব্রিটেনের বনহ্যামস জানিয়েছে, ২৪ নভেম্বর নিউ ইয়র্কে এই সিনেমার আরও ৩০টি স্মারকের সঙ্গে নিলাম হবে পিয়ানোটি। তবে সব ক’টি স্মারকের মধ্যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এই পিয়ানোটিই। ২০১২-তেও পিয়ানোটি নিলামে তোলা হয়। সে বার ৬ লক্ষ ২৫০০ ডলারে বিকিয়েছিল এটি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি হামফ্রে বোগার্ট ও ইনগ্রিড বার্গম্যান অভিনীত ‘কাসাব্লাঙ্কা’র নায়ক-নায়িকা রিক এবং আইসা এখনও দর্শকের স্মৃতিতে অমলিন। আর ‘প্লে ইট এগেন, স্যাম।’— এই কালজয়ী সংলাপ নিয়েও কম ছবি হয়নি হলিউডে। হলিউডের সর্বকালীন সেরা ছবির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ১৯৪২-এ নির্মিত এ ছবি। সে বছর মাইকেল কার্টিজ পরিচালিত ‘কাসাব্লাঙ্কা’ আটটি বিভাগে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বছরের সেরা ছবি-সহ তিনটি অস্কার পায় ‘কাসাব্লাঙ্কা’। ছবিতে পিয়ানোটি ব্যবহার করা হয়েছে নায়ক রিকের ক্যাফে তথা নাইট ক্লাব “রিক’স ক্যাফে আমেরিকেইন”-এ। ছবির এক দৃশ্যে ইনগ্রিডের চরিত্র আইসার অনুরোধে কাঠের উঁচু পিয়ানোয় গান গেয়েছেন গায়ক-অভিনেতা ডুলি উইলসন। পর্দায় ডুলির গাওয়া সেই ‘অ্যাজ টাইম গোজ বাই’ গানটি এখনও চিরন্তন প্রেমের গান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

বনহ্যামস-এ বিনোদন মূলক স্মারক দফতরের ডিরেক্টর ক্যাথরিন উইলিয়ামসন জানিয়েছেন, কাসাব্লাঙ্কার ৩০টি স্মারকই ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছিল। পিয়ানো ছাড়াও ওই ছবিতে ব্যবহৃত নাইট ক্লাবের দরজা, পাসপোর্ট-নথি, কলাকুশলীদের স্বাক্ষরিত ফোটো এবং চিত্রনাট্যের চূড়ান্ত খসড়াও নিলাম হবে।

• ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেতে উদ্যোগী দিল্লি

ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্থা‌নের তকমা পেতে এ বার উদ্যোগী হল দিল্লি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্য সব কিছু খতিয়ে দেখতে ইউনেস্কোর একটি দল আগামী সেপ্টেম্বরে রাজধানীতে আসবে। দিল্লির ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল কি না, তা জানা যাবে আগামী বছর।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দিল্লি সরকারের তরফে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ইউনেস্কোর কাছে পেশ করে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ (ইনট্যাক)-এর দিল্লি শাখা সেই তথ্যসমৃদ্ধ নথিপত্র তৈরি করে। ইনট্যাক-এর দিল্লি শাখার আহ্বাহক এ জে কে মেনন বলেন, “বহু দিন আগেই দিল্লির এই মনোনয়ন পাওয়া উচিত ছিল। সমস্যা হল, এর জন্য যথেষ্ট সময় এবং উদ্যোগের প্রয়োজন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, বেশির ভাগ আধিকারিকই বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন।”

রাজধানীতে সংরক্ষণের বহু কাজে জড়িত রয়েছে ইনট্যাক। মেনন মনে করেন, সরকারি দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই সংরক্ষণের কাজ গতিহীন হয়ে পড়েছে। ইনট্যাক এই সমন্বয় সাধনের কাজটাই করে বলে জানান তিনি। লাল ফিতের বাধা কাটিয়ে দিল্লির দাবিকে ইউনেস্কোর কাছে পেশ করতে সর্বপ্রথম তত্পর হয় এই সংস্থা। মেননের নেতৃত্বে এক দল গবেষক তিন বছরের প্রচেষ্টায় ৩৬৭ পাতার বিশাল দলিল তৈরি করেন। ইউনেস্কোর নির্দেশিকা অনুসারে তৈরি এই দলিলে দু’পাতা জুড়ে ছবি-সহ মানচিত্র এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী রয়েছে। এতে দিল্লির দু’টি জায়গায় কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমটি হল, পুরনো দিল্লির শাহজাহানাবাদ এলাকা এবং দ্বিতীয়টি, নয়াদিল্লির লুটয়েনস-এর বাংলো অঞ্চল। এই দলিলে ইনট্যাক বলেছে, ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে সাম্রাজ্যবাদী শহরের উত্কৃষ্ট উদাহরণ হল দিল্লি। এ শহর মুঘল সাম্রাজ্যের সাফল্য যেমন দেখেছে, তেমনই ব্রিটিশ শাসনের গৌরবের সাক্ষীও থেকেছে। এ ছাড়া, এখানেই রয়েছে তিনটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট— কুতুব মিনার, হুমায়ুনের সমাধিস্থল এবং রেড ফোর্ট।

ইতিমধ্যেই রাজধানীর দাবিকে জোরালো করতে বিভিন্ন সম্মেলনে আয়োজন করেছে ইনট্যাক। মেনন জানান, ইউনেস্কোর স্বীকৃতিতে যথার্থই উপকৃত হবে দিল্লির অর্থনীতি।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ

গন্ধ বলে বলিয়ান

জঙ্গলটা যত ঘন হতে শুরু করল, গন্ধটা আরও তীব্র হয়ে উঠল। ঘন, গহীন অরণ্য। যত দূর চোখ যায় নিকশ কালো অন্ধকার। শুধু মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে লম্বা লম্বা ঝাঁকড়ামাথা গাছগুলো। মাঝে মাঝে বিচিত্র আওয়াজ ও নাম না জানা পাখির শিস রহস্যময়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। সেই সঙ্গে গন্ধ— কখনও তীব্র আবার কখনও খুব হাল্কা। ঘন জঙ্গলের মধ্যে এ ধরনের গন্ধ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই গন্ধের যেন অন্য একটা বৈশিষ্ট্য আছে। গন্ধের পথে এগিয়ে চললেন বিজ্ঞানীরা।

কিছু দূর যেতেই, নজরে এল একদঙ্গল গোরিলা দু’টি দলে ভাগ হয়ে পরস্পরের দিকে তাকিয়ে ফুঁসে উঠছে। ঠিক যেন যুদ্ধ শুরুর মুহূর্ত। থমকে গেলেন বিজ্ঞানীরা। দু’টি দলেই সমর্থ পুরুষেরা রয়েছে। একটি দলে আবার কয়েকটি মহিলা ও বাচ্চাকেও দেখা গেল। হঠাত্ই পেটানো চেহারার নেতা গোছের একটি পুরুষ গোরিলা হুঙ্কার দিয়ে উঠল। সেই সঙ্গে বেড়ে গেল সেই ঝাঁঝাঁলো গন্ধের তেজ। ধীরে ধীরে পিছু হঠতে থাকল অন্য দলটি। বিপক্ষ পরাস্ত হয়ে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমে এল গন্ধের তীব্রতা। শেষে একেবারেই মিলিয়ে গেল।
এ গল্পের শুরু ২০১৩ সালে। স্থান মধ্য আফ্রিকার একটি জঙ্গল। সিলভারব্যাক প্রজাতির পাহাড়ি গোরিলাদের গতিবিধি দেখতে গিয়ে নতুন এক রহস্যের জট খুললেন স্কটল্যান্ডের স্টারলিং বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। গায়ের গন্ধ ছড়িয়ে পরস্পরের সঙ্গে বার্তার আদানপ্রদান করে গোরিলারা। এমনকী, নিজেদের জাত চেনাতেও গায়ের গন্ধকেই ব্যবহার করে সিলভারব্যাকেরা। ঘন এবং প্রায় অন্ধকার জঙ্গলের মধ্যে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার এই বিচিত্র পন্থাকেই আয়ত্ত করেছে সিলভারব্যাকেরা। বছরখানেক পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানী ফিলিস লি ও তাঁর সতীর্থেরা জানিয়েছেন, গন্ধের তীব্রতা বাড়িয়ে বা কমিয়ে তারা নিজেদের মতামত ব্যক্ত করে। যেমন, প্রতিবেশী কোনও শক্তিশালী দলের সামনাসামনি পড়ে গেলে ক্ষেত্র বিশেষে গন্ধের মাত্রা একেবারেই কমিয়ে দিয়ে নিজেদের আড়ালে রাখতেই পছন্দ করে গোরিলারা। আবার দলেরই বাচ্চা বা মহিলারা সামনে থাকলে খুব হাল্কা গন্ধ ছড়িয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়। কখনও রাগ হলে গন্ধের তীব্রতা অনেকাংশে বাড়াতেও পারে তারা। তখন স্বভাবজাত ভঙ্গিতে বুক বাজিয়ে হম্বিতম্বি শুরু করে।

মেরু ব্যাঙের শীতঘুম

শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণীদের জীবনচক্রের দু’টি পর্যায় খুব গুরুত্বপূর্ণ— শীতঘুম এবং গ্রীষ্মনিদ্রা। গরমকালে বা উষ্ণ পরিবেশে শীতল রক্তবিশিষ্ট উভচর বা সরীসৃপেরাই নয়, কই, মাগুর ইত্যাদি জিয়ল মাছ, মোলাস্কা পর্বভুক্ত প্রাণী এবং লেমুর জাতীয় কিছু স্তন্যপায়ীদের মধ্যেও গ্রীষ্মনিদ্রা দেখা যায়। গরমের প্রখর তাপ থেকে বাঁচতে নিরাপদ স্থানে বেশ কয়েক দিন নিষ্ক্রিয়ভাবে জীবনযাপন করে এরা। অন্য দিকে, উষ্ণপ্রধান অঞ্চল হোক বা অতিশীতল মেরুঅঞ্চল— উভচর শ্রেণিভুক্ত ব্যাঙেরা শীতের শুরু থেকেই তাদের নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন শুরু করে দেয়। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে বেশ কয়েক মাস নিজেদের জন্য সুরক্ষিত আশ্রয় খুঁজে নেয়। যেমন, লেপার্ড ফ্রগ বা রানা পিপিয়েনসরা জলের তলায়, আমেরিকান টোডস বা বুফো আমেরিকানসরা মাটির নীচে গর্ত করে, মেরু অঞ্চলের উড ফ্রগ বা রানা সিলভাটিকারা ঘাস বা পাতার নির্যাস থেকে তৈরি বিশেষ গুহাকৃতি বাসার মধ্যে পুরো শীতকালটা কাটিয়ে দেয়। এ সময় এদের বিপাকক্রিয়া, রক্তসঞ্চালন অনেকাংশে কমে যায়। এমনকী, হৃদযন্ত্রের গতিও কমতে থাকে। দেহে সঞ্চিত স্নেহজাতীয় পদার্থ থেকে এরা খাদ্যগ্রহণ করে বেঁচে থাকে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, শীতঘুম চলাকালীন ঠান্ডা থেকে বাঁচতে মেরু অঞ্চলের কয়েক প্রজাতির ব্যাঙ নিজেদের দেহের দুই তৃতীয়াংশ জলীয় অংশকে বরফের মতো জমিয়ে নেয়। ফলে বাইরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেলেও এরা স্বচ্ছন্দে বেঁচে থাকতে পারে। এই ভাবে অন্তত সাত মাস এই দশা চলে। আবার বসন্তের শুরু থেকে ধীরে ধীরে জমে থাকা অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

এই তথ্য প্রথম প্রকাশিত হয় ‘এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি’ নামক একটি বিজ্ঞান পত্রিকায়। আলাস্কার বিজ্ঞানী ডন লারসন জানিয়েছেন, রানা সিলভাটিকাদের দেহকোষে গ্লুকোজ ও ইউরিয়া সমৃদ্ধ ক্রায়োপ্রটেক্ট্যান্ট নামে এক ধরনের রাসায়নিক আছে যা অতি নিম্নতাপমাত্রাতেও কোষকে সঙ্কুচিত হতে দেয় না। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোষে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন বিশেষ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজে পরিণত হয়ে দেহে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে। ফলে দেহ জমাট বেঁধে থাকার সময় যখন বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলি ধীর গতিতে চলে তখন ক্রায়োপ্রোটেকশন পদ্ধতিতে এরা দেহকোষগুলিকে সচল রাখে। মেরু ব্যাঙেদের এই আশ্চর্য ক্ষমতাকে বিজ্ঞানীরা চিকিত্সাবিজ্ঞানের কাজে লাগানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যাবে বলেই দাবি তাঁদের।

মানুষখেকো হাতি

২৩ জুন, ২০০২। বেলা প্রায় ১টা। কার্শিয়াঙের টুকরা বস্তিতে তখন চাঁদিফাটা রোদ্দুর। হাতি দেখতে নাপানিয়ার জঙ্গলের কাছে ভিড় জমিয়েছেন শ’খানেক গ্রামবাসী। বেশ কয়েক দিন ধরে দলছুট একটা মাদী হাতিকে আটকে রেখেছিলেন তাঁরা। এ দিন তাকে ফের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। চারিদিকে যেন উত্সবের মেজাজ। এত লোকের হল্লায় হাতিটা বারে বারেই চঞ্চল হয়ে উঠছে, থেকে থেকেই গর্জন করছে। শেষে সার্চ লাইট জ্বালিয়ে, ক্যানেস্তারা পিটিয়ে হাতিটাকে ছাড়া হল। হাতি খেদাতে এ সব সরঞ্জাম আগে থেকেই দিয়ে গিয়েছিলেন বন দফতরের কর্তারা। অদ্ভুত কাণ্ড, হাতিটা কিছুতেই জঙ্গলে ঢুকছে না। বরং কাছে গেলেই তেড়ে আসছে। সেই সঙ্গে কান ফাটানো চিত্কার। ইতিমধ্যেই কয়েক বিঘে জমির ফসল মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতিটা। বেশ কয়েকটা মাটির বাড়িও গুঁড়িয়েছে। দুপুরের মধ্যেই কাজ সেরে হাতি দেখতে এসেছিলেন গ্রামীণ এক ভদ্রলোক। বয়স বছর ষাটেক। উত্সাহের চোটে হাতিটার একটু বেশি কাছেই চলে গিয়েছিলেন তিনি। হঠাত্ই তাঁর দিকে তেড়ে এল বুনো হাতিটি। তার পরেই একটা ঝটকা। হঠাত্ই শূন্যে উড়ে যেতে দেখা গেল তাঁর শরীরকে। প্রায় ৩০ মিটার দূরে গিয়ে পড়লেন তিনি। এ বার তেড়ে এসে প্রবল আক্রোশে পা দিয়ে দেহটা পিষে দিল বুনোটা। শরীরটা তত ক্ষণে একটা মণ্ডে পরিণত হয়েছে। এ বার শুঁড় দিয়ে সেই মণ্ডের মতো দেহ তুলে চিবোতে শুরু করে দিল সে। বাড়ির দাওয়ায় বসে এক বিদেশি পর্যটককে সে দিনের গল্পটা শোনাচ্ছিলেন গাঁয়ের মোড়ল। ভয়ানক এই অভিজ্ঞতা বলতে বলতে বারে বারেই কেঁপে উঠছিলেন তিনি।

শুধু এই ভদ্রলোকই নন, দু’দিনের মধ্যে আরও ১৩ জন মানুষ হাতিটার শিকার হয়। এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে বন দফতর। প্রাণী বিজ্ঞানীরাও। বন দফতরের এক কর্তা এন সি বহুগুনা ২০০৮ থেকে ওই রেঞ্জে কর্মরত। তিনি জানালেন, ঘটনাটা সত্যিই বিরল। ২৫ জুন হাতিটাকে গুলি করে মারেন বন দফতরের কর্মীরা। শুধু তাই নয়, তার পেট চিরে মানুষের দেহের অংশও পাওয়া যায়। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়ে বহুগুনা একটি বইও লেখেন, ‘দ্য ম্যান ইটিং এলিফ্যান্ট’। বহুগুনা জানান, এই ঘটনার কিছু দিন আগেই ডুয়ার্সের জঙ্গল থেকে এসে হাতিদের একটা দল তাণ্ডব চালায় গ্রামে। দলে ওই মাদী হাতি ও তার শাবকও ছিল। হাতির দলকে তাড়িয়ে মা হাতি ও তার শাবককে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তার পর মায়ের চোখের সামনেই পিটিয়ে মারা হয় তার শাবককে। এই আক্রোশ থেকেই নির্মম হত্যালীলায় মেতে ওঠে সে। বিজ্ঞানীদের কথায়, “হাতিরা নিরামিশাষী। মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর মাংস খাওয়ার মতো দাঁতের গঠন বা হজমশক্তি কোনওটাই তাদের নেই।” বিখ্যাত শিকারি রণজিত্ মুখোপাধ্যায় জানান, ১৯৭৪ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত অন্তত ৩১টি দলছুট হাতিকে তিনি মেরেছেন, যারা নানা কারণে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছিল। তাঁর মতে, এই ঘটনা বিরল। শাবকের মৃত্যুর শোক হাতিকে করে তুলেছিল ‘মানুষখেকো’ বলেই তাঁর দাবি।

পর্যটন কেন্দ্র

• নজরকাড়া বুমথাং

ভুটানের রাজধানী থিম্পু থেকে ২৫৯ কিমি দূরে প্রায় ১৩,১০০ ফুট উচ্চতার বুমথাং উপত্যকা। বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের একটি পবিত্র স্থান। বুম্পা বা বুম কথার অর্থ দেবতার বেদীতে জল রাখার পাত্র। আর থাং কথার অর্থ উপত্যকা। সব মিলিয়ে বুমথাং সত্যিই অপরূপ সুন্দর দেবস্থান।

থিম্পু থেকে বাস অথবা গাড়িতে সরাসরি চলে যাওয়া যায় বুমথাঙে। উরা, চুমে, থাং এবং চোখর-এই চার উপত্যকা নিয়ে বুমথাং উপত্যকা। বুমথাঙের অনেকগুলি দ্রষ্টব্য স্থানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাকার জং। জংগুলি আসলে বিভিন্ন জেলার ধর্মীয়, সামরিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসাবেই পরিচিত। ওয়াংচুক নামের এক লামা এই জাকার জং তৈরি করেন। জোংখা ভাষায় জাকার কথার অর্থ সাদা পাখি। এই জং নির্মাণের সময় নাকি একটি সাদা পাখি উড়ে এসে বসে জঙের স্থান নির্বাচন করে দেয়। তাই এই নাম। এ ছাড়াও রয়েছে কুর্জে লাখাং। কুর্জে মনাস্ট্রি নামেও পরিচিত এটি। তিব্বতি ধর্মগুরু রিমপোচেএ খানে তপস্যা করেছিলেন। তিনটি মন্দির নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লাখাং। রয়েছে বিশাল বুদ্ধমূর্তি, উড়ি ভ্যালি এবং জাম্বো লাখাং যার টানে পর্যটকরা এখানে বার বার ছুটে আসেন। জাম্বে লাখাংটি তৈরি করেন তিব্বতি রাজা সাংকসেন গাম্পো। বুমথাঙের অন্যতম সেরা আকর্ষণ বার্নিং লেক। এই হ্রদকে নিয়ে একটি অসাধারণ কাহিনি আছে। ভুটানের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি পেমা লিংপার সঙ্গে জড়িয়ে সে কাহিনি। পঞ্চদশ শতকে গুরু রিমপোচের লুকিয়ে রাখা ধর্মীয় লিপি হ্রদ থেকে খুঁজে বের করে আনেন পেমা।

মোহময়ী মহাবালেশ্বর

১৩৭২ মিটার উঁচু পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সহ্যাদ্রি পাহাড়ে ভেন্না লেক ঘেরা মহাবালেশ্বরকে বলা হয় ‘মহারাষ্ট্রের কাশ্মীর’। প্রায় ১০ বর্গ কিমি জুড়ে পাহাড়ি এই জনপদের আর এক পরিচয় ‘হানিমুনার্স প্যারাডাইস’ নামে।

১৮২৮ সালে জন ম্যালকম নামে জনৈক ব্রিটিশ এই শহরটিকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেন। মুম্বই থেকে বাসে অথবা গাড়িতে সরাসরি যাওয়া যায় মহাবালেশ্বর। দূরত্ব প্রায় ২৪৭ কিমি। সময় লাগে ৬-৭ ঘণ্টা। এখানে দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

• মহাবালেশ্বর মন্দির: জনশ্রুতি, এই স্থানে মহাবল নামে দৈত্যকে বধ করে বিষ্ণু পৃথিবীকে রক্ষা করেন।

• পঞ্চগঙ্গা বা কৃষ্ণাবাঈ মন্দির: শহর থেকে ৫ কিমি দূরে ১৩ শতকে তৈরি পঞ্চগঙ্গা মন্দির। মোট পাঁচটি ধারায় জল এসে মিশেছে এখানে— কৃষ্ণা, কয়না, সাবিত্রী, গায়ত্রী ও ভেন্না। এই পাঁচ ধারার জল খুব পবিত্র মানা হয়।

• প্রতাপগড় দূর্গ: মরাঠা সাম্রাজ্যের গর্ব। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে এটি তৈরি করেন ছত্রপতি শিবাজি। এখানেই আফজল খাঁকে বাঘ নখ দিয়ে হত্যা করেছিলেন তিনি।

• অন্যান্য দর্শনীয় জায়গাগুলির মধ্যে রয়েছে ভবানী মন্দির, শিব মন্দির এবং রবার্স কেভ। জনশ্রুতি, অতীতে এই গুহাটি দৈত্যপুরি ছিল! পরে শিবাজির সেনাপতি তানাজী আশ্রয় নেন এখানে।

মহাবালেশ্বরের প্রধান আকর্ষণ ৩০টির বেশি ভিউ পয়েন্ট। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—

• আর্থার সিট— ১৩৪০ মিটার উচ্চতায় এই ভিউ পয়েন্টটি স্যর আর্থার ম্যালের নামানুসারে দেওয়া হয়েছে। কথিত, সাবিত্রী নদীতে এক লঞ্চ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবারকে হারান। তাই এই পয়েন্টে বসে তিনি সাবিত্রী নদীর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকতেন!

• উইলসন পয়েন্ট— এটি মহাবালেশ্বরের উচ্চতম পয়েন্ট। ব্রিটিশ আমলে এটি সিন্দোলা হিল নামে পরিচিত ছিল। এখান থেকে পুরো মহাবালেশ্বরকে চাক্ষুস করা যায়। শুধু তাই নয়, এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য অবর্ণনীয়।

• থ্রি মাঙ্কি পয়েন্ট— প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি পাশাপাশি তিনটি পয়েন্ট। আকৃতি অনেকটা গাঁধীজির তিন বাঁদরের মতো। তাই এই নামকরণ।

এ ছাড়াও রয়েছে কারনাক পয়েন্ট, হেলেন্স পয়েন্ট, এলফিস্টোন পয়েন্ট, বম্বে পয়েন্ট ফকল্যান্ড পয়েন্ট ও কেট পয়েন্ট। মহাবালেশ্বরে ঘুরতে গিয়ে জলপ্রপাতের কথা ভুললে চলবে না। চায়নাম্যান্স ফলস, লিংমালা ফলস এবং ধোবি ফলস— ৬০০ ফুট উপর থেকে পাহাড়ের গা বেয়ে জলধারা নেমে আসার দৃশ্য ক’জনই বা ভুলতে পারে!

• অরুণাচলের গর্ব তাওয়াং

অরুণাচলের উত্তর-পূর্বের একটি ছোট শহর তাওয়াং। সমুদ্র সমতল থেকে ৩,০৪৮ মিটার উচ্চতায় এই শহরটি গুয়াহাটি থেকে ৫৫৫ কিমি ও তেজপুর থেকে ৩২০ কিমি দূরে। তাওয়াঙের প্রধান আকর্ষণ বৌদ্ধ মনাস্ট্রি। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মনাস্ট্রি আছে এখানেই। লোডরে গিয়াত্সো নামে এক বৌদ্ধ লামা সেটি তৈরি করেন।

১৯৫৯ সালে দলাই লামা তাওয়াং হয়েই তিব্বত থেকে ভারতে এসেছিলেন। মহাযান সম্প্রদায়ভুক্ত এই মন্দিরে আছে ২৮ ফুট উঁচু বুদ্ধমূর্তি। রয়েছে প্রায় ৭০০ লামার থাকার ব্যবস্থা। এখানকার সংগ্রহশালাটিও পর্যটকদের মন কাড়ার মতো। এ ছাড়া শহরের ৫ কিমি দূরেই রয়েছে প্রায় ৪৬০ বছরের প্রাচীন আর্জেলিং মনাস্ট্রি। রয়েছে ১৯৬২ সালে ভারত-চিন যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের স্মৃতিতে তৈরি ওয়ার মেমোরিয়াল এবং ক্রাফ্ট সেন্টার।
তাওয়াংকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য হ্রদ। এখানে ১০১টি হ্রদ আছে বলে বিশ্বাস বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের। এদের মধ্যে সাঙেতসার হ্রদ ও সো হ্রদ উল্লেখযোগ্য। বিশ্বের উচ্চতম সে লা পাস এই তাওয়াং শহরেই।

• প্রেত উত্সব

আজকাল বিভিন্ন শপিং মল, সায়েন্স মিউজিয়াম বা বিনোদন পার্কে মজুত থাকে কৃত্রিম হানাবাড়ি বা ‘স্ক্যারি হাউস’। টাকা খরচ করে কিছু ক্ষণের জন্য পাওয়া যেতে পারে গা ছমছমে ভুতুড়ে অনুভূতি। কিন্তু যদি পুরো একমাস এই গা ছমছমে ভুতুড়ে অনুভূতির সাক্ষী হয়ে থাকতে চান তাহলে তার মহেন্দ্র ক্ষণ এটাই। অর্থাত্ অগস্ট মাস। আর তার ঠিকানা হল তাইওয়ান।

এ সময়ে যদি আপনি তাইওয়ানে যান, বা আপনি যদি এখন কর্মসূত্রে তাইওয়ানে থাকেন, তাহলে সূর্যাস্তের পর বাইরে বেরোতে হলে অবশ্যই সতর্ক থাকুন। যদি ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়, তাহলে দেখাও মিলতে পারে দু-একটা ভূত বা পিশাচের। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই বিশ্বাস তাইওয়ানের মানুষের! এই বিশ্বাসের উপর ভর করেই প্রতি বছর এই সময় এক মাস ধরে চলে ‘প্রেত উত্সব’। এই প্রেত উত্সবের প্রভাব বিশেষত তাইওয়ানের জুংলি শহরে লক্ষ্য করা যায়। এলাকার রাস্তাঘাট থেকে শপিং মল পর্যন্ত সন্ধের পর প্রায় শুনসান। অফিস-কাছারিতেও জরুরি কাজকর্ম পরের দিনের জন্য তুলে রাখা হয়। তাইওয়ানবাসীদের অগস্টেই না কি সকল অতৃপ্ত আত্মা, ভূত, প্রেত, পিশাচরা ফিরে আসে অসম্পূর্ণ কামনা-বাসনা, ক্ষুধা-তেষ্টা মেটাতে।

কথিত, বহু বছর আগে মু লান নামে এক যুবক তাঁর মৃত মায়ের আত্মার তুষ্টির জন্য এক বৌদ্ধ ধর্মগুরুর শরণাপন্ন হন। ওই ধর্মগুরুর আদেশ অনুসারে মু লান তাঁর মায়ের পছন্দের খাবার, পানীয়-সহযোগে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে প্রার্থনা করেন। প্রার্থণায় মু লানের মা’র আত্মা তৃপ্ত হয়। মায়ের আশীর্বাদে ভাগ্য সদয় হয় মু লানের প্রতি। এই ঘটনার পর থেকেই সূচনা প্রেত উত্সবের।

বাড়ির বাইরে মাছ, পাখি, মাংস, সব্জি এমনই নানা পছন্দের খাবার-দাবারে ‘ভূত-ভোজন’ সাজিয়ে অতৃপ্ত আত্মাদের সন্তুষ্ট করার অয়োজন করেন সেখানকার মানুষরা। এলাকার জলাশয়ে ছোট-বড় কাগজের প্রদীপ ভাসানো হয়। ঘরের বাইরে বা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে তাতে টাকা-পয়সা (নকল) আহুতি দেওয়া হয় ভূতেদের তুষ্ট করার জন্য। বাইরে এত আয়োজন থাকলেও ঘরের ভিতরে রীতিমত গা ছমছম করা পরিবেশ। ঘরের ভিতরে মোম জ্বালিয়ে তাইওয়ানি ঐতিহ্যের গুনগুন সুরে মন্ত্রোচ্চারণ করতে থাকেন তাঁরা। জনশূন্য পথ-ঘাট আর ঘরের ভিতরের গুনগুন মন্ত্রোচ্চারণের গুরুগম্ভীর সুর গা ছমছমে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয় গোটা এলাকায়।

• ইলিশ উত্সব

ইলিশ— নাম শুনলেই বাঙালির জিভে জল! বর্ষা মানেই বাঙালির পাতে নানা রূপে ইলিশের আবির্ভাব। ভাঁপা, সরষে বা ভাজা— সবরকম স্বাদ নিতে আপামর বাঙালি যেন চাতকের মতো মুখিয়ে থাকে ইলিশের স্বাদ নিতে। ইলিশের নাম উঠলেই পদ্মার নাম মুখে আসে ঠিকই, কিন্তু পদ্মার ইলিশ আগের মতো তেমন সহজলভ্য না হলেও স্বাদের চাহিদা মেটাতে গঙ্গা বা রূপনারায়ণ তো আছেই! পেল্লাই আকারের না হলেও ক্ষতি কি! তা বলে ইলিশের স্বাদ নিতে পিছপা হওয়া যায় না!

শুরু জামাইষষ্ঠী থেকে। জামাইকে খুশি করতে ইলিশ যে পাতে চাই-ই। আকাশছাঁয়া দামকে তোয়াক্কা না করেই বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে ইলিশের বাজারে। উপলক্ষ জামাইষষ্ঠী হলেও ইলিশের চাহিদা কিন্তু সারা বছর ধরেই। তাই দাম বাড়লেও ইলিশের যোগানে ভাটা পড়তে দিতে নারাজ বাঙালিবাবুরা। ইলিশকে আরও বেশি করে সর্বজনীন করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায়। তাই প্রতি বছর বর্ষার মরসুমে ব্যবস্থা করা হয় ইলিশ উত্সবের। তা সে সরকারি উদ্যোগই হোক বা কোনও বেসরকারি উদ্যোগ— বাঙালির পাতে ইলিশ পৌঁছে দিতে হাজির সবাই।

এ বছরও কলকাতার বিভিন্ন রেস্তোরাঁর উদ্যোগে জুলাই-অগস্ট মাস ধরে চলছে ‘ইলিশ উত্সব’। ভাঁপা ইলিশ , তেল ইলিশ, দই ইলিশ, সরষে ইলিশ এমনই নানা মুখোরোচক পদ থাকছে উত্সবের খাদ্য তালিকায়। তবে ইলিশ উন্মাদনা এ বার শহরের গণ্ডি পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে সুন্দরবনের গহিন অরণ্যে। অর্থাত্ বাঘ দেখা আর মাছ খাওয়া— দুইয়েরই স্বাদ মিলবে একসঙ্গে। এমনিতেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের টানে সারা বছরই এখানে পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগ ও বিশেষ সহযোগিতায় সুন্দরবনের আরণ্যক পরিবেশে ইলিশ উত্সবের আয়োজন সুন্দরবন পর্যটনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ১৫ থেকে ১৭ অগস্ট পর্যন্ত চলবে এই উত্সব। ৩দিন ২রাত্রির এই উত্সবে সজনেখালির জঙ্গল ঘেরা নদীতে স্টিমারে ভাসতে ভাসতে নানা মুখোরোচক ইলিশের পদ তো থাকছেই, তার সঙ্গে ইলিশ কুইজ, আঞ্চলিক নাচ-গানের জমজমাট আয়োজন। ইলিশ কুইজে প্রথম স্থানাধিকারী পাবেন এক কেজির তিনটি ইলিশ। সুন্দরবন ইলিশ উত্সবে যোগ দিতে চাইলে কলকাতার সায়েন্স সিটির সামনে থেকেই গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার এবং উত্সব শেষে যথাস্থানে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গাড়ির বিশেষ ব্যবস্থাও করেছে ওই সংস্থা। তাহলে আর দেরি কেন! কব্জি ডুবিয়ে ইলিশ খেতে খেতে হারিয়ে যান সুন্দরবনের অরণ্যের গভীরে।

• তুলসীদাস জয়ন্তী

মধ্যযুগীয় ভারতীয় কাব্য-সাহিত্যে এবং একই সঙ্গে হিন্দু ধর্ম সংস্কারক এবং প্রচারক হিসাবে তুলসীদাসের ভূমিকা চিরস্মরণীয়। গত ৩ অগস্ট দেশজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হল তুলসীদাসের ৫১৭তম জন্মজয়ন্তী। গোস্বামী তুলসীদাস নামেও পরিচিত তিনি । রামচরিতমানস এবং তুলসীদাস— ভারতীয় সাহিত্যে বহুল উচ্চারিত দু’টি নাম। ১৪৯৭ সালে রামবোলায় জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত হিন্দু দার্শনিক-কবি তুলসীদাস। হিন্দু সন্ন্যাসী এবং ধর্ম সংস্কারক তুলসীদাস তাঁর সৃষ্ট কাব্য সাহিত্যের জন্য ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। বাল্মীকি রচিত মূল রামায়ণের অনুসরণে আওয়াধি ভাষায় রচিত তাঁর রামচরিতমানস ভাষার সারল্য এবং চিত্যাকর্ষক ছন্দের জন্য আজও সমান জনপ্রিয়। ১৪৯৭ সাল থেকে ১৬২৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ জীবনকালে তাঁর রচিত বিনয়পত্রিকা, কবিতাবলী, হনুমান চালিশা, জানকি মঙ্গল, প্রভাতী মঙ্গল ইত্যাদি মধ্যযুগীয় ভারতীয় সাহিত্যকে বহুগুণ সমৃদ্ধ করেছে। তাই তাঁর মৃত্যুর কয়েকশো বছর পরেও আজও দেশের লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ অত্যন্ত শ্রদ্ধা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন তুলসীদাস জয়ন্তী।

পরিষেবা

ট্রেন সফরে বেছে নেওয়া যাবে পছন্দের আসন

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড টুরিজম কর্পোরেশন (আইআরসিটিসি) শুরু করছে নতুন পরিষেবা। এত দিন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট বুকিং করতে গেলে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় তারিখ দিয়ে আবেদন করলে কামরা এবং আসনের নম্বর স্বয়ংক্রিয় ভাবে নথিভুক্ত হত। যাত্রীদের পছন্দ না হলেও তাঁদের ওই আসনেই সফর করতে হত। ১৫ অগস্ট থেকে আইআরসিটিসি শুরু করতে চলেছে এক নতুন পদ্ধতি। টিকিট উপলব্ধ থাকলে তিনি কোন কামরার, কোন আসনে সফর করতে চান সেটিও উল্লেখ করতে পারবেন। রেলের দাবি, এতে যাত্রীর উপকৃত হবেন। বিশেষ করে শতাব্দী ট্রেনগুলির সফরে, যেখানে পুরো সফরটাই যাত্রীদের বসে থাকতে হয়। এ ছাড়া মহিলা ও বয়স্ক যাত্রীরাও নতুন পরিষেবায় উপকৃত হবেন বলে মনে করছে রেল।

দিল্লি-আগ্রা রুটে ভারতের দ্রুততম ট্রেন

ভারতের সবচেয়ে দ্রুততম ট্রেন এত দিন ছিল নয়াদিল্লি-ভোপালের মধ্যে চলা শতাব্দী এক্সপ্রেস। প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে চলা এই ট্রেনটি নয়াদিল্লি থেকে ভোপাল পৌঁছতে সময় নিত মাত্র আট ঘণ্টা। গত ৩ জুলাই এই দ্রুততম ট্রেনকে টেক্কা দিয়ে দেড় ঘণ্টায় একই দূরত্ব অতিক্রম করল নয়াদিল্লি-আগ্রা রুটের একটি ট্রেন। ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে সফর করে এই ট্রেনটি। নয়াদিল্লি থেকে আগ্রার দূরত্ব প্রায় ১৯৫ কিলোমিটার। এখন এই রাস্তা অতিক্রম করতে সময় লাগে দু’ ঘণ্টার উপরে। নতুন ট্রেনটি সম্পূর্ণ রূপে চালু হলে ওই একই পথ অতিক্রম করতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টা। গতি বাড়াতে গেলে আরও উন্নত মানের কোচ সংযোজন করতে হত। ভোপাল শতাব্দী এক্সপ্রেসে যে সমস্ত কোচ ব্যবহার করা হয়, সেগুলিই নয়াদিল্লি-আগ্রা রুটের ট্রেনে ব্যবহার করা হয়েছে। তা ছাড়া নতুন রেললাইনও বসানো হয়েছে। ৫৪০০ অশ্বশক্তির ইঞ্জিনট টানবে দশ কামরার এই ট্রেনটিকে। আগামী নভেম্বর থেকে এই ট্রেন পরিষেবা চালু হবে বলে রেল সূত্রে খবর। এ ছাড়াও নয়াদিল্লি থেকে কানপুর এবং চণ্ডীগড় রুটেও এই ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা আছে বলেও জানানো হয়েছে ভারতীয় রেলের তরফে।

• চিন থেকে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন

চিনের জিনিং থেকে তিব্বতের লাসা পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছিল ২০০৬ সালে। দুর্গম এই রেলপথ বিপুল সৌন্দর্যে ভরপুর। এক জায়গায় ট্রেনটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬,৪০০ ফুট উপর দিয়ে যায়। বরফে ঢাকা পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে রেলপথ যাত্রীদের মনমুগ্ধ করত। চিনের নতুন পরিকল্পনা এই রেলপথকে ভারত ও নেপাল সীমান্ত পর্যন্ত প্রসারিত করা। ২০১৬ সাল থেকে এই বিশেষ রেলপথকে প্রসারিত করার কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। সবিস্তার রেলপথ না জানানো হলেও চিন জানিয়েছে, ২০২০-সালের মধ্যে তিব্বত থেকে একটি রেলপথ নেপাল অবধি প্রসারিত করা হবে। অন্য একটি রেলপথকে তিব্বত থেকে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। বহু দিন যাবত্ পরিকল্পনা থাকলেও দুর্গম পরিবেশ এবং খরচই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই পরিকল্পনার। তবে ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবর্তন এই জট খুলতে যথেষ্ট সাহায্য করেছে বলে জানা গিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা, ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ও নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE