বিয়ের কনে
বিয়ের উপকরণ মানেই লম্বা তালিকা। সমস্ত আচার অনুষ্ঠানের জন্য খুঁটিনাটি বিভিন্ন দ্রব্যের সমাহার। কত আচার, কত রীতি! গোত্র, পরিবারের ইতিহাস ইত্যাদির উপরে সেই রীতি বদলে যায়। তবে এমন বেশ কয়েকটি উপকরণ রয়েছে যেগুলি ছাড়া বাঙালি বিয়ে ভাবাই যায় না। যেগুলির সঙ্গে জড়িয়ে বিভিন্ন প্রথা ও সাজসজ্জা। এমনকি আধুনিক কনের সঙ্গেও জুড়ে থাকে এই সাবেকি সাজের বা ঐতিহ্যময় প্রথার সামগ্রী।
মুকুট: বাঙালি বিয়ের সাজের অন্যতম উপাদান বিয়ের মুকুট। সাদা শোলার মধ্যে লাল অথবা সোনালি রঙের কলকা করা। শুধু বিয়ের সাজের জন্যই নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে রয়েছে বিয়েতে এই মুকুটের ব্যবহার। কনের জন্য মুকুট আর বরের জন্য বরাদ্দ বিয়ের টোপর।
আলতা: বাঙালি কন্যার আলতা পরা পায়ের সৌন্দর্য যে কোনও পুরুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। যদিও বর্তমানে আধুনিক প্রজন্মের কাছে এই সাজ বা প্রথা লুপ্ত প্রায়। তবে আজও গ্রাম বাংলায় আলতা পরার চল রয়েছে। পুজো পার্বণে আলতা পরার রীতি রয়েছে গ্রামবাংলার একাংশে। আর বিয়েতে তো আলতা পরাকে উপলক্ষ করে অনুষ্ঠানই রয়েছে একখানা। কনে ছাড়াও অন্যান্য আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী এয়ো স্ত্রীরা আলতা পরে থাকেন এই অনুষ্ঠানে।
শাঁখা-পলা: বাঙালি বিয়ের অন্যতম উপাদান শাঁখা-পলা। কনের দুই হাতে শাঁখা-পলা জানান দেয় বৈবাহিক জীবনের সূচনা। সাজসজ্জা নয়, বরং প্রথাগত কারণেই এই অলঙ্কারের ব্যবহার এখনও করা হয়। যদিও সময়ের সঙ্গে শাঁখা-পলা সাজসজ্জার অঙ্গও হয়ে উঠেছে। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি কিংবা ধর্মীয়, বাঙালি কনে বা বিবাহিত নারীর শাঁখা-পলা পরার নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, শাঁখা-পলা মঙ্গলের প্রতীক।
লোহা বাঁধানো: বিয়ের অন্যতম সাক্ষ্য বহন করে লোহা বা নোয়া বাঁধানো। সাধারণ লোহার চুড়ি পরা হয়। অথবা সোনা দিয়ে বাঁধানো চুড়ি পরা হয়। বলা হয়, লোহা শুদ্ধ এবং অক্ষয় ধাতু। সংসারে নতুন রমণীর আগমন যেন শুদ্ধাচারে হয় সেই বিশ্বাস থেকেই এই রীতি। যদিও এ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে।
কোনও বাঙালি বিয়ের মূল অনুষ্ঠানের আগে এই উপকরণগুলির দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। তাই আরও একবার চোখ বুলিয়ে নিন হাজারো জিনিসের ভিড়ে এই উপকরণগুলি যেন হারিয়ে না যায়।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy