Advertisement
০২ মে ২০২৪

কৃষ্ণেন্দু আর সাবিত্রীকে কড়া বার্তা মমতার

আসানসোলে তৃণমূল প্রার্থীর হারের পরে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে মন্ত্রিত্ব ও জেলা সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে মলয় ঘটককে। মালদহে দলের বিপর্যয় এবং তার জেরে প্রকাশ্যে কাজিয়ার জন্য ওই জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে এ বার সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের অবসরেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে রাজ্যের আর এক মন্ত্রী, মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহাকেও।

দলনেত্রী সতর্ক করে দেওয়ার পরে সাবিত্রী ও কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন তৃণমূলের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে।  ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

দলনেত্রী সতর্ক করে দেওয়ার পরে সাবিত্রী ও কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন তৃণমূলের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০২:৫১
Share: Save:

আসানসোলে তৃণমূল প্রার্থীর হারের পরে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে মন্ত্রিত্ব ও জেলা সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে মলয় ঘটককে। মালদহে দলের বিপর্যয় এবং তার জেরে প্রকাশ্যে কাজিয়ার জন্য ওই জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে এ বার সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের অবসরেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে রাজ্যের আর এক মন্ত্রী, মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহাকেও।

মলয়বাবুর মতো কৃষ্ণেন্দুবাবু বা সাবিত্রীদেবীকে দলীয় তরফে ইস্তফা দেওয়ার কথা এ দিন পর্যন্ত বলা না হলেও, তৃণমূল নেতৃত্ব যে কড়া পদক্ষেপ করবেন, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের বক্তব্যেও। মালদহে দলীয় দুই প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয়ের পরে কৃষ্ণেন্দু ও সাবিত্রীদেবীর কাজিয়া যে ভাবে প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দলীয় নেতৃত্ব অত্যন্ত বিরক্ত। মুকুলবাবুর কথায়, “মালদহে দলের ফল তো খারাপ হয়েছেই। সেখানকার দলের দায়িত্বশীল নেতাদের আচরণেও দল ক্ষুব্ধ।” দলের একাংশের মতে, এই বার্তাতেও সতর্ক না হলে ওই দুই নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে তৃণমূলের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক তথা রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নবান্নে তাঁর নিজের ঘরে ডেকে পাঠান সাবিত্রী ও কৃষ্ণেন্দুকে। দু’জনের সঙ্গেই তিনি আলাদা ভাবে কথা বলেন। পার্থবাবুর সঙ্গে আধ ঘণ্টা কথা বলার পরে ঘর থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসেন কৃষ্ণেন্দু। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন এমন হল মালদহে? কৃষ্ণেন্দু বলেন, “সারা দেশ জুড়ে সুনামি হয়েছে। তাতে অনেক রথী-মহারথী শুয়ে পড়েছে। এর প্রভাব তো পড়বেই!” আর সাবিত্রীর বক্তব্য, “জেলায় দলের হারে আমরা সবাই অনুতপ্ত। কেন এমন হল, তা দেখতে হবে।” মুখে এ কথা বললেও জেলা সভানেত্রী হিসেবে সাবিত্রীদেবী এ দিনই একটি রিপোর্ট তুলে দেন পার্থবাবুর হাতে। তৃণমূল সূত্রের খবর, দিন তিনেক আগে জেলায় দলের হার নিয়ে কাঁটাছেড়া করে সাবিত্রীকে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে বলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই রিপোর্টই তিনি পার্থবাবুর কাছে জমা দিয়েছেন।

পরে প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবু বলেন, “আমি দু’জনের সঙ্গেই কথা বলেছি। ওঁরা নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন। শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে এটুকু বলতে পারি, দল বিষয়টিকে লঘু ভাবে দেখছে না।” মুকুলবাবুর বক্তব্যও যথেষ্ট কড়া। ফলে, মলয়বাবুর মতো কৃষ্ণেন্দু-সাবিত্রীর বিরুদ্ধে দল কঠোর কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে বলেই তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা রয়েছে। তবে হাওড়ায় ফল গতবারের তুলনায় ভাল হওয়ায় কৃষিবিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের হাতে কৃষি দফতরও তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মৌখিক ভাবে সে কথা অরূপবাবুকে জানিয়েও দিয়েছেন। মলয়বাবুর হাতে এত দিন কৃষি দফতর ছিল।

কিন্তু তাঁকে সরিয়ে দেওয়ায় কৃষি দফতর সাময়িক ভাবে হাতে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

অরূপবাবুর হাতে কৃষি দফতর তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট ভাল ফলের জন্য পুরস্কার এবং দলবিরোধী কাজের জন্য তিরষ্কার, এই নীতিই মেনে চলতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

krishnendu savitri mamata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE