Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Ration Card

Ration card: ১ কোটি ৭০ লক্ষ রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করল রাজ্য! বাঁচবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা

প্রশাসনিক মহলের খবর, চলতি আর্থিক বছরে (২০২১-২২) খাদ্যসাথী এবং দুয়ারে রেশন প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দের থেকে প্রায় ২৯৭৮ কোটি টাকা বেশি খরচ করতে হয়েছে সরকারকে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২২ ০৮:০১
Share: Save:

খরচ সামলাতে রাজ্য সরকারের প্রায় নাজেহাল দশা। আগামী অর্থবর্ষের বাজেটে তাই কার্যত ব্যয় সঙ্কোচের পথেই হেঁটেছে নবান্ন। এই পরিস্থিতিতে রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বার্ষিক প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বাঁচানো যাবে বলে খবর। সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বাঁচবে। চলতি বছরেই নিষ্ক্রিয় রেশন কার্ডের সংখ্যা আড়াই কোটি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বাঁচতে পারে।
প্রশাসনিক মহলের খবর, চলতি আর্থিক বছরে (২০২১-২২) খাদ্যসাথী এবং দুয়ারে রেশন প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দের থেকে প্রায় ২৯৭৮ কোটি টাকা বেশি খরচ করতে হয়েছে সরকারকে। তাই রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়ার ফলে যে খরচ বাঁচবে, তাতে সেই অতিরিক্ত খরচ বাজেট বরাদ্দের গণ্ডিতেই বেঁধে ফেলা যাবে। প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করলে কার্ড পুরোপুরি বাতিল হবে না। অনলাইন বা অফলাইনে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা নিজের অস্তিত্ব দাবি করলেই কার্ড পুনরায় সক্রিয় হবে। কিন্তু ভুয়ো বা মৃত মানুষেরা সেই প্রমাণ দিতে পারবেন না। তার ফলে দুর্নীতি ঠেকানো যাবে।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “সাম্প্রতিক বাজেট অধিবেশনে অতিরিক্ত খরচ বিধানসভায় পাশ করানো হয়েছে। তবে বাতিলযোগ্য রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করে যে টাকা বাঁচানো যাচ্ছে, তার সঙ্গে কার্যত মিলে যাচ্ছে খাদ্যসাথী এবং দুয়ারে রেশনে অতিরিক্ত খরচের পরিমাণ। তাই মনে করা যায়, খরচ বাঁচানো গেলে অতিরিক্ত খরচেও রাশ টানা সম্ভব হবে। ন্যায্য উপভোক্তার যাচাই এখন অনেক প্রকল্পেই শুরু হয়েছে।”
প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, সব খরচ এবং ভর্তুকি মিলিয়ে এক কেজি চালের জন্য রাজ্যের খরচ হয় প্রায় ২৮ টাকা। সেই অনুপাতে, বিনামূল্যের রেশন পরিষেবার খরচ বিপুল। কার্ড নিষ্ক্রিয় করে খরচের বোঝা কমলে প্রকল্পের স্থায়িত্ব এবং গুণগত মান বাড়বে। প্রসঙ্গত, বিধানসভায় সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন খাতে ২০২১-২২ আর্থিক বছরে বাজেট বহির্ভূত ২০,৭৫১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় (এর মধ্যে খাদ্যসাথী এবং দুয়ারে রেশনের ব্যয়ও রয়েছে) করতে হয়েছে। তার জন্য যে ঋণ নিতে হয়েছে, তার সুদের পরিমাণ প্রায় ৪৫৬৬ কোটি টাকা।
রেশনের বরাদ্দ বেহাত হওয়া ঠেকাতে ইতিমধ্যে বায়োমেট্রিক-এ আঙুলের ছাপ দিয়ে রেশন নেওয়ার পদ্ধতি চালু রয়েছে। এতে প্রকৃত উপভোক্তার চিহ্নিতকরণ হচ্ছে। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮ কোটি উপভোক্তার ডিজিটাল রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যুক্ত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি পরিবারের ফোন নম্বর যুক্ত হয়েছে কার্ডের সঙ্গে। তাতে রেশনের নানা তথ্য উপভোক্তার মোবাইলে যাচ্ছে। সম্প্রতি কোন পরিবার কত পরিমাণে রেশন পাওয়ার যোগ্য তা-ও মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে জানাচ্ছে খাদ্য দফতর। এতে রেশন পরিষেবা আরও স্বচ্ছ হবে বলে দফতরের দাবি। খাদ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “আমাদের আবেদন, যাঁরা এখনও নিজের রেশন কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর যোগ করেননি, তাঁরা সেটি দ্রুত করিয়ে নিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ration Card Food Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE