বেড়েই চলেছে ছুটির বহর!
এ বারের পুজোয় রাজ্য সরকারি অফিসে টানা ১১ দিন ছুটি থাকছে জেনে যাঁদের চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল, আগামী বছরের কথা শুনলে তাঁদের চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। নবান্নের খবর, ২০১৭ সালে দুর্গাপুজোর যে-নির্ঘণ্ট রয়েছে, তাতে সরকারি কর্মীদের ১৩ দিন ছুটি নিশ্চিত। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সঙ্কেত দিলে সংখ্যাটা বেড়ে ১৬ দিন হয়ে যাবে!
১১ অক্টোবর দশমীর রাত পেরোতেই পরের বছরের পুজোর ছুটির এই হিসেব পৌঁছে গিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের কাছে। প্রত্যাশিত ভাবেই তাঁরা যারপরনাই আহ্লাদিত। এ বারের ১১ দিনের টানা ছুটির রেকর্ড ভাঙতে মুখ্যমন্ত্রীর একটু আনুকূল্য চান অনেকেই। কারও কারও সরস মন্তব্য, ‘‘৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাকি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই ছুটির সংখ্যা বাড়িয়ে সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টায় কোনও রকম ঘাটতি রাখবেন না!’’
পঞ্জিকা-মতে, ২০১৭ সালে পুজো পড়েছে সেপ্টেম্বরে। ১৯ সেপ্টেম্বর মহালয়, বোধন (ষষ্ঠী) ২৬শে, মঙ্গলবার। নবান্নের নিয়মে সে-দিন থেকেই সরকারি অফিসে ছুটি পড়ে যাচ্ছে। সেই ছুটি চলবে ৬ অক্টোবর, শুক্রবার লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন পর্যন্ত টানা ১১ দিন। পরের দু’দিন শনি-রবিবার থাকায় টানা ১৩ দিন ছুটি হয়ে যাচ্ছে।
কর্মীদের একাংশ বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, শনি-রবি সরকারি অফিস বন্ধ থাকে। সেই হিসেবে আগামী বছর ষষ্ঠীর এক দিন আগে ২৩-২৪ সেপ্টেম্বর পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। মাঝখানে ২৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার পঞ্চমীর দিন ছুটি দিতে হবে সরকারকে। তা হলেই সব মিলিয়ে ১৩ দিনের ছুটি গিয়ে দাঁড়াবে ১৬-য়। এখানেই মমতার মমত্বের ছোঁয়ার আশায় আছেন কর্মীদের বড় অংশ।
পঞ্চমীতে ছুটির রেওয়াজ চালু হয়েছে এ বারেই। এবং পঞ্চমী-ছুটির সেই সূচনা পর্বটাও রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ। গত ২ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের দিন রাজ্য সরকারি কর্মীদের অফিসে আসা বাধ্যতামূলক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল নবান্ন। এমনকী ধর্মঘটের আগে-পরে ছুটি নিলে তা-ও মঞ্জুর করা হবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ওই দিন অফিস না-আসার উপযুক্ত কারণ দেখাতে না-পারলে কর্মীদের চাকরিজীবন থেকে এক দিন বাদ চলে যাবে। রাজ্যের সেই বিজ্ঞপ্তির জেরে সরকারি অফিসে হাজির ছিল অন্যান্য দিনের থেকে বেশি (গড় ৯৮ শতাংশ)। এতে ‘খুশি’ হয়ে পঞ্চমীর দিন ছুটি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
কর্মীদের আশা, যা (পঞ্চমীতে ছুটি) এক বার চালু হয়ে গিয়েছে, তা কিছুতেই বাদ দেবেন না মুখ্যমন্ত্রী। রেওয়াজটা চালিয়ে নিয়ে যেতে আগামী বারেও নিশ্চয় পঞ্চমীর দিন ছুটি থাকবে। তাই টানা ১৬ দিন ছুটি এখন থেকেই তাঁদের হাতছানি দিচ্ছে।
শুধু পঞ্চমী বলে পঞ্চমী নয়, মমতার আমলে নবান্নের ক্যালেন্ডারে বার্ষিক ছুটির সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। মহার্ঘ ভাতার বকেয়া বৃদ্ধির সঙ্গে ছুটির সমানুপাতিক বৃদ্ধির তুলনা করে রসরসিকতাও ক্রমবর্ধমান। সরকারি কর্মীদের মধ্যে এখন চালু রসিকতা হল, ‘‘দিদি ডিএ দিতে না-পারুন, ছুটি দিতে কার্পণ্য করেন না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy