ধৃত: পুলিশের জালে। নিজস্ব চিত্র
ব্যক্তিগত মেল আইডি তৈরি করে বেআইনি ভাবে দূরপাল্লার ট্রেনের রিজার্ভেশন টিকিট বিক্রির একটি চক্রের হদিস পেল আরপিএফ।
শনিবার সন্ধ্যায় বনগাঁ আরপিএফ ও আরপিএফের শিয়ালদহ শাখার ক্রাইম ইন্টেলিজেন্ট ব্রাঞ্চ যৌথ অভিযান চালিয়ে হাবড়া থেকে ওই চক্রের তিন পান্ডাকে গ্রেফতার করল। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় রেলওয়ে আইনের ১৪৩ ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরপিএফ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বিজয়কুমার দাস, সঞ্জীবন ঘোষ ও কৃষ্ণপদ দাস। তাদের বাড়ি হাবড়া থানার শ্রীনগর এলাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে পুরনো ও নতুন টিকিট মিলিয়ে প্রায় ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক রিজার্ভেশন স্লিপ বা টিকিট উদ্ধার করা হয়েছে।
আরপিএফ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আস্থা’ নামে ট্র্যাভেল এজেন্সি রয়েছে বিজয়ের। সঞ্জীবনের ট্র্যাভেল এজেন্সির নাম ‘উড়ান’ দূরপাল্লার রিজার্ভেশন টিকিট কাটার জন্য তাদের ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশনের (আইআরসিটিসি) বৈধ অনুমতি আছে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, ওই দু’টি ট্র্যাভেল এজেন্সিকে আইআরসিটিসি থেকে টিকিট বিক্রির জন্য একটি করে নির্দিষ্ট আইডি দেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, ওই আইডি ব্যবহার করেই তারা টিকিট কেটে বিক্রি করতে পারে। কিন্তু তারা ওই আইডি ছাড়াও বিভিন্ন নামে ব্যক্তিগত আরও গোটা পঞ্চাশ আইডি তৈরি করে টিকিট কেটে বিক্রি করছিল বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এ জন্য বেশি টাকাও আদায় করা হত গ্রাহকদের কাছ থেকে। যা বেআইনি।
সম্প্রতি আরপিএফ এই খবর জানতে পারে। বনগাঁ আরপিএফ ইন্সপেক্টর বিজয়ানন্দ দুবের নেতৃত্বে শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ হাবড়া স্টেশন এলাকার ওই দু’টি অফিসে তল্লাশি শুরু হয়। ৬ ঘণ্টা তল্লাশির পরে আরপিএফ ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে। প্রচুর পুরনো ও নতুন টিকিট উদ্ধার হয়। যা ব্যক্তিগত আইডির মাধ্যমে কাটা হয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের।
আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো টিকিটে যাত্রীরা ভ্রমণ করে ফেলেছেন। নতুন টিকিটগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফলে ওই টিকিট যাঁরা কেটেছিলেন, তাঁরা আর ওই টিকিটে ট্রেনে চাপতে পারবেন না।
ধৃতেরা আরপিএফকে জানিয়েছে, তারা বছর পাঁচেক ধরে রেলের টিকিট বিক্রির কাজের সঙ্গে যুক্ত। বছর দেড়েক হল বেআইনি টিকিট কাটা ও বিক্রির ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল। বিজয় বলে, ‘‘ব্যক্তিগত আইডি থেকে এক একটি টিকিট বিক্রি করে লাভ হয় ৫০-১০০ টাকা। রেলের দেওয়া আইডি থেকে একটির বেশি তৎকাল টিকিট দেওয়া যেত না। কিন্তু মানুষের চাহিদা অনেক বেশি। তাই আমরা ব্যক্তিগত আইডি বানিয়ে মানুষকে টিকিট দিয়ে সাহায্য করতাম। কাজটা যে এতটা বেআইনি, তা এখন বুঝতে পারছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy