Advertisement
E-Paper

হাবড়া লোকালেও সিট দখল, ধৃত ৬

সিট দখলের প্রবণতা দেখা গেল মহিলা কামরার যাত্রীদের একাংশের মধ্যেও। বুধবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে হাবড়া স্টেশনে দাঁড়ানো হাবড়া লোকালের মহিলা কামরাতেও দেখা গেল, প্লাস্টিকের ব্যাগ, রুমাল দিয়ে তিনটি জায়গা রাখা। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে জানলায় মুখ রেখে প্রশ্ন করা হল, যাত্রী কোথায়? কার জন্য সিট রাখা হয়েছে?

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:১১
নিরুত্তাপ: হাবড়া লোকালে মহিলা কামরায় আসন দখল চলছে বছরের পর বছর। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নিরুত্তাপ: হাবড়া লোকালে মহিলা কামরায় আসন দখল চলছে বছরের পর বছর। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সিট দখলের প্রবণতা দেখা গেল মহিলা কামরার যাত্রীদের একাংশের মধ্যেও। বুধবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে হাবড়া স্টেশনে দাঁড়ানো হাবড়া লোকালের মহিলা কামরাতেও দেখা গেল, প্লাস্টিকের ব্যাগ, রুমাল দিয়ে তিনটি জায়গা রাখা। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে জানলায় মুখ রেখে প্রশ্ন করা হল, যাত্রী কোথায়? কার জন্য সিট রাখা হয়েছে?

উল্টো দিকের সিটে বসে থাকা এক প্রৌঢ়া প্লাস্টিকের ব্যাগে হাত ছুঁইয়ে জানালেন, ‘‘তুলে নিচ্ছি। একটি মেয়ে আসবে। মেয়েটি বারাসতে যাতায়াত করে। ওর জন্য সিট রেখেছিলাম।’’ এ ভাবে সিট রাখা বেআইনি, জানেন না? প্রৌঢ়ার পাশে বসা এক তরুণী ঝাঁঝিয়ে উঠে বললেন, ‘‘আপনি বসবে নাকি এখানে?’’ মহিলা কামরায় বসতে যাব কেন? প্রশ্ন শুনে তরুণীর পাল্টা জবাব, ‘‘তা হলে কথা না বাড়িয়ে চুপ করুন।’’ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ছেড়ে চলে গেল। ব্যাগ-রুমাল থেকে গেল সিটেই।

হাবড়া-শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে যাঁরা যাতায়াত করেন, তাদের কাছে এমন অভিজ্ঞতা অবশ্য নতুন নয়।

এ দিন সকালে হাবড়া প্ল্যাটফর্মে গিয়ে দেখা গেল, শুধু মহিলা কামরায় নয়, সাধারণ কামরাতেও একই ছবি। কামরায় উঠে দেখা গেল, রুমাল- ছোট ব্যাগ-খবরের কাগজ দিয়ে সিট রাখা হয়েছে। কারা রেখেছেন সিট? প্রশ্নের উত্তর মিলল না। জানলার পাশে বসেছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর পাশের তিনটি সিট দখল করা ছিল। ওই ব্যক্তি জানালেন, কেউ একজন এসে এ সব রেখে চলে গিয়েছে।

যাত্রীরা জানালেন, সকালের দিকে ট্রেন ধরতে এসেও অনেক সময় সিটে লোক না থাকলেও জায়গা মেলে না। অনুরোধ, প্রতিবাদ করলেও কোনও লাভ হয় না।

অশোকনগরের বাসিন্দা শিপ্রা চন্দ নামে এক মহিলা বললেন, ‘‘একদিন সকালে হাবড়া থেকে ট্রেনে উঠেছিলাম। আমার দুই হাঁটুতে সমস্যা। মহিলা কামরায় উঠে দেখি, চারজনের সিটে তিনজন এমন ভাবে বসে, অন্যজনের আর বসার সুযোগ নেই। অনুরোধ করলেও কেউ সরে বসেনি। পরে দেখলাম, ওদের এক পরিচিত মহিলা ট্রেনে উঠতেই তাকে বসতে দেওয়া হল।’’

সকালের দিকে বনগাঁ লোকালের পাশাপাশি হাবড়া লোকালেও একই সমস্যা। যাঁরা সিট রাখেন, এমন এক নিত্যযাত্রীর যুক্তি, ‘‘দিনের বেশির ভাগ সময়টা আমাদের ট্রেনেই যাতায়াতে কেটে যায়। তাই না বসে পারি না। ক্লান্ত হয়ে পড়ি। সে কারণেই সিট রাখা হয়।’’ তাঁর দাবি, কোনও যাত্রী এসে বসতে চাইলে তাঁকে বসতে দেওয়া হয়।

তবে বনগাঁ লোকালে সিট দখলের খবর টুইট মারফত পেয়ে যেমন নড়ে বসেছে সেখানকার আরপিএফ, জিআরপি, হাবড়াতেও বুধবার অভিযান চলেছে দখলদার তুলতে।

এ দিন সকাল ৮টা ৫২ মিনিটের হাবড়া-শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনের কামরায় আরপিএফ অভিযান চালিয়েছে। বেআইনি ভাবে সিট দখলের অভিযোগে হাবড়ায় ট্রেনের কামরা থেকে ৬ জনকে গ্রেফতারও করেছে তারা। উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু রুমাল, ব্যাগ, জলের বোতল। বুধবারও বনগাঁ লোকালে জিআরপি নজরদারি চালিয়েছে।

এ বার হাবড়া লোকালেও অভিযান শুরু হওয়ায় খুশি বহু মানুষ। নিয়মিত এমন অভিযান চলা দরকার বলে মত তাঁদের। জিআরপির এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন থেকে নিয়মিত অভিযান জারি থাকবে।’’

Train Seat Grabbing Arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy