E-Paper

ডুবে যাওয়া শিশুকে তুলে পুকুরপাড়ে ঝাড়ফুঁক, মৃত্যু

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে আনিস কোনও ভাবে পুকুরে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে জল থেকে তাকে উদ্ধার করেন বাড়ির লোকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

সকলের অলক্ষ্যে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে গিয়েছিল ১ বছর ৪ মাসের একটি শিশু। জল থেকে তোলার পরে চলল ঝাড়ফুঁক। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ বাদে চিকিৎসক ডাকা হল। তারপরে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তীর চরাবিদ্যা পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর পেটুয়াখালি গ্রামে। মৃতের নাম আনিস মোল্লা।

ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ওই গ্রামের মানুষ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন থাকার কারণেই শিশুটির প্রাণ গেল। একই অনুমান পুলিশেরও। ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাসন্তী থানার পুলিশ। শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে তারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে আনিস কোনও ভাবে পুকুরে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে জল থেকে তাকে উদ্ধার করেন বাড়ির লোকেরা। তাঁদের দাবি, নিস্তেজ হয়ে পড়লেও তখনও দেহে প্রাণ ছিল। তবে, উদ্ধারের পরে তাকে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পুকুরপাড়েই নানা ধরনের ঝাড়ফুঁক, তুকতাক চলতে থাকে। শিশুটির পেট থেকে জল বের করতে নানা ধরনের কারসাজি চলে।

কিন্তু, কিছুতেই কিছু না হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পরে এক গ্রামীণ চিকিৎসককে ডেকে আনা হয়। তিনি এসে চিকিৎসা শুরু করতেই মৃত্যু হয় ওই শিশুর। পরে তাকে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। তাঁরা জানান, উদ্ধারের পরে দ্রুত হাসপাতালে আনা গেলে বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত। ঘটনার খবর পেয়ে বাসন্তী থানার পুলিশ হাসপাতালে আসে। ঘটনাস্থলেও যায়।

আনিসের দাদু আজিজুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘‘গ্রামের ডাক্তারকে খবর দিয়েছিলাম। উনি আসতে দেরি করায় আমরা পুকুরে ঘোরানো, জল বের করার জন্য কিছু কাজকর্ম করেছি। এরপর ডাক্তার এসে অক্সিজেন দিতেই মারা যায় নাতি।’’ বিজ্ঞান সংস্থার কর্মী বিনয় সাধুখাঁ বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এর আগেও বাসন্তী, ক্যানিং, কুলতলি এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বারে বারে এ নিয়ে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু টনক নড়েনি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

basanti

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy