স্ত্রীকে সন্দেহ করত স্বামী। অভিযোগ, অন্য পুরুষের সঙ্গে স্ত্রী গোপনে সম্পর্ক রাখেন, এমন অপবাদও সে একাধিক বার দিয়েছে আত্মীয়দের কাছে। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির শোয়ার ঘর থেকে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার হল জ্যোৎস্না মণ্ডল (৪৫) নামে ওই মহিলার দেহ। তাঁকে খুনের অভিযোগে স্বামী উজ্জ্বল মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের হালিশহরের ভূতবাগান এলাকায়। এ দিন উজ্জ্বলকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অপরাধ কবুল করেছে অভিযুক্ত।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, এ দিন ভোর থেকে সকালের মধ্যে কোনও এক সময়ে স্ত্রীর শোয়ার ঘরের চালের টালি সরিয়ে ভিতরে ঢুকেছিল উজ্জ্বল। এর পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর গলা কাটে সে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বলকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, জ্যোৎস্না ও উজ্জ্বলের বনিবনা ছিল না দীর্ঘদিন। পেশায় ভ্যানচালক উজ্জ্বল একা থাকত। সন্তান ও পরিজনদের সঙ্গে থাকতেন জ্যোৎস্না। ওই দম্পতির ছোট মেয়ে কোয়েল মণ্ডল বলেন, ‘‘মা-বাবার মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। মাকে সব সময়ে সন্দেহ করতেন বাবা। আত্মীয়দের কাছে মায়ের সম্পর্কে কুকথা বলতেন।’’ মৃতার পরিবারের অন্যেরাও জানান, আত্মীয়দের সঙ্গে স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে কুৎসা রটাত উজ্জ্বল। এ নিয়ে তার সঙ্গে জ্যোৎস্নার আগেও বচসা হয়েছে।
এ দিন সকালে ঘরে ঢুকে জ্যোৎস্নার গলা কাটা দেহ দেখে থানায় খবর দেন পরিবারের লোকেরা। মৃতার পুত্রবধূ পূজা মণ্ডল বলেন, ‘‘সকালে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাইনি। এর পরে ঘরে ঢুকে শাশুড়িকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে হকচকিয়ে যাই। টালি খোলা দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম, ঘরে বোধহয় চোর ঢুকেছে। দরজা ঠেলে ঢুকে দেখি, রক্তে বিছানা ভেসে যাচ্ছে।’’
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের উপ-নগরপাল গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে স্বামীকে আমরা ধরেছি। অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)