Advertisement
০২ মে ২০২৪
Sandeshkhali Violence

সন্দেশখালিতে রাজ্য মহিলা কমিশন, রওনা দিয়েছেন রাজ্যপাল বোসও, এলাকায় চলছে সিপিএমের ধর্মঘট

গত কয়েক দিন ধরে সন্দেশখালিতে শাহজাহান, শিবু, উত্তমদের গ্রেফতারির দাবিতে যে বিক্ষোভ চলছে, রবিবার সেই সূত্রে বাঁশদ্রোণী থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে।

Bandh called by CPM has partly hit Sandeshkhali

সোমবার সকালে শুনশান সন্দেশখালির রাস্তাঘাট। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:০৫
Share: Save:

সন্দেশখালিতে সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দার গ্রেফতার হওয়ার পর সোমবার ১২ ঘণ্টার জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই ধর্মঘটের প্রভাব দেখা গেল সকাল থেকেই। সন্দেশখালির রাস্তাঘাট সোমবার শুনশান। অন্যান্য দিনের তুলনায় দোকানপাট কম খুলেছে। লোকজন রাস্তায় বেরোচ্ছেনও কম। ফেরিঘাটে নৌকা চলছে, তবে যাত্রীর সংখ্যা প্রায় হাতেগোনা।

রাজ্য মহিলা কমিশন সকালেই সন্দেশখালিতে পৌঁছে গিয়েছে। রয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এলাকা ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। আবার, সকালে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও রওনা দিয়েছেন সন্দেশখালির পথে।

এমনিতে সন্দেশখালির কিছু অংশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। জমায়েত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। তাই গত কয়েক দিনে গ্রামের রাস্তাঘাটে লোকজন কম বেরোচ্ছেন। সোমবার তার দোসর হয়েছে বন্‌ধ। তাই এলাকা শুনশান।

গত কয়েক দিন ধরে সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখ, শিবু সর্দার, উত্তম হাজরাদের গ্রেফতারির দাবিতে যে বিক্ষোভ চলছে, রবিবার সেই সূত্রে বাঁশদ্রোণী থেকে গ্রেফতার করা হয় সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে। দীর্ঘ ক্ষণ বাঁশদ্রোণী থানায় আটকে রাখার পর দুপুর নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট থানায়। প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান সিপিএম কর্মী, সমর্থকেরা। তার পর সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার জেলা কমিটির সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লকে সোমবার ১২ ঘণ্টার জন্য বন্‌ধ ঘোষণা করেন। সিপিএমের দাবি, নিরাপদ-সহ যে সব ‘নিরাপরাধ’দের গ্রেফতার করছে পুলিশ, তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।

উল্লেখ্য, উত্তম হাজরাকে ইতিমধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আরও যে দু’জনের গ্রেফতারির দাবিতে গত তিন দিন বিক্ষোভে উত্তপ্ত থেকেছে সন্দেশখালি, সেই শিবু এবং শাহজাহানকে এখনও ধরা যায়নি। শিবু ১১৭ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ভাঙচুর এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই এফআইআরের ভিত্তিতে রবিবার গ্রেফতার করা হয় নিরাপদকে। তাঁর বিরুদ্ধে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যদিও নিরাপদ দাবি করেছেন, যে সময়ে সন্দেশখালিতে অশান্তি হয়েছে, সে সময়ে তিনি এলাকার বাইরে ছিলেন।

সোমবার সন্দেশখালিতে যাচ্ছেন রাজ্যপাল বোস। রওনা দেওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘‘আমি বাইরে ছিলাম। সন্দেশখালির খবর পেয়ে কাজ ফেলে এখানে চলে এসেছি। এখন নিজে সেখানে যাচ্ছি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে।’’

শাহজাহান, শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে সন্দেশখালির গ্রামবাসীদের একাংশ অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, গ্রামে জমি জবরদখল করে মাছের ভেড়ি, পোলট্রি ফার্ম বানিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতারা। জোর করে গ্রামবাসীদের দিয়ে নানা কাজ করিয়ে নেওয়া হয়। পরিবর্তে প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। দীর্ঘ দিনের চাপা ক্ষোভ থেকেই শিবুর ফার্ম, বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। তাঁদের গ্রেফতারির দাবিতে ঘেরাও করা হয় থানা। এই পরিস্থিতিতে সোমবারই সন্দেশখালিতে যাওয়ার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি বিধায়কেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE