মিড-ডে মিলের মান পরীক্ষা করছেন বিডিও। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে ছাত্রছাত্রীর হাজিরা মেরেকেটে পাঁচ জন। সেখানে প্রায় ৬০ জন বাচ্চার জন্য মিড ডে মিলের বরাদ্দ দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
বিডিওর আচমকা পরিদর্শনে (সারপ্রাইজ় ভিজ়িট) ধরা পড়ল এমনই চিত্র।
ক্যানিং ২ ব্লকের কালুয়াখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। শুধু এই স্কুল নয়, ক্যানিং ২ ব্লকের নবপল্লব শিশুবিকাশ কেন্দ্র, যোগেন্দ্রনগর কোকোপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, জীবনতলার ইংরেজি মডেল মাদ্রাসা সহ বেশ কয়েকটি স্কুলের মিড ডে মিলের অনিয়ম সামনে এসেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে ক্যানিং ২ বিডিও ওয়ারশিদ খান ওই সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের শো-কজ় লেটার দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কালুয়াখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আসলে আমাদের স্কুলে অনেক বাচ্চাই প্রার্থনার পরে আসে। তা ছাড়া, মিড ডে মিলের রান্না শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক সময়ে বাচ্চারা আসে। ফলে হাজিরা না দেখে অনেক সময়ে রান্না চাপিয়ে দিতে হয়। এ কারণে অনেকটা সমস্যা তৈরি হয়। বিডিও স্কুল পরিদর্শনে আসার পরে আমরা তাঁকে সমস্যার কথা জানিয়েছি।’’
বিডিও সম্প্রতি স্কুলে ‘সারপ্রাইজ় ভিজ়িট’-এর একটি দল তৈরি করেছেন। প্রতি দিন প্রায় নিয়ম করে তিনি এবং তাঁর দল বিভিন্ন স্কুলে যাচ্ছে। খাবারের গুণগত মান পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিডিও নিজেও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বসে মিড ডে মিলের খাবার খাচ্ছেন।
ক্যানিং ২ ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েত এলাকায় ১৬টি হাইস্কুল (উচ্চ মাধ্যমিক), ২৮টি জুনিয়র হাইস্কুল, ৩১টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, ৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১টি মাদ্রাসা রয়েছে। ব্লকের বেশিরভাগ স্কুলে সারপ্রাইজ় ভিজ়িটে নানা অনিয়মের চিত্র উঠে আসছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর। কোথাও চাল-ডাল চুরির ঘটনা সামনে এসেছে, কোথাও নিম্নমানের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে রান্না হচ্ছে বলে অভিযোগ, কোথাও আবার দৈনিক খাদ্যতালিকা অনুযায়ী মিড ডে মিল রান্না করা হচ্ছে না।
গত কয়েক দিন ধরে বিডিওর এ হেন পদক্ষেপ তটস্থ বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ব্লক এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘সরকার মিড ডে মিলের জন্য যে বরাদ্দ দেয়, তাতে বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া সম্ভব হয় না। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই অনেক সময়ে বাধ্য হয়েই কিছু অনিয়ম করতে হয়। কিন্তু বিডিও যে ভাবে চাপ দিচ্ছেন, শো-কজ় করছেন, তাতে আমরাও বেশ চাপে আছি।’’
বিডিও বলেন, ‘‘স্কুলে গিয়ে বাচ্চারা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায়, তা দেখার দায়িত্ব আমাদের। সরকার বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবারের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করছে। এর সঙ্গে কোনও রকম ভাবে আপোষ করা হবে না। অভিযান লাগাতার চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy