নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে সেই বিস্ফোরক। শুক্রবার, বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি যাতে আওয়াজ না হয়, তার জন্য নিষিদ্ধ হয়েছে শব্দবাজি। তা মানা দূরে থাক, উল্টে বাজির শব্দ বাড়াতে ব্যবহার হচ্ছিল নিষিদ্ধ বিস্ফোরক। শুক্রবার আদালতের নির্দেশে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে ৩৭০ কেজি এমন বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করল সিআইডির বম্ব স্কোয়াড।
বারাসত সংলগ্ন নীলগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরেই ঘরে-ঘরে বাজি তৈরি হয়। সুপ্রিম কোর্ট শব্দবাজি নিষিদ্ধ করার পরেও লুকিয়েচুরিয়ে শব্দবাজি তৈরি রোখা যায়নি। পুলিশি হানা, ধরপাকড় হয়। ফের নিজের চেহারায় ফেরে নীলগঞ্জ। বিস্ফোরণে বাজি কারখানার কর্মী, শিশুর মৃত্যুও ঘটেছে। তবে এই পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার এবং বম্ব স্কোয়াডের উপস্থিতিতে তা নিষ্ক্রিয় করার ঘটনা অতীতে হয়নি।
পুলিশ জানায়, ১৩ জুন নীলগঞ্জের নারায়ণপুরে কয়েকটি বাজি কারখানা থেকে ২৫০ কেজি উচ্চ শব্দমাত্রার চকোলেট বোমা এবং ১২০ কেজি বারুদ বাজেয়াপ্ত করে দত্তপুকুর থানা। গ্রেফতার হয় দু’জন। নিয়ম মাফিক বিস্ফোরক রাখা ছিল থানার মালখানায়।
কিন্তু অত্যন্ত দাহ্য ওই বিস্ফোরক মালখানায় থাকায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে পুলিশ। এই বিস্ফোরক অন্য কোথাও ফেলে দেওয়ারও বিধি নেই। নিস্ক্রিয় করতে গিয়ে ঘটেছে বিপত্তিও। দত্তপুকুর থানার আইসি বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের উপরে ভিত্তি করে বারাসত আদালত সিআইডির বম্ব স্কোয়াডকে ওই ৩৭০ কেজি বিস্ফোরক নিস্ক্রিয় করার নির্দেশ দেয়।
সেই মতো এ দিন কাজিপাড়া লাগোয়া একটি ফাঁকা মাঠে সমস্ত বিস্ফোরক আনা হয়। আদালতের নির্দেশেই উপস্থিত ছিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্মী এবং দমকল বাহিনী। বারাসতের এসডিপিও গণেশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে ছিল পুলিশও। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় সমস্ত বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করেন সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নীলগঞ্জ-সহ জেলার বিভিন্ন বাজি তৈরি কারখানায় এ ভাবেই দফায় দফায় হানা দেওয়া হবে। বেআইনি শব্দবাজি তৈরি করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।’’
প্রতিবছর কালীপুজো, দীপাবলির বাজার ধরতে বর্ষার আগে-পরে নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরির চল রয়েছে বাজি কারখানাগুলোয়। পুলিশের এই কড়াকড়ির পরে আদৌ তা বন্ধ হয় কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy