রঙ-রঙ্গ: সবজিতে চলছে রঙ করার কাজ। এটাই ‘নিয়ম’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বসিরহাটের বাজারে। ছবি: নির্মল বসু
গামলা, ড্রামে রাখা নীলচে বা সবুজ রঙের জল। তাতে চোবানো হচ্ছে পটল, উচ্ছে, লঙ্কা, কাঁকরোল। রঙিন জলে গা ভিজিয়ে উঠে ঝকঝকে তকতকে চেহারা পাচ্ছে আনাজেরা। ‘টাটকা’ বলে তা দিব্যি চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাকে।
স্বরূপনগরের হঠাৎগঞ্জ, বিথারি, শাঁড়াপুল, চারঘাট, বাদুড়িয়ার কেওটশা, রামচন্দ্রপুর, চাতরা-সহ বেশ কিছু হাটে গেলে চোখে পড়ে এই দৃশ্য। খুল্লমখুল্লাই চলে আনাজে রং ঢালার বেআইনি কারবার। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ জানালেন, তুঁতে বা আরও কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় এই কাজে। তাতে বাসি আনাজও টাটকা দেখায়।
স্থানীয় বাসিন্দা বরেন পাত্র, স্বপন মণ্ডল, ফজের আলির কথায়, ‘‘হাটবারের দিন বড় রাস্তার ধারে সকলের নাকের ডগাতেই এই কাণ্ড চলে। বেআইনি কারবার বন্ধে পুলিশ-প্রশাসন কোনও উদ্যোগী হয় না। এলাকার লোকজনও মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন।’’
তবে মাঝে মধ্যে ধরপাকড় যে একেবারে হয় না তেমনটা নয়। তা-ও জানালেন স্থানীয় মানুষ। তবে পুলিশ এলে গামলা-ড্রাম নিয়ে সরে পড়ে কারবারিরা। পুলিশ গটমট করে ঘুরে যায়। আর তারা পিছন ফিরলেই ফের শুরু হয় আনাজ রাঙানোর কারবার।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তুঁতের সঙ্গে রঙ মেশানো আনাজ অনেক দিন ধরে খেলে লিভারে প্রভাব পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এই রাসায়নিক শরীরে গেলে ক্যান্সার-সহ নানা অসুখ হতে পারে।
আরও পড়ুন: মাতলামোর প্রতিবাদ করায় মারধর দম্পতিকে
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গ্রামের চাষিরা এ কাজ করেন না। করেন বড় পাইকাররা। চাষিদের কাছ থেকে যাঁরা আনাজ কিনে অন্যত্র পাঠান। ব্যবসায়ীদের পক্ষে কমল পাত্র, ফকির আলি, সঞ্জিত জানা, ওয়াহাব গাজিদের বক্তব্য, দূরের শহরে পাঠানো আনাজ যাতে বাসি না দেখায়, সে জন্যই রঙ ও তুঁতে মেশানো জল ব্যবহার করা হয়। এর ফলে আনাজ পচে বা শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। টাটকা দেখায়।
স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি ঝুমা সাহা বলেন, ‘‘আনাজে তুঁতে এবং রঙ মেশানোর বিষয়টি চোখে পড়েছে। অভিযোগও আসছে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ বাদুড়িয়ার ওসি বাপ্পা মিত্র জানাসেন, ইতিমধ্যেই বাদুড়িয়া এলাকার হাট-বাজারে আনাজে রাসায়নিক বা রং যাতে না মেশানো হয়, তা নিয়ে প্রচার করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে, এমন নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবসায়দের গ্রেফতারও করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy