বাঁধের ধারে ঝুঁকির সংসার। —নিজস্ব চিত্র।
সামনেই ভরা কোটাল। সুন্দরবন এলাকার নদীগুলিতে জল বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ হিঙ্গলগঞ্জের মালোপাড়া এলাকার ইছামতী নদীর বাঁধের অবস্থা বেশ খারাপ। দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করা না হলে বাঁধ ভেঙে ব্লক অফিস, থানা-সহ মালোপাড়া এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় মানুষ। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, ‘‘বাঁধ মেরামতির জন্য ইতিমধ্যেই সেচ দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে তাঁরা কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।’’
মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জের ইছামতীর অন্য দিকে বাংলাদেশে সাথক্ষিরার কালীগঞ্জ, বসন্তপুর। সে কারণে নদী-সংলগ্ন মালোপাড়ায় বাঁধের উপরে ইট বসানো রাস্তা সীমান্তরক্ষী এবং পুলিশের কাছে অবস্থানগত ভাবে বাড়তি গুরুত্ব রাখে। তা ছাড়া, ওই রাস্তা দিয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় মালোপাড়ার ছেলেমেয়েদের। সম্প্রতি মালোপাড়ায় আড়াশো মিটারের মধ্যে দু’জায়গায় ইছামতীর বাঁধে বড় ধস নামে। একটি জায়গায় মেরামতির কাজ কারা করবে, তা নিয়ে পঞ্চায়েত ও সেচ দফতরের টালবাহানায় কিছুটা সময় নষ্ট হয়। পরে সেচ দফতরের তরফে কাজ শুরু হলেও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে রাস্তা-সহ বাঁধের বড় অংশ নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। সেখানে এখনও মেরামতির কাজ শুরুই হয়নি।
এ দিন এলাকায় গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মালোপাড়ার মানুষজন। পাড়ায় প্রায় দেড়শো পরিবারের বাস। রামকৃষ্ণ বিশ্বাস, উর্মিলা হালদার, ঝর্না ঘোষরা বললেন, ‘‘এখানে দু’জায়গায় বাঁধের যা অবস্থা, তাতে ভাল মতো মেরামতির কাজ না হলে যে কোনও মুহূর্তে আমাদের ঘর-বাড়ি নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। অথচ বারে বারে বলার পরেও একটা জায়গায় কোনও রকমে বল্লার বদলে বাঁশ এবং দরমার উপরে মাটি ফেলে ঢাকা হয়েছে। অন্যটির ক্ষেত্রে তো তা-ও হয়নি। ফলে বাঁধের উপরে দিয়ে ইট পাতানো রাস্তার বেশিরভাগ তলিয়ে গিয়েছে।’’ প্রিয়া হালদার, শ্যামল মণ্ডল, ইন্দ্রজিৎ রায়রা জানালেন, ৮ ফুট চওড়া রাস্তা ২ ফুটে এসে ঠেকেছে। ওই রাস্তা দিয়ে আসার সময়ে দু’জন নদীতে পড়ে হাত ভাঙে।’’
এলাকায় নোনা জল ঢুকে প্লাবনের আশঙ্কা আছে বলে জানালেন হিঙ্গলগঞ্জ নাগরিক কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষও। তাঁর কথায়, ‘‘সামনেই ভরা কোটালে নদীর জল ফুলে-ফেঁপে উঠবে। তার আগে বাঁধ না সারাতে পারলে মানুষ বড় বিপদের মধ্যে পড়তে পারেন।’’ তাঁর দাবি, প্রশাসনের নানা স্তরে সমস্যার কথা জানিয়েও এখনও বিশেষ লাভ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy