‘‘আয়ের শংসাপত্র নিতে এসেছেন, বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে?’’
কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েতে সরকারি পরিষেবা নিতে এসে এ রকমই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে অনেককে। কারণ যাঁরা এখনও নিজের বাড়িতে শৌচাগার বানাননি, তাঁদের প্রতি কড়া হতে শুরু করেছে এই পঞ্চায়েত। সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাড়িতে শৌচাগার থাকলে সরকারি পরিষেবায় অগ্রাধিকার মিলবে।
ওই পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে উন্মুক্ত শৌচবিহীন করার লক্ষ্যে এ রকম উদ্যোগ আগে করা হয়নি। প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবব্রত মাইতি বলেন, ‘‘আমরা আলাদা করে সমীক্ষা করেছি। তাতে যাঁরা সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়িতে তৈরি শৌচাগারে শৌচক্রিয়া করছেন, তাঁদের বাড়িকে নম্বর-সহ ‘নির্মল বাড়ি’র বোর্ড দেওয়া হচ্ছে। সেই বোর্ড থাকলে সরকারি পরিষেবায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, বাড়ির সামনের রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, আলোর ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শংসাপত্র, নানা অনুদান— সব কিছুর প্রাথমিক মাপকাঠি, বাড়িতে শৌচাগার থাকা। ওই পঞ্চায়েতের কর্তারা জানান, আর্থিক সামর্থ্য থাকলেও বাড়িতে শৌচাগার বানাননি, এ রকম পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়া, বাড়িতে শৌচালয় থাকলেও যাঁরা সেটি ব্যবহার না করে বাইরে শৌচকর্ম করছেন, তাঁদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে।
কাকদ্বীপের বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করাটাই শেষ নয়। মানুষের বাইরে শৌচকর্মের অভ্যাস ছাড়াতে চাই নিয়মিত নজরদারি।’’ তিনি জানান, কাকদ্বীপ ব্লকের প্রতিটি এলাকায় পাড়া নজরদারি কমিটি তৈরি হয়েছে। তাঁরা ঘুরে ঘুরে বাইরের খোলা মাঠে প্রাতঃকৃত্য করতে নিষেধ করছেন। শীতের ভোরেও সেই নজরদারি চলছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ মহকুমার মধ্যে সাগর এবং পাথরপ্রতিমা ব্লককে ইতিমধ্যেই পুরোপুরি ‘উন্মুক্ত শৌচবিহীন’ বলে ঘোষিত হয়েছে। সেই তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে কাকদ্বীপ এবং নামখানা ব্লক। কাকদ্বীপ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও প্রায় ১২০০টি শৌচাগার তৈরি বাকি। ডিসেম্বরের মধ্যে সেই কাজ শেষ হওয়ার কথা। প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েত নিজেদের উদ্যোগে পঞ্চায়েত এলাকাকে ‘নির্মল’ করার উদ্যোগ নিলেও ব্লকের বাকি পঞ্চায়েতগুলিতে সেই উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy