Advertisement
E-Paper

মাদ্রাসা ভোটে অশান্তি বাগদায়

মাদ্রাসা নির্বাচনকে ঘিরে বাগদা ব্লকে রবিবার দু’পক্ষের মারপিট বাধল। পুলিশকে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। দিনের শেষে তৃণমূলের এক পক্ষ সব ক’টি আসনে জয়ী হয়েছে বলে দলেরই একটি সূত্রের দাবি। যদিও জয়ী প্রার্থীরা আসলে ‘সিপিএমের লোক’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের অন্য একটি অংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৫৬
পরিস্থিতি সামলাতে হাজির বিশাল পুলিশ বাহিনী। লাঠিও চালাতে হয়েছে তাঁদের।—নিজস্ব চিত্র।

পরিস্থিতি সামলাতে হাজির বিশাল পুলিশ বাহিনী। লাঠিও চালাতে হয়েছে তাঁদের।—নিজস্ব চিত্র।

মাদ্রাসা নির্বাচনকে ঘিরে বাগদা ব্লকে রবিবার দু’পক্ষের মারপিট বাধল। পুলিশকে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। দিনের শেষে তৃণমূলের এক পক্ষ সব ক’টি আসনে জয়ী হয়েছে বলে দলেরই একটি সূত্রের দাবি। যদিও জয়ী প্রার্থীরা আসলে ‘সিপিএমের লোক’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের অন্য একটি অংশ। তৃণমূলের প্যানেলকে কেন সিপিএমের বলে দাবি করছে শাসক দলের একাংশ, তা নিয়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছে স্থানীয় স্তরে। দলের অন্দরের কোন্দলে ‘বীতশ্রদ্ধ’ বাগদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তুলসি বিশ্বাস এ দিন গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে দূরেই রেখেছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাদপুকুরিয়া এসএস মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির পরিচালন সমিতির ভোট ঘিরে স্থানীয় তৃণমূলের দু’টি পক্ষের মধ্যে কিছু দিন ধরেই রেষারেষি চলছিল। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেও পিছিয়ে দেন। যার প্রতিবাদে এক গোষ্ঠী মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। পরে ভোটের দিন ঠিক হয় রবিবার।

ভোটের জন্য দু’টি প্যানেল জমা পড়ে। দু’পক্ষই নিজেদের তৃণমূল বলে দাবি করে প্রচারে নামে। ছ’টি আসনের জন্য ভোটার ৩৪৬ জন। দিন কয়েক ধরেই প্রচার, পাল্টা প্রচারে সরগরম হয়ে উঠেছিল এলাকা। নির্বাচনে উত্তেজনা থাকায় এ দিন বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। গাইঘাটার সিআই পার্থ সান্যালের নেতৃত্বে জনা ষাটেক পুলিশ কর্মীকে মোতায়েন করা হয়। বাগদা থানার ওসি প্রসূন মিত্র, গোপালনগর থানার ওসি লিটন রক্ষিতরাও হাজির ছিলেন। গোটা এলাকা তৃণমূলের পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। অন্য কোনও দলের পতাকা এ দিন চোখেই পড়েনি।

সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। অভিযোগ, প্রথম দিকে সব ঠিকঠাক চললেও বেলা সাড়ে ১১টার পরে বেশ কিছু গাড়ি করে মাদ্রাসা চত্বরে লাঠি হাতে জড়ো হয় বেশ কিছু বহিরাগত। তারা মাদ্রাসার মধ্যে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দেওয়ারও চেষ্টা করে। দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট বেধে যায়। পুলিশ মৃদু লাঠি চালিয়ে এবং কিছু ক্ষেত্রে লাঠি উঁচিয়েই দু’পক্ষকে এলাকা ছাড়া করে। দু’পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের এনে গোলমাল পাকানো, গাড়ির কাচ ভাঙচুর, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ এনেছে।

বেলা ৩টে নাগাদ ভোট শেষ হয়। ভোট পড়ে ২৬৭টি। ভোট গণনার পরে দেখা যায়, বাগদার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দুলাল বর, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তরুণ ঘোষরা যে প্যানেলকে সমর্থন করেছিলেন, সেটিই সব ক’টি আসনে জয়ী হয়েছে। তরুণবাবু বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল করি। গ্রামের সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা প্যানেল দিয়েছিলাম। মতের অমিল থাকায় দু’টি প্যানেল জমা পড়ে। তবে গোলমাল না হলেই ভাল হতো। আমাদের কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। এখানে তৃণমূলই জয়ী হয়েছে।’’

বামেরা এখানে কোনও প্যানেলই দেয়নি। তবে ফরওয়ার্ড ব্লকের বাগদা ব্লক লোকাল কমিটির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, একটি প্যানেলকে সমর্থন করেছিলেন তাঁরা। এই সূত্রেই বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের শম্পা অধিকারীর দাবি, ভোটে সিপিএম বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের এনে তৃণমূলের উপরে হামলা করে ছাপ্পা দিয়ে অগণতান্ত্রিক ভাবে ভোটে জয়ী হয়েছে। যারা জিতেছে, তারা তৃণমূলের কেউ নয়। ওরা সিপিএমের লোক।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা বাগদার বাসিন্দা সুনীল কর বলেন, ‘‘আমরা ওই মাদ্রাসা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করিনি। আমাদের লোকজনকে ভোটদানে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। কাজেই ওখানে যা হয়েছে, তা তৃণমূলেরই দলীয় কোন্দল।’’

Bagda Group clash Trinamool Madrasha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy