এগিয়ে এলেন মহিলারা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
কারও হাতে কোদাল-কাস্তে। আবার কারও হাতে প্যাকেট ভর্তি ব্লিচিং পাউডার। কেউ কেউ চুনও ছড়াচ্ছেন। মশা মারতে স্প্রেও করছেন ওঁরা।
মশা মারতে সরকারি স্তরে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। তাই রবিবার সকালে নিজেরাই মশা নিধনের কাজে এগিয়ে এলেনা দেগঙ্গার মহিলারা।
দেগঙ্গা জুড়ে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। কিন্তু তবু পুরসভা থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সরকারি স্বাস্থ্যশিবিরের পরিষেবাও নেই গ্রামে।
রবিবার বেড়াচাঁপার অম্বিকানগর গ্রামে জ্বরের প্রকোপ রুখতে এক দল মহিলা নেমে পড়েন কোদাল-কাস্তে হাতে জঙ্গল সাফাইয়ের কাজে। ছোট ছোট মেয়েরা ব্লিচিং, চুন ছড়াতে থাকে বাড়ির আশপাশে। মশা মারতে বাড়িগুলির আনাচে-কানাচে স্প্রেও করা হতে থাকে। পাশাপাশি পাড়ার মানুষকে ডেঙ্গির সচেতনতার জন্য তাঁদের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচারও করা হচ্ছে। চন্দ্রিমা দাস নামে এক মহিলা জানান, শুক্রবার রাতে এই পাড়ায় মৃত্যু হয় দীপা সাধুখাঁ (২৩) নামে এক তরুণীর। শ্বশুরবাড়ি থেকে এখানে বাপের বাড়িতে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন দীপা। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘এরপরেও প্রশাস নের কোনও হেলদোল নেই। তাই আমরাই মশা মারার কাজে এগিয়ে এলাম।’’
গিলেবাড়ি গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে জ্বর। কিন্তু সরকারি কোনও স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন হয়নি সেখানে। এ দিন দেগঙ্গার গিলেবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছেসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছ’জন চিকিৎসককে বসানো হয়েছিল। এই স্বাস্থ্যশিবিরে সকাল থেকেই শিশু-সহ বহু মানুষের ভিড় হয়। প্রত্যেকেই জ্বরে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। শুধু গিলেবাড়ি নয়, দেগঙ্গার প্রত্যেকটি জায়গাতেই এখন স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন হওয়া উচিত বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কারণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক কম। রোগীর সংখ্যা বেশি। ফলে ঠিকমতো পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা সাকিলা বিবি বলেন, ‘‘স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছি। দীর্ঘ লাইন ঠেলে যখন চিকিৎসকের কাছে গিয়েছি। তখন তিনি কোনও রকনে শুনে কয়েকটি ওষুধ লিখে দিয়ে ছেড়ে দেন।’’
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আরও চিকিৎসক বাড়ানো উচিত বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তা হলেই ঠিকমতো পরিষেবা মিলবে এবং জ্বরের মোকাবিলা হবে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy