Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সাইকেল, বাইক ছেড়ে হেলমেটে নজর চোরেদের

হেলমেট গিয়েছে চুরি! মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, হেলমেট না পড়লে পেট্রোল দেওয়া যাবে না। তবে সেই নির্দেশ অমান্য করেই কয়েকটি পাম্পে হেলমেট ছাড়াই পেট্রোল মিলছিল। কিন্তু পুলিশ কড়া হওয়ায় সেই সুযোগ কমে আসছে। কিন্তু এ বার শুরু হয়েছে অন্য সমস্যা। হেলমেটের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে হেলমেট চুরি যাওয়ার অভিযোগ।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০১:৩৯
Share: Save:

হেলমেট গিয়েছে চুরি!

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, হেলমেট না পড়লে পেট্রোল দেওয়া যাবে না। তবে সেই নির্দেশ অমান্য করেই কয়েকটি পাম্পে হেলমেট ছাড়াই পেট্রোল মিলছিল। কিন্তু পুলিশ কড়া হওয়ায় সেই সুযোগ কমে আসছে। কিন্তু এ বার শুরু হয়েছে অন্য সমস্যা। হেলমেটের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে হেলমেট চুরি যাওয়ার অভিযোগ। কোথাও পেট্রোল পাম্পের ভেতর থেকে, কোথাও আবার ভরা বাজার থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে আস্ত হেলমেট !

বসিরহাট শহরের পাম্পকর্মীদের দাবি, পুলিশের নির্দেশ মেনে যাঁরা হেলমেট পড়ে আসছেন না, তাঁদের পেট্রোল না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁরা হেলমেট জোগা়ড় করে পাম্পে ঢুকছেন। কারণ, পাম্পের বাইরে হেলমেট ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে। যে ক’টি পাম্পে ঢোকার মুখে হেলমেট রাখা রয়েছে, পাম্পে ঢোকার সময়ে সেই হেলমেট পড়ে ঢুকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু যাঁরা হেলমেট ধার নিচ্ছেন, তাঁদের অনেকে তেল নেওয়ার পরে হেলমেট ফেরত না দিয়েই গাড়ি নিয়ে পিঠটান দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাম্প কর্মীদের একাংশের। দণ্ডিরহাট এলাকার পেট্রোল পাম্পের এক কর্মী বলেন, ‘‘পাম্পের বাইরের কয়েকটি দোকানে বেআইনি ভাবে পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে। ফলে আমাদের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা পাম্পের মধ্যেই একটি হেলমেট রেখেছিলাম। যাঁরা হেলমেট পড়ে আসছেন না, তাঁদের ওই হেলমেট পড়ে পাম্পে ঢুকতে বলা হচ্ছিল। কিন্তু সেই হেলমেটই চুরি হয়ে গিয়েছে।’’

দিন কয়েক আগে মোটরবাইক নিয়ে বাজার করতে এসেছিলেন স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে থলি নিয়ে দরদাম শুরু করার আগে মোটর বাইকের হাতলে হেলমেট ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু বাজার করে এসে দেখেন হেলমেটটি নেই। একই অভিজ্ঞতা হয়েছে কমল সান্যালের। রাস্তার পাশে মোটরবাইক এবং হেলমেটটি রেখে তিনি সুলভ শৌচাগারে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন, হেলমেট উধাও। স্বপনবাবু এবং কমলবাবু দু’জনেই বসিরহাট শহরের বাসিন্দা। তবে তাঁরা কেউই থানায় অভিযোগ করেননি। কমলবাবুর কথায়, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ করার অনেক হ্যাপা। তার থেকে নতুন একটা হেলমেট কিনেই নিতে হয়েছে।’’

পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ছিঁচকে চোরেরা এখন সাইকেল এবং মোটরবাইক ছেড়ে হেলমেট চুরি করছে। কারণ, সাইকেলে এখন বাজার নেই। চোরাই মোটরবাইক বিক্রির আবার বিস্তর ঝামেলা। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ও বেশি।

কিন্তু হেলমেট চুরি করলে ধরা পড়ার ভয় নেই বললেই চলে। কেউ থানায় অভিযোগই করছেন না। বসিরহাট থানার এক কর্তা জানান, হেলমেট চুরি হচ্ছে, এ রকম কিছু খবর লোকমুখে মিলেছে। কিন্তু লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে চুরি ঠেকাতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। ভাড়ার হেলমেটের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। রীতিমতো লাইন দিয়ে ভাড়ার হেলমেট মাথায় গলিয়ে পাম্পে ঢুকছেন অনেকে।

কিন্তু ভাড়া নেওয়া সেই হেলমেট আপনার সেই চুরি যাওয়া হেলমেট নয় তো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat Helmet Theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE