গাইঘাটার সেই মাদক তৈরির কারখানা। —নিজস্ব চিত্র।
গাইঘাটার বিষ্ণুপুর গ্রামে গড়ে উঠেছিল হেরোইন তৈরির আস্ত একটি কারখানা। সেখান
থেকে ওই মাদক যেত বিধাননগর (দক্ষিণ) থানা এলাকার নাওভাঙার বাসিন্দা এক দম্পতির কাছে। সেখানে সেই মাদকের পুরিয়া তৈরি করে কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় এজেন্ট মারফত তা পৌঁছে দিত ওই দম্পতি। ছাগলের ব্যবসার আড়ালে নাওভাঙার পাঁচতলার ফ্ল্যাট জুড়ে এই কারবার চালাত তারা। পুজোর মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় একটি খামারবাড়ির মধ্যে মাদক তৈরির সেই কারখানার সন্ধান পেয়েছেন রাজ্য পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা। সেখান থেকে দুই মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করার পরে ১৬ কোটি টাকার মাদক এবং সেগুলি তৈরির কাঁচামাল উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, তৈরি হওয়া মাদক সেখান থেকে ওই দম্পতি নিজেদের গাড়িতে করে নিয়ে আসত নাওভাঙা এলাকায়। এ ভাবে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকার মাদক কিনে আনত তারা। গত মার্চ মাসে মোবিন খান ও মেহতাব বেগম নামে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। মোবিন ছাগলের ব্যবসা করত। সেই ব্যবসার আড়ালেই চালাত মাদকের কারবার। এক গোয়েন্দা-কর্তা জানান, গত
মার্চে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করার পরেই তাঁদের সূত্র ধরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খোঁজ মিলেছে হেরোইন তৈরির ওই কারখানার। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে। মাদকের ওই কারবারিদের গ্রেফতার করা হলেও মাদক তৈরির কাঁচামাল যে বা যারা সরবরাহ করত, তাদের খোঁজ পাননি গোয়েন্দারা।
সূত্রের খবর, মাদকের কারবারি ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করার পরে তাদের জেরা করেই
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে প্রায় দু’কোটি টাকার হেরোইন বাজেয়াপ্ত করেছিলেন গোয়েন্দারা। গ্রেফতার করা হয়েছিল পাঁচ মাদকের কারবারিকে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ডানকুনির কাছ থেকেও এক কোটি টাকার মাদক পাচার করার সময়ে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। সেই সূত্রেই উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় এসটিএফের জালে দু’কোটি টাকার মাদক-সহ ধরা পড়ে দুই পাচারকারী।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মোবিন খান ও মেহতাব বেগমের মাধ্যমেই গাইঘাটার মাদক কারখানা থেকে কলকাতা এবং তার আশপাশে হেরোইন সরবরাহ করা হত। ওই দম্পতি ছাড়া গ্রেফতার হওয়া বাকিরা বেশির ভাগই মাদকের এজেন্ট হিসাবে কাজ করত। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, নিচুতলার একাধিক জনকে ধরা হয়েছে। প্রচুর মাদক বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। কিন্তু ওই মাদক তৈরির কাঁচামাল কারা সরবরাহ করত, আপাতত সেটাই জানার চেষ্টা চলছে। তাঁদের অনুমান, গাইঘাটা থেকে ধৃত দুই মহিলার মধ্যে এক জন, কাকলি রায় এই কারবারের মাথা। তাকে জেরা করেই এখন ওই কাঁচামাল সরবরাহকারীদের কাছে পৌঁছতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy