প্রতীকী ছবি।
স্টেশনের পাশেই রেল কলোনি। আশির দশকে যা গড়ে উঠেছিল রাজ্য সরকার ও রেলের যৌথ সম্মতিতে। ঘর তৈরি করলেও সিংহভাগ মানুষেরই দলিল কিংবা পাট্টা নেই। অথচ, এমন কলোনিতেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় ঘর উঠেছে বলে অভিযোগ।
ঘটনাস্থল, বারাসত এক নম্বর ব্লকের কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের দাসপাড়ার হেমন্ত বসু নগর। স্থানীয় কড়েয়া কদম্বগাছি স্টেশনের কাছেই ওই রেল কলোনি। সেখানে রেলের জমিতে বসবাসকারী লোকজন কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় ঘর তৈরি করছেন, সে প্রশ্ন তুলে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। চিঠিতে তাঁরা শাসকদলের স্থানীয় দু’-তিন জন নেতার নামও উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মদতেই আবাস যোজনার টাকায় রেলের জমিতে ঘর উঠছে বলে চিঠিতে অভিযোগকারীদের দাবি। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১৬ এবং ২০ তারিখে দু’টি চিঠি জেলাশাসকের দফতরে পাঠিয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
রেল কলোনির বাসিন্দারা জানান, আবাস যোজনায় আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই করতে সেখানে গিয়েছিলেন পঞ্চায়েতের নেতা-নেত্রীরা। বাসিন্দারাই জানান, আবাস যোজনায় ঘর পেতে তাঁদের অনেকেই স্থানীয় নেতাদের কাছে দরবার করেছিলেন। ৪০-৫০টি ঘর ওই টাকায় তৈরি হয়েছে। কেউ পেয়েছেন ৬০ হাজার, কেউ লক্ষাধিক টাকা।
কিন্তু রেলের জমিতে বসে থাকা লোকজনকে আবাস যোজনায় নিজেদের বাড়ি তৈরির টাকা কোন যুক্তিতে দেওয়া হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানান, আবাস যোজনায় টাকা পাওয়ার যা যা শর্ত, তার মধ্যে একটি হল আবেদনকারী কিংবা তাঁর পরিবারের সেই মৌজায় জমি থাকতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যাঁরা নিজেরাই রেলের জমির উপরে বসবাস করছেন, তাঁদের নাম কী করে উপভোক্তার তালিকায় উঠল, বিতর্ক শুরু হয়েছে তা নিয়েও।
এমনও অভিযোগ উঠেছে, আবাস যোজনার টাকা থেকে কাটমানির বিনিময়ে ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে পঞ্চায়েতে জমা দেওয়া হয়েছে। যাঁদের নাম উপভোক্তার তালিকায় উঠেছে, তাঁদের জমির তথ্য খতিয়ে দেখা হয়নি। এমনই অভিযোগ জেলাশাসকের দফতরে চিঠি পাঠানো লোকজনের।
অভিযোগের কথা জানেন স্থানীয় কদম্বগাছি পঞ্চায়েত-প্রধান গৌতম পাল। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘সমীক্ষা করেছেন সরকারি আধিকারিক কিংবা তাঁদের লোকজন। পঞ্চায়েত কারও নাম পাঠায়নি। ওই এলাকা এখন আর কলোনি নেই, শহর হয়ে গিয়েছে। রেলের জমির পাশাপাশি ব্যক্তিগত জমিও রয়েছে। কিছু গোলমাল পেলে প্রশাসনকে জানানো হবে।’’
উপভোক্তাদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরির সময়ে তথ্য যাচাই করা হয়নি কেন? উত্তর দিতে পারেননি গৌতম। তাঁর দাবি, ‘‘ওই এলাকায় বিজেপির ভোট বেশি। পঞ্চায়েত বেশি কড়াকড়ি করলে তখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy