Advertisement
১১ মে ২০২৪

লক্ষ্মীপুজোর রাতে ফিরে এল শব্দবাজির সেই তাণ্ডব

কী ভাবে এলাকায় শব্দবাজি মজুত হল— এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।  

পড়ে রয়েছে পোড়া শব্দবাজি। ছবি: সুজিত দুয়ারি

পড়ে রয়েছে পোড়া শব্দবাজি। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সীমান্ত মৈত্র
হাবড়া শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০০
Share: Save:

লক্ষ্মীপুজোর রাতে হাবড়া শহরে ফিরে এল বাজির দাপট।

গত তিন বছর শব্দবাজির তাণ্ডব একটু কমেছিল লক্ষ্মীপুজোয়। কিন্তু এ বার ফের পুজোর রাতে কানে তালা লাগার জোগাড় হল শহরবাসীর।

স্থানীয় মানুষের দাবি, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। কিন্তু বিশেষ কিছু বাজি। সে সবের তোয়াক্কা করেনি অনেকে। আর পুলিশ-প্রশাসনও গা ঢিলে দিয়েছিল। ২২ অক্টোবর প্রশাসক বসেছে পুরসভায়। অনেকের ব্যাখ্যা, সে কারণে বাজি রুখতে এ বার তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি পুর কর্তৃপক্ষের। তবে কী ভাবে এলাকায় শব্দবাজি মজুত হল— এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।

বহু বছর ধরেই হাবড়ায় লক্ষ্মীপুজোর রাতে শব্দবাজির তাণ্ডব চলে আসছে। আতঙ্কে কাটাতেন শহরবাসী। গত তিন বছরে অবশ্য বদলেছিল ছবিটা। পুলিশ-প্রশাসন, পুরসভার লাগাতার প্রচার, ধরপাকড়ের ফলে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু এ বার সব ভেস্তে গেল।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দেদার ফাটল শব্দবাজি। বাসিন্দারা জানান, গত দু’বছরের তুলনায় এ বার শব্দবাজি ফেটেছে অনেক বেশি। শহরের পাশাপাশি হাবড়ার গ্রামীণ এলাকা থেকেও বাজির আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে। অনেকেই রাস্তায় বেরিয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় বাজি ফেটেছে অনেক বেশি।’’ কয়েক জন প্রবীন বাসিন্দার কথায়, ‘‘মাঝে মধ্যে বাজির আওয়াজ শুনে মনে হচ্ছিল যেন বোমা ফাটছে। বুক কাঁপছিল।’’ বুধবার রাতে হাবড়া স্টেট জেনারেল চত্বরে দাঁড়িয়েও রোগীর আত্মীয়েরা বাজির কান ফাটানো আওয়াজ পেয়েছেন।

অথচ, শব্দবাজির দাপট রুখতে পুলিশ, পুরসভা পদক্ষেপ যে একেবারে করেনি, তা নয়। দুর্গাপুজোর আগেই বাজি ব্যবসায়ীদের নিয়ে পুলিশ, পুরসভা বৈঠক করে। ব্যবসায়ীরা যাতে গোপনে শব্দবাজি বিক্রি করতে না পারেন, সে জন্য স্থানীয় সাহেববাগান এলাকায় পুরসভার তরফে বাজির বাজার তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে শব্দবাজি বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। পুরসভা ও পুলিশের তরফেও শব্দবাজি বিক্রি ও ফাটানো বন্ধ করতে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানো হয়েছিল। ধরপাকড়ও হয়েছে কিছু। সোমবারও তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ দশ কেজি শব্দবাজি আটক করে। বুধবার রাতে আইসি গৌতম মিত্রের নেতৃত্ব পুলিশ গোটা এলাকায় টহল দিয়েছেন।

পুলিশ কর্তারা অবশ্য মনে করছেন, মানুষকেই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সদ্য প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে এ বারও মানুষকে শব্দবাজি নিয়ে সচেতন করতে প্রচার করা হয়েছে। এরপরেও শব্দবাজি ফেটেছে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crackers Soun Pollution Disturbance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE