Advertisement
E-Paper

গ্রাম্য কাজিয়ায় স্লুইস গেটের কাজ বন্ধ

গ্রামে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে স্লুইস গেট তৈরি করতে পারছে না সেচ দফতর। বিষয়টির নিষ্পত্তি চেয়ে প্রশাসন ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে বারবার জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। যার ফলে আসন্ন বর্ষায় সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের চাষ জমি বৃষ্টির জলে বা নদীর নোনা জল ঢুকে জলমগ্ন হবে বলে আশঙ্কা চাষিদের। তাতে আখেরে ক্ষতি হবে মথুরাপুর ২ ব্লকের দিঘিরপাড় বকুলতলা পঞ্চায়েতের জুমার ঘেরি গ্রামের কয়েকশো চাষির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৮

গ্রামে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে স্লুইস গেট তৈরি করতে পারছে না সেচ দফতর। বিষয়টির নিষ্পত্তি চেয়ে প্রশাসন ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে বারবার জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। যার ফলে আসন্ন বর্ষায় সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের চাষ জমি বৃষ্টির জলে বা নদীর নোনা জল ঢুকে জলমগ্ন হবে বলে আশঙ্কা চাষিদের। তাতে আখেরে ক্ষতি হবে মথুরাপুর ২ ব্লকের দিঘিরপাড় বকুলতলা পঞ্চায়েতের জুমার ঘেরি গ্রামের কয়েকশো চাষির।

সেচ দফতরের রায়দিঘি মহকুমার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামে দফায় দফায় আলোচনায় বসে বা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। স্থান নির্বাচন নিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত না হলে কাজ শুরু করা সম্ভব নয়।” বিডিও মোনালিসা তিরকে বলেন, “উভয়পক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে আলোচনা হয়েছে। সমাধান সূত্র খুঁজতে আবারও বৈঠক করা হবে।” সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুমার ঘেরি, চাপলা, হরিপুর, দিঘিরপাড়-সহ কয়েকটি গ্রামের বর্ষার জমা জল সুতার বাগ নদীতে ফেলে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার জন্য একটি খাল খনন করা হয়। নদী থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে ওই খালের উপরেই বসানো ছিল একটি স্লুইস গেট। গত বছর সেই স্লুইস গেটটি ভেঙে যাওয়ায় চাষের ক্ষতি হয়। গ্রামবাসীদের আবেদনের ভিত্তিতে ওই স্থানে নতুন একটি স্লুইস গেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সেচ দফতর। ওই প্রকল্পের বরাত হিসেবে ২৪ লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়ে গিয়েছে ঠিকাদার সংস্থাকে।

কিন্তু তৃণমূলের স্থানীয় নেতা নারায়ণচন্দ্র খানের নেতৃত্বে কয়েকজন ওই স্থানে স্লুইস গেট বসানো নিয়ে লিখিত ভাবে আপত্তি করেন। তাঁদের দাবি, গেটটি বসানো হোক ওই নির্দিষ্ট স্থান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। নারায়ণবাবু বলেন, “আগে আমরা বিরোধী ছিলাম বলে সিপিএম আমাদের জমির উপর দিয়ে জোর করে ওই খাল খনন করে। যার ফলে নোনা জলে পাশের জমিগুলির চাষ বরাবরই নষ্ট হয়ে এসেছে।” তা ছাড়া ওই খাল এখন ভরাট হয়ে এসেছে। ভাল নিকাশি হয় না। নতুন করে খাল খনন করলে এই সমস্যা হবে না। ওই খালের বেশিরভাগ অংশই যাবে অকৃষি জমির উপর দিয়ে। সেই জলে ভেড়িতে মাছ চাষের সুবিধাও পাবেন চাষিরা বলে তিনি জানান।

যদিও এই দাবি ও যুক্তিকে উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের ইরান গায়েন। তিনি বলেন, “নিজের ও কয়েকজন অনুগতের মাছ চাষের সুবিধে নিতেই নারায়ণবাবুরা কাজে বাধা দিচ্ছেন। নতুন করে খাল খনন করতে হলে বহু চাষিকে জমি ছাড়তে হবে। সে কাজে জমি সংক্রান্ত জটিলতাও প্রচুর।’’ তা ছাড়া আরও খরচ আছে খাল খননের। গোটা প্রক্রিয়াটাই দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ। কিন্তু কাজ শেষ করতে হবে এই বর্ষার মধ্যেই। ব্যক্তিস্বার্থ না দেখে ওঁরা জনস্বার্থ দেখলে ভাল হয় বলে জানান ইরানবাবু। গত বর্ষায় স্লুইস গেটটি ভেঙে যাওয়ার পর আমরা গ্রামবাসীরাই গেটের কাছে খালের উপর মাটির বাঁধ দিই। কিন্তু এ বর্ষায় তা টিকবে না। তা ছাড়া খালপথ বন্ধ থাকায় জল নিকাশির পথও বন্ধ। নতুন করে খাল খনন হলে খালের দু’পাশের বহু জমি নোনা জলে নতুন করে নষ্ট হবে বলে মনে করেন চাষিরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও চাষি সঞ্জিত ভৌমিক, অরুণ শাঁখারি, অলক সানকিদের বক্তব্য, ‘‘সব দিক থেকেই রাজনীতির বলি হতে হচ্ছে আমাদের মতো সাধারণ চাষিদেরকেই।’’ সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার অমিতবাবুও বলেন, “যেখানে ছিল সেখানেই নতুন গেট বসানোই স্বাভাবিক। অন্যত্র হলে জমি ও অর্থ সংক্রান্ত অহেতুক নানা জটিলতা আসবে।”

mathurapur bloc bakultala panchayet sluice gate irrigation department irrigation sluice gate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy