Advertisement
১১ মে ২০২৪

ক্ষতিপূরণ পেলে সরে যাবে দোকানিরা

নানা জটিলতায় বার বার আটকেছে যশোর রোড সম্প্রসারণের পরিকল্পনা। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে যশোর রোডের সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। কী ভাবে এই পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হবে তা সরেজমিনে দেখল আনন্দবাজার। আজ চতুর্থ কিস্তি। বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা যদি হয় হাবরা, তা হলে দ্বিতীয় বাধা হল বারাসতের চাঁপাডালি মোড়।

যানজট কমাতে এখানেই তৈরি হচ্ছে রেলসেতু। ছবি :সুদীপ ঘোষ।

যানজট কমাতে এখানেই তৈরি হচ্ছে রেলসেতু। ছবি :সুদীপ ঘোষ।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
বারাসত শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৮
Share: Save:

বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা যদি হয় হাবরা, তা হলে দ্বিতীয় বাধা হল বারাসতের চাঁপাডালি মোড়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসতের ডাকবাংলো মোড় থেকে বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের এই অংশটির নাম যশোর রোড। সম্প্রতি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ যশোর রোড সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পরিকল্পনা রূপায়ণের নকশা তৈরি করতে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এই রাস্তা সম্প্রসারণ করতে গেলে প্রচুর দোকান, বাড়ি, সরকারি আবাসনের ভাঙা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বেশির ভাগ দোকানি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে সহযোগিতার কথা বলেছেন।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চাঁপাডালি মোড়ের যানজটের সমস্যা অনেকটাই মেটাবে বারাসত-বসিরহাট শাখার কাজিপাড়ায় রেললাইনের উপরে প্রস্তাবিত সেতু। দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার রাজীব চট্টরাজ বলেন, ‘‘কাজিপাড়ার রেল সেতুটি প্রায় ১২০০ মিটার লম্বা হবে। সেতুটি তৈরির জন্য কিছু দোকানপাট ভাঙা পড়বে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজিপাড়া রেল লাইনের দু’পাশে চাঁপাডালি মোড়ের মতো ঘিঞ্জি দোকানপাট নেই। যে ক’টি দোকান রয়েছে সেগুলিও সরে যেতে প্রাথমিক ভাবে রাজি রয়েছে। কয়েক জন পুনর্বাসনের আর্জি জানিয়েছেন। কাজিপাড়া রেল লাইনের পাশেই রয়েছে মার্বেলের তৈরি একটি শনিমন্দির। মন্দিরটি দেখাশোনা করেন স্বপন দাস। তিনি বলেন, ‘‘অনেক কষ্টে চাঁদা তুলে মন্দিরটা করেছি। তবে রাস্তা চওড়া হওয়া বেশি প্রয়োজনীয়। রাস্তা মাপমাপি করতে কয়েক জন এসেছিলেন। তাঁদের বলেছি, রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার পরে মন্দিরটা এক পাশে করে দেওয়া হলে ভাল হয়।’’ এ ছাড়া চাঁপাডালি মোড় লাগোয়া মাছ বাজারটি নিয়েও সমস্যা রয়েছে। ওই বাজারের বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘মাছ বাজারটি রাস্তা থেকে ভিতরের দিকে পিছিয়ে দেওয়া হবে।’’ সে ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

চাঁপাডালি মোড় থেকে বারাসত জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত হেঁটে দেখা গিয়েছে, যশোর রোডের ওইটুকু অংশের বাঁ দিকে কমবেশি ১২৩টি এবং ডান দিকে কমবেশি ৮৮টি ছোট-বড় দোকান রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে শপিং মল, অটো স্ট্যান্ড, নার্সিংহোম এবং সরকারি আবাসন। তবে রাস্তা চওড়া হলে কিছু দোকান ছাড়া অন্য কিছু ভাঙা পড়ার সম্ভাবনা কম বলেই জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।

পুনর্বাসনের প্যাকেজ নিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে কত দোকান ভাঙা পড়বে এবং কী ভাবে সেই কাজ হবে সেগুলি এখনও ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে দু’পাশের নর্দমা পর্যন্ত রাস্তা চওড়া হবে।’’ সুনীলবাবু আরও জানান, রাস্তা চওড়া করার প্রয়োজনে যদি দোকানপাট ভাঙতে হয় তবে সেটা করা হবে। সে ক্ষেত্রে দোকান মালিককে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপুরণ দেওয়া হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানির কথায়, ‘‘যানজটের জন্য ব্যবসার ক্ষতি হয়। তাই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে দোকান ভাঙলে আমাদের আপত্তি নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

compensation Jessore road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE