Advertisement
১৬ মে ২০২৪

গাছ কাটা রুখতে প্রতিবাদ বনগাঁয়

৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, যশোর রোডের পাশে কেটে ফেলা রয়েছে বহু প্রাচীন একটি শিরিষ গাছ। তার গুঁড়ির পাশে নতজানু হয়ে বসে মোমবাতি জ্বালালেন কিছু মানুষ। গাছ-হত্যার প্রতিবাদে সামিল হলেন সকলে।

পায়ে-পায়ে: প্রতিবাদী মিছিল শহরে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

পায়ে-পায়ে: প্রতিবাদী মিছিল শহরে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৩
Share: Save:

৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, যশোর রোডের পাশে কেটে ফেলা রয়েছে বহু প্রাচীন একটি শিরিষ গাছ। তার গুঁড়ির পাশে নতজানু হয়ে বসে মোমবাতি জ্বালালেন কিছু মানুষ। গাছ-হত্যার প্রতিবাদে সামিল হলেন সকলে।

বনগাঁ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় যশোর রোডের পাশে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রাচীন সব গাছ কেটে ফেলার কাজ। উদ্দেশ্য, শহরের যানজট কমাতে একটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ তৈরি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরে উড়ালপুল তৈরির জন্য মোট ৬৬টি বড় গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বন দফতরের অনুমতি নিয়ে সেই কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।

গাছ কেটে উড়ালপুল তৈরির প্রতিবাদেই রবিবার বিকেল থেকে রাজ্যের দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। ছিলেন স্থানীয় মানুষজনও। কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পড়ুয়া ও সাধারণ মানুষ সামিল হন গাছ কাটার প্রতিবাদে। তাঁদের হাতে ছিল নানা প্ল্যাকার্ড। মিছিল হয় যশোর রোডে। সভাও করেন তাঁরা। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘গাছ নীরব, ওদের হয়ে তাই বলছি কথা।’’

কয়েক দিন ধরে রিপন আর্য, প্রলয় মুখোপাধ্যায়, সুমন মজুমদার সহ বহু মানুষ ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপে এ নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন। গাছ বাঁচাতে জড়ো হওয়ার আবেদন করা হয়েছিল সকলকে। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর সদস্য দেবাশিস রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা চাই সড়ক সম্প্রসারণ হোক। কিন্তু প্রাচীন গাছ হত্যা করে নয়। গাছ বাঁচাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে।’’ সেখানে বলা হয়েছে, গাছ বাঁচিয়ে কাজ করার বিকল্প পথ বের করুক সরকার। সংগঠনের পক্ষ থেকেও কিছু বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেবাশিসবাবু। রিপনবাবু বলেন, ‘‘গাছ কেটে সড়ক সম্প্রসারণ করা যাবে না। পেট্রাপোল সীমান্তে যে ভাবে গাছ না কেটে সড়ক দু’লেনের করা হয়েছে, তেমন ভাবে করা যেতে পারে।’’

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত প্রস্তাবিত পাঁচটি রেল ওভারব্রিজ তৈরির জন্য ৩৫৬টি গাছ কাটা পড়বে। কিন্তু এ দিন যাঁরা মিছিলে হেঁটেছেন, তাঁদের দাবি, যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য প্রায় চার হাজার গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে বন দফতর। জেলা বন দফতর থেকে সে কথা স্বীকারও করা হয়েছে। যদিও জাতীয় সড়কের এক কর্তা জানান, রেল ওভারব্রিজ ছাড়া সড়ক সম্প্রসারণের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে বাকি গাছ কাটার আশঙ্কা নেই।

প্রাচীন গাছগুলি যশোর রোডের অহংকার। ছায়া দেয়, সৌন্দর্য্য বাড়িয়েছে। গাছ কাটলে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হবে। এ দিন সভায় এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘পুলিশ সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের কথা বলছে, আমাদের দাবি, সেভ ট্রি সেভ লাইফ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tree Tree Cutting Programme Protest Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE