Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কপিলকৃষ্ণকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রচার শুরু করলেন শান্তনু

সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রয়াত সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ কপিলকৃষ্ণ সম্পর্কে শান্তনুর জ্যাঠামশাই।

সীমান্ত মৈত্র
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০০:২৫
Share: Save:

ভোট প্রচারে নেমে পড়লেন সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। মঙ্গলবারই বিজেপি প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা হয়েছে তাঁর।

বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া ধর্মগুরু হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দেন শান্তনু। এরপর একে একে প্রমথরঞ্জন ঠাকুর, বীণাপাণি ঠাকুর এবং কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্মৃতি মন্দিরে প্রণাম সারেন। তারপরে বেরোন প্রচারে।

সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রয়াত সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ কপিলকৃষ্ণ সম্পর্কে শান্তনুর জ্যাঠামশাই। পরিবারের গুরুজন হিসাবে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু প্রয়াত কপিলকৃষ্ণের স্ত্রী মমতা ঠাকুর এ বার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে শান্তনুর প্রতিদ্বন্দ্বী। তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়ছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে শান্তনুকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল শিবির। জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘জীবদ্দশায় শান্তনুরা কখনও কপিলকৃষ্ণকে শ্রদ্ধা দেখাননি। তাঁর সাইকেল পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ওঁকে গালিগালাজ করতেও দেখেছি। এখন ভোটের জন্য নাটক করছে।’’

ঠাকুরবাড়ি থেকে মতুয়া ভক্ত ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শান্তনু ঠাকুরনগর থেকে প্রচার শুরু করেন। পরনে সাদা পাঞ্জাবি ও পাজামা, গলায় বিজেপির দলীয় উত্তরীয়। রাস্তা দিয়ে হাতজোড় করে পথচারী ও দোকানিদের উদ্দেশ্যে নমস্কার করতে করতে এগোচ্ছিলেন শান্তনু। দলীয় পতাকা নিয়ে কয়েকশো বিজেপি কর্মী-সমর্থক ছিলেন সঙ্গে।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পথ চলতে চলতে শান্তনু ঢুকে পড়েন দোকানে। দোকানিদের সঙ্গে হাত মেলান। তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেন। পরিচতদের সঙ্গে কোলাকুলিও করতে দেখা গেল। পরিচিত মানুষেরা নিজেরা এগিয়ে এসেও হাত মিলিয়ে যান শান্তনুর সঙ্গে। কয়েকজন পথচলতি মানুষকে আবার দেখা গেল শান্তনুর প্রচারের দৃশ্য মোবাইলে তুলে রাখছেন। প্রচারের ফাঁকেই প্রার্থীর সঙ্গে ঠাকুরনগর বাজারে দেখা হয়ে গেল, হুইল চেয়ারে বসা এক প্রতিবন্ধী যুবকের। শান্তনু কাছে এগিয়ে গিয়ে তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে পরিচয় করেন। ওই যুবক তাঁকে জানান, মাসে এক হাজার টাকা ভাতা পান। তা দিয়ে তিনজনের সংসার চলে না। শান্তনু তাঁকে আশ্বস্ত করে সামনের দিকে এগোন। গোটা ঠাকুরনগর এলাকায় প্রচার শেষ করে বেলা দেড়টা নাগাদ বাড়ি ফেরে শান্তনু। বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক সেরে ডাঙ্কা বাজাতেও দেখা যায় তাঁকে।

প্রথম দিনের প্রচারের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে শান্তনু বলেন, ‘‘খুবই ভাল অভিজ্ঞতা। পথচলতি মানুষ, দোকানি, ভ্যান চালকেরা আমাকে দেখে সকলে স্বস্তঃস্ফূর্ত ভাবে সৌজন্য বিনিময় করেছেন।’’ ভোট-রাজনীতিতে নতুন হলেও শান্তনুর দাবি, রাজনীতিতে তিনি অনভিজ্ঞ নন। বংশের চার পুরুষের রাজনীতির রক্ত তাঁর শরীরে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মতুয়া ভক্তদের অনুরোধই তিনি ভোটে দাঁড়াতে রাজি হয়েছেন জানিয়ে বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘‘গত ৭২ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের স্বার্থে মতুয়াদের ব্যবহার করেছে। ও পার বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবি কেউ পূরণ করেনি। নরেন্দ্র মোদীই একবার উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সংসদে বিল এনেছেন। তৃণমূল ও মমতা ঠাকুর তার বিরোধিতা করছে। প্রচারে আমি এই বিষয়টিই তুলে ধরছি।’’ শান্তনুর বাবা, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ বাড়িতেই ছিলেন। জানালেন, ছোট ছেলের হয়ে শীঘ্রই প্রচারে বেরোবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE