Advertisement
E-Paper

ইলিশের ঢল, তবু হাতে টাকা নেই

এই পরিস্থিতিতে ভিড় নেই কাকদ্বীপ বাজারের জামা-জুতোর দোকানে দোকানে। চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। কাকদ্বীপ বাজারের অন্যতম বড় দোকানের মালিক বিশ্বেশ্বর সাহার প্রায় পঞ্চাশ বছরের পুরনো কাপড়ের ব্যবসা। সমস্ত রকমের পোশাক বেচেন। কথা বলে বোঝা গেল, হতাশ। জানালেন, সপ্তাহখানেক আগে যা একটু গ্রাহক এসেছিল।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:৪৯
হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা। —নিজস্ব চিত্র।

হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা। —নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম গঙ্গাধরপুরের মৎস্যশ্রমিক কেষ্ট দাস পাঁচ বছরের ছেলের জন্য কেবলমাত্র একটি জামা কিনতে পেরেছেন। স্ত্রী অঞ্জলির শাড়ি বা নিজের জন্যও কিছু কেনা হয়নি।

ইলিশে টানা খরা চলার পরে হঠাৎ করে অল্প কয়েক দিনের জন্য যে মাছ হয়েছিল, দাম একেবারে পড়ে গিয়ে তা থেকে লাভ করতে পারেনি বেশিরভাগ মৎস্যজীবী। মহকুমার প্রায় ৮০ শতাংশ মৎস্যনির্ভর মানুষের কাছে তাই এ বার পুজোর বাজার প্রায় ফিকে। কেনাকাটায় বাড়তি সমস্যা এনেছে অসময়ের বৃষ্টিতে ক্ষতি।

গত দশ বছরে এ বারই সব থেকে বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। তা হলে কেন হাতে টাকা নেই? কেষ্টবাবুর কথায়, ‘‘বেশি মাছ ধরে খাটনি বেড়েছিল। কিন্তু আখেরে লাভ হয়নি। জুনের মাঝামাঝি থেকে মরসুম শুরু হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত ইলিশ মিলল সেপ্টেম্বরের শুরুতে। তা-ও ইদানীং কমে গিয়েছে। সারা বছর আয় সমান ভাবে না হলে পুজোর সময়ে খরচের টাকা থাকে না।’’

এই পরিস্থিতিতে ভিড় নেই কাকদ্বীপ বাজারের জামা-জুতোর দোকানে দোকানে। চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। কাকদ্বীপ বাজারের অন্যতম বড় দোকানের মালিক বিশ্বেশ্বর সাহার প্রায় পঞ্চাশ বছরের পুরনো কাপড়ের ব্যবসা। সমস্ত রকমের পোশাক বেচেন। কথা বলে বোঝা গেল, হতাশ। জানালেন, সপ্তাহখানেক আগে যা একটু গ্রাহক এসেছিল। তারপরে বিক্রিবাট্টায় টান পড়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের হাতে টাকা নেই। কী ভাবে পুজোর বাজার করতে আসবে? মাছ-নির্ভর মহকুমায় পুজোর বাজারের ওঠানামা তার উপরেই নির্ভর করে।’’ আরও একটি বড় দোকানের কর্মী মোহন নাইয়া বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে অন্যবার ভিড়ে দোকানে ঢোকার জন্য বাইরে অপেক্ষা করে লোকে। কিন্তু সেই ভিড়টা এ বার পাওয়া যাচ্ছে না। কী কারণ ঠিক বুঝতে পারছি ন‌া।’’

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, সাগর থেকে অনেকে আসেন কাকদ্বীপে, কেনাকাটা সারতে। কিন্তু এ বার সংখ্যাটা কম। সাগর থেকে গ্রাহকদের না আসার কারণ হিসেবে অবশ্য জেটি খারাপ থাকার কথাও বলছেন অনেক ব্যবসায়ী। সব মিলিয়ে মন মতো ভিড় টানতে পারছেন না দোকানিরা।

গ্রামীণ এলাকায় এ বার অতিবৃষ্টিতে চাষের বীজতলা ডুবে গিয়েছিল প্রায় ৭০ শতাংশ চাষির। তাঁদের একটি বড় অংশই গঞ্জের বাজার টপকে মহকুমা সদরে এসে কেনাকাটা সারছেন না। এলাকার বাজারেই অপেক্ষাকৃত কম খরচে কেনাকাটা সেরেছেন। রেডিমেড পোশাকের জনপ্রিয়তা বাড়ায় বেশ কয়েক বছর ধরেই দর্জিদের বাজার পড়তির দিকে। এ বার লাভ আরও কম হয়েছে, জানালেন কাকদ্বীপের কয়েকজন দর্জি।

Hilsa ইলিশ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy